পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র জাপানে মঙ্গলবার ভোরে কয়েক দফায় ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কম্পনটি আঘাত হানে উত্তরপূর্ব উপকূলের ফুকুশিমা এলাকায়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিলো ৬ দশমিক ৯। জাপানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য জাপান টাইমস জানিয়েছে, আদতে এটি ছিল ২০১১ সালের প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পের আফটার শক।
২০১১ সালের ১১ মার্চ রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল জাপান। এতে নিহত হন ১৫ হাজার ৮৯৪ জন। আরও ২ হাজার ৫৬১ জনের কোনও খোঁজ মেলেনি। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুকুশিমার পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি চুল্লি। তেজস্ক্রিয়ায় ভারি হয়ে ওঠে বাতাস, উদ্বাস্তু হন লাখো মানুষ। ক্ষতি সামলে সুনামি সতর্কতা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে সমর্থ হয় দেশটি। মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের পরও জারি করা হয়েছে সুনামি সতর্কতা। এতে বলা হয়েছে, এর কারণে উপকূলীয় এলাকায় ১০ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। সুনামির তাণ্ডব থেকে লোকজনকে রক্ষা করতে মিনামি সোনা শহরের ৬৮ হাজার বাসিন্দার সবাইকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবারের ভূকম্পনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। ভূমিকম্পের পরপরই ওই অঞ্চলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে এলাকার বাসিন্দাদের।
জাপান মেট্রোলজিক্যাল এজেন্সির বরাত দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সকাল ৬টার দিকে এ ভূকম্পন অনুভূত হয়। এরপরই সুনামি সতর্কতা জারি করা হয় ফুকুশিমা এলাকায়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা-ইউএসজিএস ভূমিকম্পের মাত্রা ৭.৩ বললেও পরে তা কমিয়ে ৬.৯ বলে জানায়। তারা জানিয়েছে ফুকুশিমা উপকূলে সৃষ্ট এ ভূমিকম্পের গভীরতা ছিলো ভূপৃষ্ট থেকে ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) গভীরে। ইউএসজিএস ভূমিকম্পের মাত্রা নামিয়ে আনলেও সুনামির আশঙ্কা অব্যাহত রাখে।
বার্তা সংস্থা এএফপি ও এপি জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থলের কাছাকাছি এলাকায় তিন মিটার বা ১০ ফুটের কাছাকাছি জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানতে পারে। ঘটনার পরপরই ফুকুশিমাসহ পূর্ব উপকূলে সুনামির আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই ওই অঞ্চলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
/এমপি/