‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় বিচারকদের নম্বরপত্রে এগিয়ে না থাকার পরও মুকুট জয় ও বিয়ের কথা লুকিয়ে রাখার মতো বিতর্ককে সঙ্গী করে জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় যাচ্ছেন কিনা তা নিয়ে জল্পনা চলছে। একইসঙ্গে বইছে সমালোচনার ঝড়।
‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রতিযোগীদের তালিকা অপশনে গিয়ে দেখা যায়, বাংলাদেশের প্রতিযোগীর ঘরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কারও ছবি দেওয়া হয়নি। শুধু উল্লেখ আছে ‘২৯ সেপ্টেম্বর ফাইনাল’। যদিও উইকিপিডিয়ায় সোমবার (২ অক্টোবর) রাত থেকে মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতিযোগীর জায়গায় জেসিয়া ইসলামের নাম দেখা গেছে! যদিও দুপুরের পর থেকে আবার সেখানে এভ্রিলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উইকিপিডিয়ার এক সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘উইকিপিডিয়া একটি উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার। এটি যেহেতু স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, তাই এখানে যে কেউ তথ্য যোগ করতে পারেন। কিন্তু সেজন্য উপযুক্ত সূত্র উপস্থাপন করতে হয়। জেসিয়া ইসলামের নাম যিনি যুক্ত করেছেন গ্রহণযোগ্য তথ্যউপাত্ত না থাকায় এভ্রিলের নামই রাখা হয়েছে।’ 
এদিকে এভ্রিল সোমবার তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘মিস ওয়ার্ল্ডের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছি। আশা করছি, আমিই বিশ্বসুন্দরী হবো। এটা আমার নিজের ও দেশের মানুষের প্রতি অঙ্গীকার। আমার জন্য দোয়া করবেন।’ এই স্ট্যাটাসে একজন প্রশ্ন করেছেন, ‘কি যেন সংবাদ সম্মেলন হবে এবং নতুন করে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ঘোষণা করা হবে শুনলাম!’ এই কমেন্টের উত্তরে এভ্রিল লিখেছেন, ‘না ভাই, ফল বদলাবে না।’
অন্তর শোবিজের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিচারকদের সঙ্গে বসছেন আয়োজকরা। 
আবার বিচারক বিবি রাসেলের পক্ষ থেকেও বাংলা ট্রিবিউনকে বলা হয়, নিয়ম যা আছে তাই মেনেই কাজ হবে।
অন্যদিকে পুরস্কার বিতরণীর রাতে উপস্থাপিকা শিনা চৌহান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন জান্নাতুল সুমাইয়া হিমির নাম। তাকে নিয়েও নানা মত উঠে এসেছে। তাই পুরো বিষয়টি নিয়েই দ্বিধায় আছে আয়োজক ও সংশ্লিষ্টরা। 
গত ২৯ সেপ্টেম্বর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটির নবরাত্রি মিলনায়তনে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ হিসেবে অন্তর শোবিজের চেয়ারম্যান স্বপন চৌধুরী ঘোষণা করেন জান্নাতুল নাঈমের নাম। যদিও উপস্থাপিকা শিনা চৌহান জানিয়েছিলেন, শীর্ষ ১০ প্রতিযোগীর মধ্যে সেরা হয়েছেন জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। এ ঘটনার পর থেকেই অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে আলোচনা-সমালোচনায় মুখর বিনোদন অঙ্গন। এবার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এভ্রিলের বিয়ের ছবি ছড়িয়ে পড়লে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন আয়োজকরা। এজন্য বুধবার সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে তাদের।
বেশকিছু অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানা যায়, বিচারকদের রায় তোয়াক্কা না করেই নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী এভ্রিলকে বেছে নিয়েছে অন্তর শোবিজ। জেসিয়াকে শুরুতে দ্বিতীয় রানারআপ করা হলেও পরে জানানো হয়, তিনি হয়েছেন প্রথম রানারআপ। এভ্রিলকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় তার মুকুট ফিরিয়ে নেওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তাই দ্বিতীয় স্থান পাওয়া জেসিয়া ইসলামের বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী বিবাহিতা কিংবা সন্তানের মা হয়েছেন এমন কেউ মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু জান্নাতুল নাঈম এভ্রিলের বিয়ের খবর ফাঁস হয়েছে। এরপরও ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৭’ প্রতিযোগিতার আয়োজক অন্তর শোবিজ ও ওমিকন এন্টারটেইনমেন্ট তাকে বিশ্বসুন্দরীর মঞ্চে পাঠানোর ঝুঁকি নেবেন কিনা তা নিয়ে জল্পনা চলছে। প্রযুক্তির এই যুগে মিস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ তথ্য লুকিয়ে রাখা অসম্ভব। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মন্তব্য, এভ্রিলের বিয়ের খবর ফাঁস হওয়ার পর প্রথম রানারআপ জেসিয়া ইসলামকে বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় পাঠানো হোক।
আগামী ১৮ নভেম্বর চীনের সানিয়া শহরে অনুষ্ঠিত হবে ৬৭তম মিস ওয়ার্ল্ডের জমকালো আসর। এবার বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১১৩ সুন্দরী এ প্রতিযোগিতায় সেরার মুকুটের জন্য লড়বেন। বর্তমান বিশ্বসুন্দরী স্টেফানি দেল ভালে নতুন মিস ওয়ার্ল্ডের মাথায় মুকুট পরিয়ে দেবেন।
