স্পেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কাতালোনিয়ার স্বায়ত্তশাসন স্থগিতের হুমকি দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। কাতালান নেতা কার্লোস পুইজমেন্ট স্বাধীনতা ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা আসে। ১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার স্পেনিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কাতালোনিয়ায় সংবিধানের ১৫৫ অনুচ্ছেদ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে তারা সরাসরি স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে শাসিত হবে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, কাতালোনিয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সরকার বদ্ধপরিকর। মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ইতোমধ্যেই কাতালোনিয়ায় কেন্দ্রের সরাসরি শাসন চালুর প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয়। কাতালান সরকারকে তিনি স্পষ্ট করে জানাতে বলেছেন, তারা এখন নিজেদের স্বাধীন বলে বিবেচনা করে কি না? মন্ত্রিসভার এক জরুরি বৈঠক শেষে মারিয়ানো রাজয় বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী স্পেন সরকার উদ্যোগ নেওয়ার আগে কাতালান সরকারকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানাচ্ছে। নাগরিকদের কাছে সবকিছু পরিষ্কার করা এবং এ ধরনের ক্ষেত্রে যে নিরাপত্তা প্রয়োজন তা বিধানে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব কাতালোনিয়ার স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা জরুরি।’
স্পেনের সংবিধান অনুযায়ী, স্বাধীনতার বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার পর কেন্দ্রীয় সরকার কাতালোনিয়ার স্বায়ত্তশাসন স্থগিত করতে পারবে।
এদিকে কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্লোস পুইজমেন্ট আবারও বলেছেন, স্বাধীনতার পথেই হাঁটতে চায় কাতালোনিয়া। তিনি বলেন, ‘এখনই স্পেন থেকে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে পারি। কিন্তু আমি সে পথে যাচ্ছি না। আমি তাদের কিছুটা সময় দিচ্ছি।’
শান্তিপূর্ণ উপায়ে স্বাধীনতা অর্জন করার আশাবাদ ব্যক্ত করে পুইজমেন্ট বলেন, কাতালোনিয়ার জনগণ স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার জন্যেই ভোট দিয়েছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ মাদ্রিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধানে আগ্রহী।
উল্লেখ্য, স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীনতার জন্য ১ অক্টোবর গণভোট আয়োজন করে কাতালোনিয়া। গণভোটে ৯০ শতাংশ মানুষ কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে রায় দিয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চলতি সপ্তাহে কাতালোনিয়ারা নেতাদের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকারের চাপে পুইজমেন্ট সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে সরে এসে আলোচনার আহ্বান জানালেন। তবে, স্বাধীনতাকামীদের এ গণভোটকে স্পেনের সরকার বেআইনি ঘোষণা করেছে।