যুক্তরাজ্যে পাসপোর্ট সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক। এই সংস্কার আন্দোলনের দাবি হচ্ছে, সন্তানের পাসপোর্টে মা-বাবা উভয় অভিভাবকের নাম লিখতে হবে।
লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্ন এলাকা থেকে লেবার পার্টির এমপি নির্বাচিত হয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে টিউলিপ তার ১৮ মাসের মেয়ে আজালিয়াকে নিয়ে ফ্রান্সে ছুটি কাটিয়ে ফেরার পথে বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন। ব্রিটিশ নাগরিক উইলিয়াম সেন্ট জন পার্সিকে বিয়ে করেছেন টিউলিপ। কিন্তু নিজের নাম পাল্টাননি। পাসপোর্টে মেয়ের নামের সঙ্গে টিউলিপের নামের মিল না থাকায় এই বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাকে। ফেরার পথে ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তারা তাকে ৪৫ মিনিট ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
ওই ঘটনার বিষয়ে টিউলিপ বলেন, “আমাকে বিয়ে ও জন্ম সনদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়। জানতে চাওয়া হয়- ‘মেয়েটি কে?’”
ওই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে ব্রিটিশ এমপি জানান, শিশুর পাসপোর্টে বাবা-মা উভয়ের নাম উল্লেখ করার ক্ষেত্রে মানুষের সমর্থন তাকে অভিভূত করেছে। এই পরিবর্তনের জন্য কোনও আইন বদল করতে হবে না। বিধিতে একটি পরিবর্তনের মাধ্যমেই তা করা সম্ভব।
যুক্তরাজ্যের ছায়া মন্ত্রীসভার নারী ও সমতা বিষয়ক মন্ত্রী ডন বাটলারও টিউলিপের এই আন্দোলনকে সমর্থন করছেন। এই বিশেষ ক্ষেত্রে নারীদের অপ্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ বন্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সন্তানের পাসপোর্টে বাবা ও মায়ের নাম পরিবারের জরুরি যোগাযোগের ক্ষেত্রে উল্লেখ করা যেতে পারে। কিন্তু টিউলিপ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আরও ভালো সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ, অনেক নারীই এখন বিয়ের পর তাদের নাম পরিবর্তন করছেন না।
টিউলিপ বলেন, ‘পরিস্থিতি বদলাচ্ছে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী আইনেরও খাপ খাওয়ানো উচিত। আমি এই পরিস্থিতি বদলানোর একটি উপায় চাই। আমি জানি না, কেন নাম পরিবর্তনের জন্য আমাকে শাস্তি পেতে হবে। আমি ত্রিশ বছর বয়সে বিয়ে করি, আমার নিজের মতো জীবনযাপন করছি। আমার নামের তাৎপর্য তৈরি হয়েছে।’
অনুসন্ধানে টিউলিপ জানতে পেরেছেন, শিশু পাচাররোধে যুক্তরাজ্যের সীমান্ত কর্মকর্তারা গত পাঁচ বছরে ছয় লাখ ব্রিটিশ শিশুকে আটক করেছেন। শিশুদের রক্ষায় এই পদক্ষেপ প্রয়োজনীয় উল্লেখপূর্বক তিনি সতর্ক করে বলেছেন, চলমান প্রক্রিয়া নারীদের ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছে এবং ভ্রমণকারীদের সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। এছাড়া, সীমান্ত কর্মকর্তাদের কাজের বোঝাও বাড়াচ্ছে।