X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ভবিষ্যৎ কী?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০১ নভেম্বর ২০২৩, ২২:৩৯আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:২৭

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ২৬ দিন ধরে চলমান। এই সহিংসতার শেষ কোথায় তা নিয়ে সন্দিহান বেশিরভাগ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। ইসরায়েল ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার অঙ্গীকার করলেও পরে কী হবে তা নিয়ে তাদের কোনও পরিকল্পনা নেই। গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দ্বি-রাষ্ট্র নীতির ভিত্তিতে সমাধানের কথা তুলে ধরেছেন। ইসরায়েলের পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এই নীতির মূল বিষয়। এর সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। নতুন করে বিষয়টি আলোচনায় আসলেও এর ভবিষ্যত কী তা অস্পষ্ট।

দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের প্রস্তাবটি প্রথমে এসেছিল ১৯৯৩ সালে ওসলো শান্তিচুক্তির মাধ্যমে। একাধিকবার এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি। নতুন করে তা পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন রাজধানীর পাশাপাশি সংঘাতে লিপ্ত পক্ষেরও একান্ত আলোচনায় স্থান পাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হলো ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের অন্য কোনও কোনও বিকল্প দৃশ্যমান নেই।   

হামাস-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে জো বাইডেন বলেছেন, এর পর কী ঘটবে তা সম্পর্কে পরিকল্পনা থাকতে হবে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে, এটি হওয়া উচিত দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান।

শান্তি আলোচনায় ফিলিস্তিনি মধ্যস্থতকারী গিলেড শের বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর হামাস ও ইসরায়েলের সহিংস সংঘাতে ফিরে যেতে পারি না। যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন যেভাবে উল্লেখ করেছেন সেভাবে যুক্তরাষ্ট্র উদ্যোগ নিলে একটি সম্ভাবনা আছে।’

গিলেড শের আরও বলেছেন, ‘দুই পক্ষকেই বিনয়ের সঙ্গে কাজ করতে হবে। দ্বি-রাষ্ট্র তত্ত্বের যে নীতি তার জন্য দুদেশেরই আলাদা নেতার প্রয়োজন কারণ বর্তমান নেতারা এমন চুক্তির প্রতি আগ্রহী নন অথবা অসমর্থ।’

ইসরায়েলি প্রশাসন বলছে, তারা হামাসের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালিয়ে যাবে। এই আগ্রাসন আরও কয়েক মাস চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংঘর্ষের অবসান হলে কেবল আলোচনা শুরু হতে পারে। কিন্তু দেশটির থিংক ট্যাংক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংঘাত পরবর্তী রাজনৈতিক প্রক্রিয়া কী হবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলি বোমা বর্ষণে পশ্চিমা তীরেও উত্তেজনা বাড়ছে। যেখানে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা প্রায় ম্লান হয়ে গেছে। তবে অনেক ফিলিস্তিনি মনে করেন, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলিদের ভ্রম ভেঙে গেছে। তারা মনে করেছিল ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে।

রামল্লার অলাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান ফিলিস্তিন পিস কোয়ালিশনের ডিরেক্টর জেনারেল নিদেল ফোকাহা বলছেন, ‘৭ অক্টো্বর থেকে যা হচ্ছে তার সমাধানের জন্য আমাদের দ্বি-রাষ্ট্র নীতি বাস্তবায়নে আরও সৃজনশীল কিছু ভাবতে হবে। তবে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়া এটি কোনোভাবে সম্ভব না।’   

গত সপ্তাহে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সদস্য দেশ হিসেবে ইতালি ও গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। আবার ফিলিস্তিনি ইস্যু সমাধানের জন্য আরব দেশগুলোও চাপ প্রয়োগ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূতের দায়িত্ব পালন করা জ্যাসন ডি. গ্রিনব্লাট বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের শান্তি উদ্যোগের কেন্দ্রে ছিল ইসরায়েলের নিরাপত্তা প্রয়োজনীয়তা। ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয় ইসরায়েলের। কিন্তু আব্রাহাম চুক্তির কারণে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা দূরে সরিয়ে রাখা হয়।

বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েল ও সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য মধ্যস্থতা করছে। হামাসের হামলার পর এই আলোচনা স্থগিত হয়ে আছে। কিন্তু ইসরায়েল যদি পুনরায় এই আলোচনা শুরু করতে পারে তাহলে হয়ত দ্বি-রাষ্ট্র নীতি আবার সমাধান হিসেবে হাজির হতে পারে। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে বরা হয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে যেকোনও সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ থাকতে হবে।

সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস

/এসএসএস/এএ/
সম্পর্কিত
কম্বোডিয়ায় অস্ত্রাগার বিস্ফোরণে নিহত ২০
বাগদাদে ইরাকি টিকটক তারকাকে গুলি করে হত্যা
ভারতের মসলা নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র
সর্বশেষ খবর
রাজনীতি ঠিক না হলে অর্থনীতি ঠিক হবে না: সালেহউদ্দিন আহমেদ
রাজনীতি ঠিক না হলে অর্থনীতি ঠিক হবে না: সালেহউদ্দিন আহমেদ
ক্লপের সঙ্গে টাচলাইনে মতবিরোধ নিয়ে সালাহ, ‘কথা বললে আগুন লাগবে’
ক্লপের সঙ্গে টাচলাইনে মতবিরোধ নিয়ে সালাহ, ‘কথা বললে আগুন লাগবে’
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে
ভাসানটেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় একে একে পরিবারের সবার মৃত্যু
ভাসানটেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় একে একে পরিবারের সবার মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু