ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সামরিক বাহিনীর অভিযানে তিন বেসামরিক ব্যক্তিকে হত্যার প্রতিবাদে বুধবার অঞ্চলটিতে সর্বাত্মক ধর্মঘট বা বনধ পালিত হয়েছে। ফলে দিনভর সেখানকার সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। খোলেনি দোকানপাট বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।
হুররিয়াত নেতা সাইয়্যেদ আলী শাহ গিলানি, মীরওয়াইজ ওমর ফারুক এবং জেকেএলএফ নেতা মুহাম্মদ ইয়াসীন মালিক বুধবার কাশ্মির উপত্যকায় এই বনধের ডাক দেন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ ডিসেম্বর উপত্যকার হান্দওয়াড়া এলাকার ইউনসো গ্রামে মিসরা বানু নামের একজন নিরাপত্তা বাহিনীর কথিত ক্রসফায়ারে নিহত হন। গত শনিবার রাতে থান্ডিপোরা গ্রামে আসিফ ইকবাল নামে এক ক্যাব চালক নিহত হন। সর্বশেষ ঘটনায় সোপিয়ানে মঙ্গলবার নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া বুলেটের আঘাতে রুবি জান (২৪) নামে এক নারী নিহত হন।
এসব হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ডাক দেওয়া বনধকে কেন্দ্র করে বুধবার কাশ্মির উপত্যকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে হুররিয়াত কনফারেন্সের একাংশের চেয়ারম্যান মীরওয়াইজ ওমর ফারুককে গৃহবন্দি করা হয়েছে। হুররিয়াত কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সাইয়্যেদ আলী শাহ গিলানি আগে থেকেই গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বুধবার সংঘর্ষকবলিত সোপিয়ানে যাওয়ার চেষ্টা করলে নির্দলীয় বিধায়ক ও আওয়ামী ইত্তেহাদ পার্টির প্রধান ইঞ্জিনিয়ার রশিদকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে তাকে রাজবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
মঙ্গলবার সোপিয়ানে গেরিলা ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষকালে ঘটনাস্থল থেকে গেরিলাদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করতে স্থানীয় মানুষজন রাস্তায় নেমে এসে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাঁদানে গ্যাসের সেল নিক্ষেপ করে নিরাপত্তা বাহিনী। এক পর্যায়ে শুরু হয় গুলিবর্ষণ। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া বুলেটের আঘাতে রুবি জান (২৪) নামের একজন বেসামরিক নারী নিহত হন।
বনধকে কেন্দ্র করে খানইয়ার, রায়নাওয়াড়ি, নৌহাট্টা, এম আর গঞ্জ ও সাফাকদল থানা এলাকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এছাড়া মৈসুমা ও ক্রালখুদে আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সূত্র: পার্স টুডে।