সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিষাক্ত গ্যাসের মজুদে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় বেসামরিক নাগরিকসহ শতাধিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার গভীর রাতে এ হামলা চালানো হয় বলে দাবি করেছে সিরীয় সেনাবাহিনী। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিরীয় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতির বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম জানিয়েছে, এ ঘটনা প্রমাণ করে যে, আইএস ও আল কায়েদা সমর্থিত জঙ্গিদের কাছে রাসায়নিক অস্ত্র রয়েছে।
রয়টার্সের পক্ষ থেকে অন্য কোনও সূত্র থেকে সিরীয় সেনাবাহিনীর এ দাবির সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
ইদলিবের বিদ্রোহীদের ঘাঁটিতে সিরীয় সেনাবাহিনীর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের পর দেশটির একটি বিমানঘাঁটিতে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে এ দাবির কথা জানালো সিরিয়া। বিমান ঘাঁটিতে হামলার পর বৃদ্ধি পেয়েছে রুশ-মার্কিন সম্পর্কে উত্তেজনা।
এদিকে, সিরিয়ায় সম্প্রতি হওয়া সম্ভাব্য রাসায়নিক হামলার তদন্তের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ওপিসিডব্লিউ-এর একটি সত্য অনুসন্ধানকারী দলকে তুরস্কে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে তারা বায়োমেট্রিক নমুনা সংগ্রহ করবেন এবং ঘটনার ভয়াবহতা থেকে বেঁচে যাওয়াদের সাক্ষাৎকার নেবেন। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সংশ্লিষ্ট এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স খবরটি জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ এপ্রিল তুরস্ক সীমান্ত সংলগ্ন ইদলিব প্রদেশের খান শেইখোন শহরে গ্যাস হামলা। এটি সারিন গ্যাস হামলা ছিল বলে শুরু থেকেই সন্দেহ করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, ২০১৩ সালের আগস্টে সারিন গ্যাস হামলার অভিযোগ ওঠার পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ রাসায়নিক হামলা। এবারের হামলায় প্রাণহানির সংখ্যা ৮৭। আসাদবিরোধী বিদ্রোহীরা এই হামলায় সরকারী বাহিনী ও রাশিয়াকে দুষলেও এই দাবি অস্বীকার করেছে সিরীয় সেনাসূত্র ও রুশ কর্তৃপক্ষ। হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক হয়। ওই হামলায় সিরিয়ার বিদ্রোহীদের দায়ী করে রাশিয়া। মস্কোর দাবি, বিদ্রোহীরা ওই রাসায়নিক গ্যাস মজুত করে রেখেছিল। সিরীয় বিমান হামলায় সেই গুদাম আক্রান্ত হলে বিস্ফোরণ ঘটে। তবে রাশিয়ার এমন দাবি জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করে নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্য দেশগুলো। তারা আসাদকে থামাতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানায়। ইতালিতে অনুষ্ঠিত জি সেভেন বৈঠকে রাশিয়ার ওপর সেই চাপ আরও জোরালো করা হয়েছে।
সম্ভাব্য রাসায়নিক হামলার জন্য দেশটির সরকারকে দায়ী করে একটি সিরীয় বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। দুই মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস পোর্টার এবং ইউএসএস রস থেকে আসাদ সরকার নিয়ন্ত্রিত ওই বিমানঘাঁটিতে ৫৯টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। সিরীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। প্রয়োজনে আরও হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘে নিয়োজিত মার্কিন দূত। সূত্র: রয়টার্স।
/এএ/