জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন স্বীকৃতির প্রতিবাদে বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আবারও ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বেথলেহেমে নিরাপত্তা প্রাচীরের কাছে হওয়া এই সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয় বলে জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।
৬ ডিসেম্বর বুধবার জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির কথাও জানান তিনি। এই নিয়ে বিশ্বজুড়ে তুমুল নিন্দা ও প্রতিবাদ জারি রয়েছে। ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকে পশ্চিম তীর, জেরুজালেম, গাজা ও বেথলেহেমসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে ফিলিস্তিনিরা।
জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ট্রাম্পের স্বীকৃতির পর দ্বিতীয় শুক্রবার এলো। শুক্রবারের বিক্ষোভের জন্য নিরাপত্তা প্রাচীর একটি জনপ্রিয় স্থান। জেরুজালেম পোস্ট জানায়, এদিন (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রবীণ ও তরুণ মিলে ৪০ জনের মতো ব্যক্তি বিক্ষোভ করতে করতে বেথলেহেমের র্যাচেল’স টম্বের কাছে নিরাপত্তা প্রাচীরের দিকে এগিয়ে যান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিন্দা এবং জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী উল্লেখ করে লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ইসরায়েলি সেনারা কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তখন বেশ কয়েকজ ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী আহত হন।
জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছুক্ষণ পর আরও বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি তরুণ মোলোতোভ ককটেল ও পাথর নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন এবং টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেন। পুরো এলাকা তখন কালো ধোঁয়ায় ভরে যায়।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংকটের সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয় হলো জেরুজালেম। ১৯৮০ সালে জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করেছিল ইসরায়েল। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এর সমর্থন দেয়নি। আর ফিলিস্তিনিরা চায় দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম যেন তাদের রাজধানী হয়। এ কারণে সেখানে কোনও দেশ দূতাবাস স্থাপন করেনি। সবগুলো দূতাবাসই তেল আবিবে অবস্থিত। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নীতির বাইরে গিয়ে গত ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর থেকেই বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। আর ফিলিস্তিনে শুরু হয়েছে তীব্র বিক্ষোভ। ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনীর। এরপরও প্রতিদিনই তীব্রতর হচ্ছে বিক্ষোভ। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনিরা ইন্তিফাদার অন্যতম হাতিয়ার পাথর আর গুলতি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে। তারা ইসারায়েলি বাহিনীর উপর পাথর ছুড়ে মারছে। আবার একই সঙ্গে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতিও নিচ্ছে হামাস।