রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুকে শাস্তি দেওয়ার প্রকাশ্য ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থতার কারণে এমন পথে হাঁটছেন তিনি। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার-এর এক প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হয়েছে। মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক এ খবর জানিয়েছে।
আইএসডব্লিউ বৃহস্পতিবার ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তাদের পর্যালোচনায় লিখেছেন, পুতিন একটি প্রকাশ্য বৈঠক করেছেন। এতে সম্ভবত তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগুর ক্ষমতা খর্ব করার উপায় খুঁজেছেন।
এর আগে এপ্রিলে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে রাশিয়ার উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী টিমুর ইভানভকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্লেষকদের ধারণা, এটি শোইগুর জন্য একটি সতর্কবার্তা। ইভানভকে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে দুই ব্যক্তি এক সঙ্গে কাজ করেছেন।
বৃহস্পতিবার রাশিয়ার তুলা অঞ্চলের গভর্নর আলেক্সেই দিউমিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পুতিন। দিউমিন রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে পরিচিত। ক্রেমলিনের ওয়েবসাইটে বৈঠকের বিষয়ে বলা হয়েছে, দিউমিন ইউক্রেন যুদ্ধে অঞ্চলটির উদ্যোগ নিয়ে কথা বলেছেন। এর মধ্যে ছিল সামরিক ইউনিটগুলোকে অস্ত্রে সজ্জিত করা, ড্রোন অপারেটরদের জন্য একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন ও অস্ত্র উৎপাদনের কারখানা স্থাপন।
গত বছর জুন মাসে বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেওয়ার আগে কয়েক মাস ধরে শোইগুর প্রকাশ্য সমালোচনা করেছিলেন ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রয়াত নেতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। দুই মাস পর রহস্যময় উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃত্যু হয় পিগ্রোজিনের। মৃত্যুর আগে ওয়াগনার নেতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন দিউমিন।
আইএসডব্লিউ-এর মতে, দিউমিন রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে বরখাস্তের চেষ্টা করেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া তিনি শোইগুর স্থলাভিষিক্তও হতে চেয়েছেন। মস্কোতে রুশ নেতার সঙ্গে দিউমিনের বৈঠকটি হয়ত পুতিনের সুনজর পাওয়ার চেষ্টা হতে পারে। এছাড়া ইউক্রেনে ক্রেমলিনের সামরিক লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থতার জন্য শোইগুর নেতৃত্বাধীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে শায়েস্তা করার চেষ্টা হিসেবে পুতিন হয়ত বৈঠকটি প্রকাশ্যে করেছেন।
মার্কিন থিংক ট্যাংকটি বলছে, পুতিন-দিউমিনের মধ্যকার বৈঠক রাশিয়ার তথ্য জগতে আলোড়ন তুলেছে। অনেক সামরিক ব্লগার ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইভানভের গ্রেফতারের পর বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা তুলে ধরছেন। একই সঙ্গে তারা সরকারের মধ্যে রদবদলের প্রত্যাশা করছেন।
রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ সূত্র আইএসডব্লিউকে বলেছে, পুতিন হয়ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে দিউমিনকে কোনও দায়িত্ব দিতে পারেন। এই বৈঠক ইঙ্গিত দিচ্ছে ইভানভের গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত হয়ত পুতিন নিজেই নিয়েছেন।