যুক্তরাজ্যে সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনার জন্য ছুরি কেনার দায়ে ২১ বছরের এক নারীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়েছে, স্বামীকে দেখানোর জন্য বার্মিংহ্যামে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য মহড়া করেছে ওই নারী। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার মাদিহাহ তাহির নামের ওই নারীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
লন্ডনের উলউইস ক্রাউন কোর্ট জানিয়েছে, ওই দম্পতি তরুণ বয়সে পরস্পরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা আইএসের প্রপাগান্ডায় অনুপ্রাণিত হয়। সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কটিতে যোগ দিতে তারা প্রথমে সিরিয়া সফরে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু পরে সিরিয়ার বদলে যুক্তরাজ্যের নিজ শহর বার্মিংহ্যামে হামলা চালাতে তারা এখানে থেকে যায়।
চলতি বছরের মার্চে যুক্তরাজ্যের সশস্ত্র সন্ত্রাসবিরোধী পুলিশ এবং এমআই৫ গোয়েন্দারা ওই দম্পতির এ চেষ্টা ভণ্ডুল করে দেয়। ওই অভিযানে তারা মাদিহাহ তাহিরের স্বামী মির্জাকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃত মির্জা একজন সাবেক হিসাবরক্ষক। তার ২৩ বছরের বোন জয়নাব তার সহযোগী ছিল। আইএসের প্রপাগাণ্ডা ভিডিও শেয়ারের মাধ্যমে একে উৎসাহিত করার দায়ে ইতোপূর্বে তাকেও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তার শেয়ার করা ফুটেজে শিরশ্ছেদের মতো উপাদানও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ওয়েস্ট মিডল্যান্ড কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান ম্যাট ওয়ার্ড। তিনি বলেন, মির্জা দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপেক্ষাকৃত ব্যস্ত সময়ে বার্মিংহ্যামের রাস্তায় হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। ফলে তাকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, এই পরিকল্পনার শুরু হয় ২০১৫ সালে। এক পর্যায়ে তাদের পরিকল্পনা আরও গতি পায়। বিশেষ করে জয়নব মির্জা তার ভাইয়ের সঙ্গে হামলার প্রকৃতি সংক্রান্ত ভিডিও শেয়ার করতে থাকেন।
গত মার্চে গ্রেফতারের পর ছুরি নিয়ে সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনার পরিকল্পনার দায়ে মির্জাকেও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে এই পরিকল্পনার বিষয়ে কোনও তথ্য জানার কথা অস্বীকার করেছেন তার স্ত্রী।
আদালত জানিয়েছে, ছুরি কেনার টাকা নিয়ে হোয়াইটসঅ্যাপ কলে মির্জার সঙ্গে ঝগড়া বাধান তার গর্ভবতী স্ত্রী। তিনি বলছিলেন, সব ছুরি একই কাজ করে।
রাজকীয় প্রসিকিউশন সার্ভিসের সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক দফতরের প্রধান সু হ্যামিং। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী হামলার চালানোর জন্য মির্জার হাতে ছুরি থাকার বিষয়ে সন্দেহের পরিমাণ ন্যূনতম।
তিনি বলেন, তার স্ত্রী ওই হামলা চালাতে স্বতপ্রণোদিতভাবে ছুরি কিনেছিলেন। পুরো পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি অবগত ছিলেন। এই দম্পতি ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য একটি গুরুতর হুমকি। এখন কারাগারই তাদের জন্য প্রত্যাশিত স্থান যেন তারা বিপজ্জনক ঘটনা ঘটাতে না পারেন।
চলতি বছরের শেষ নাগাদ অভিযুক্ত তিন সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণার কথা রয়েছে। আগামী ১ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।