ভারতের বিমানবাহিনী ১১০টির মতো জঙ্গিবিমান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে জঙ্গি বিমান বিক্রয়ে ইচ্ছুক নির্মাতাদের ভারতের স্থানীয় কোনও প্রতিষ্ঠানকে সহযোগী হিসেবে নিতে হবে এবং বিমানের বেশিরভাগ অংশ ভারতেই তৈরি হবে। শুক্রবার ভারতীয় বিমান বাহিনীর তথ্য আহ্বানের নথি থেকে এসব তথ্য জেনেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর কাছ থেকে কার্যাদেশ পেতে বিমানগুলোর নির্মান প্রক্রিয়ার বড় অংশ ভারতে সম্পন্ন হতে হবে। বিমান বাহিনীর দেওয়া শর্তে বলা হয়েছে, বিমানের ৮৫ শতাংশ ভারতের কোনও কৌশলগত অংশীদার দ্বারা নির্মিত হতে হবে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইচ্ছা। তিনি চান ভারত স্থানীয়ভাবে জঙ্গি বিমান উৎপাদনে সক্ষম হয়ে উঠুক।
লকহিড মার্টিনের স্ত্র্যাটেজি অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিবেক লাল বলেছেন, লকহিড মার্টিন তাদের এফ-১৬ জঙ্গিবিমান উৎপাদনের পুরো ব্যবস্থাই যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে ভারতে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের ইচ্ছা, শুধু ভারতের জন্য নয়, অন্যান্য দেশের জন্যও এফ-১৬ জঙ্গিবিমান ভারতের কারখানা থেকেই সরবরাহ করার।
লকহিড মার্টিন জঙ্গিবিমান উৎপাদনের জন্য ভারতের টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমস এর সঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে সুইডেনের সাব ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। জঙ্গিবিমান সরবরাহে ইচ্ছুক অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও তাদের স্থানীয় সহযোগীর নাম ঘোষণা করেনি।
ভারতীয় বিমান বাহিনী যে বিমানগুলো কিনবে সেগুলো এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট বা দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট হতে পারে। আগে একবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে শুধু এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট বিমানই কেনা হবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে লকহিড মার্টিনের এফ-১৬ ও সাবের গ্রিপেন জঙ্গিবিমান ছাড়া আর কোনও প্রতিযোগী থাকে না।
তাই ফেব্রুয়ারিতে নীতিমালা পরিবর্তন করা হয়েছে। দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট জঙ্গিবিমান উৎপাদনকারীরাও এখন প্রতিযোগিতার সুযোগ পাবে। নতুন নীতিমালার আওতায় ইউরোফাইটার টাইফুন এবং রাশিয়ার জঙ্গিবিমানও ভারতে নিজেদের বিমান বিক্রির সুযোগ পেতে পারে। ডাসাল্ট এভিয়েশনের মুখপাত্রের কাছে এ বিষয়ে জনাতে চাইলে, তিনি কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
সোভিয়েত আমলের মিগ জঙ্গিবিমান পাল্টানোর জন্য ভারত ২০০৩ সালে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। এবার সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হওয়ার পথে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর কাছে জঙ্গিবিমান বিক্রির জন্য তথ্য জমা দেওয়া যাবে জুন মাস পর্যন্ত। এরপর বাছাই শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বছরখানেক লেগে যতে পারে।। সূত্র: রয়টার্স।