X
বুধবার, ০১ মে ২০২৪
১৮ বৈশাখ ১৪৩১
নববর্ষ ১৪৩১

চেনা বটমূলে রবি-নজরুলের গান আর বাঙালিয়ানার বার্তা

বিনোদন রিপোর্ট
১৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৮আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৩৬

জাতিগত ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি লালন এবং তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দেওয়ার অনন্য আয়োজন ছায়ানটের বর্ষবরণ। দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে নিয়মিত হয়ে আসছে এই অনুষ্ঠান। এবারও বৈশাখের প্রথম দিনের (১৪ এপ্রিল) সকাল ছন্দ-সুরে রাঙিয়ে তুলেছে সংস্কৃতিপ্রেমী শিল্পী ও মানুষেরা।  

এ দিন সকাল সোয়া ছয়টায় চিরচেনা ঐতিহ্যবাহী রমনা বটমূলে শুরু হয় বাংলা নতুন বছর ১৪৩১ বরণের অনুষ্ঠান। শুরুটা হয় আহীর ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে। প্রায় দশ মিনিট চলে সেই অমৃত সুরের খেয়া। অতঃপর শুরু হয় গানের পর্ব।

যেখানে ঠাই করে নিয়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, লালন ও বাংলাদেশের লোকজ ধারার বেশ কিছু গান। একক ও সমবেত কণ্ঠের পরিবেশনায় থাকা গানগুলো হলো- আধার রজনী পোহালো, বিমল আনন্দে জাগো রে, তোমার সুর শোনায়ে যে ঘুম ভাঙাও, প্রেমের দুয়ার খোলো, ওঠো ওঠো রে, অধরা দিলো ধরা, আজ প্রথম আলোক, আনো আনো অমৃত বারি, এ পথ গেছে কোনখানে, মেঘবিহীন খর বৈশাখে, ওরে মন তোর বিজনে, বহে নিরন্তর আনন্দধারা, আমার মন চেয়ে রয় মনে মনে, নম নম নম বাংলাদেশ মম, আমি বাউল হলাম ধূলির পথে, আমার সোনারই বাংলায়, এই না বাংলাদেশের গান গাইতে রে দয়াল, কারার ওই লৌহ-কপাট, বিপ্লবের রক্তরাঙা ঝাণ্ডা ওড়ে আকাশে, নাই নাই ভয় হবেই হবেই জয়, মনে ময়লা থাকে যদি, যে পথে মরণ ফাঁসি-লালন ও আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল। 

এর ফাঁকে আবৃত্তি করেছেন নন্দিত অভিনেতা ও বাচিক শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় এবং রামেন্দু মজুমদার। সকাল সাড়ে আটটার দিকে অনুষ্ঠানের শেষ হয় জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ দিয়ে।

সংগীত পরিবেশনায় শিল্পীরা/ ছবি: নাসিরুল ইসলাম এবারের আয়োজনে ছায়ানটের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেছেন সংস্থাটির কার্যকরী পরিষদের সদস্য সারওয়ার আলী। তিনি বলেন, ‘পরাধীন আমলে আপন সংস্কৃতিতে বাঁচবার সাহস যোগাতে বাংলা নববর্ষে শুরু হয়েছিল বাঙালির চিরকালীন সুরবাণীর এই আয়োজন। স্বাধীন দেশে বাঙালির নতুন সংকল্প—আপন সংস্কৃতি অন্তরে ধারণ করে পূর্ণ মানব হয়ে ওঠা, আপন সত্তাকে জাগ্রত রেখে শিক্ষিত ও সংস্কৃতি সচেতন মানবিক জনপদ গড়ে তোলা। কিন্তু আজ ভোগবাদ ও রক্ষণশীলতার দাপটে আমরা নতুন সংকটের সম্মুখে। হারাতে বসেছি বাঙালির স্বাভাবিকতা। আলগা হয়ে পড়েছে পারস্পরিক সম্প্রীতির বন্ধন। বিস্তার ঘটেছে স্বার্থপরতা। মানুষ হয়ে উঠেছে অচেনা। তৈরি হচ্ছে এক অস্বাভাবিক ও অসহিষ্ণু সমাজ। অমানবিক এই অস্বাভাবিকতা থেকে বের হতেই হবে। নইলে বাঙালির প্রাণপ্রিয় এই নববর্ষ উদযাপনও হয়ে উঠবে কেবল একটি দিনের জন্য বাঙালি সাজার উপলক্ষ।’

শিল্পীদের একাংশ/ ছবি: সাজ্জাদ হোসেন বর্ষবরণের পুরো অনুষ্ঠানটি সাজানো হয় প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। সেই সঙ্গে যোগ করা হয়েছে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী সৃষ্টির বিজাতীয় অবমাননার প্রতিবাদ এবং লেখনীর দুর্দম শক্তিতে বাঙালির গণজাগরণে স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে চলা আবু বকর সিদ্দিককে স্মরণ।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পরিবেশনায় অংশ নিয়েছেন শতাধিক ক্ষুদে ও বড় শিল্পী। দীর্ঘ আড়াই মাস অনুশীলন সেরে তারা রমনার বটমূলের মঞ্চে উঠেছেন। দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করেছে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার।

/কেআই/
সম্পর্কিত
ঈদের ছুটি শেষে ভারত থেকে ফিরছেন যাত্রীরা, ইমিগ্রেশনে ভোগান্তি
ঈদের ছুটি শেষে ভারত থেকে ফিরছেন যাত্রীরা, ইমিগ্রেশনে ভোগান্তি
পহেলা বৈশাখের নির্দেশনা উপেক্ষা উদীচীর: যা বলছে ডিএমপি
পহেলা বৈশাখের নির্দেশনা উপেক্ষা উদীচীর: যা বলছে ডিএমপি
‘প্রতিটি ফোঁটা-ই হোক শান্তির দূত, পৃথিবী হোক শান্তিময় জলধারায়’
‘প্রতিটি ফোঁটা-ই হোক শান্তির দূত, পৃথিবী হোক শান্তিময় জলধারায়’
পহেলা বৈশাখে ৬টার পরও উদীচীর অনুষ্ঠান করা নিয়ে যা বললেন আরাফাত
পহেলা বৈশাখে ৬টার পরও উদীচীর অনুষ্ঠান করা নিয়ে যা বললেন আরাফাত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
সজলের মুগ্ধতা অপির চোখে, জন্মদিনে
সজলের মুগ্ধতা অপির চোখে, জন্মদিনে
সাংবাদিক হতে চেয়ে অভিনেত্রী!
সাংবাদিক হতে চেয়ে অভিনেত্রী!
মুবিতে মুক্তি দেশি মুভি
মুবিতে মুক্তি দেশি মুভি
মে দিবসে ফুঁসে উঠলেন সিনেমা শ্রমিকরা
মে দিবসে ফুঁসে উঠলেন সিনেমা শ্রমিকরা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা