ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের একাংশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনে জম্মু ও কাশ্মিরের কাঠুয়া পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্ত করা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা আসিফাকে খুনের আগে চেতনানাশক খাওয়ানো, ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শনিবার পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি অংশে এই মামলাকে নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। অপরাধ তদন্ত বিভাগের ওই বিবৃতির বরাতে এসব খবর জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্ট।
এ বছরের মধ্য জানুয়ারিতে কাশ্মিরের কাঠুয়ার উপত্যকায় ঘোড়া চরানোর সময় অপহৃত হয় আসিফা। ১০ এপ্রিল ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অভিযোগপত্র জনসম্মুখে আনা হলে বিচার দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে সারা ভারত। আদালতে দায়ের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই শিশুকে অপহরণের জন্য অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও দেবীস্থান মন্দিদের হেফাজতকারী সানজি রাম তার ভাগ্নে ও একজন পুলিশ সদস্যকে নির্দেশ দেয়। নির্দেশ বাস্তবায়নের পর সাত দিন ধরে মন্দিরে আটকে রেখে একদল হিন্দু পুরুষ ধর্ষণ করে আসিফাকে। পরে মাথায় পাথর মেরে ও গলা টিপে হত্যা করা হয় তাকে। আসিফাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটজনকে অভিযুক্ত করেছে ভারতের আদালত। তবে ভারতীয় মিডিয়ার একাংশ এ ঘটনায় দায়ের করা অভিযোগকে মিথ্যা মামলা আখ্যা দিয়েছে। তারা প্রচার করছে, হত্যার আগে আসিফাকে ধর্ষণ করা হয়নি।
Press release....Case FIR No 10/2018 dated 12.01.2018 Police Station Hiranagar Kathua. pic.twitter.com/ek2IsXDpsa
— J&K Police (@JmuKmrPolice) April 21, 2018
তবে পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কয়েকদিন ধরে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি অংশ এমন সব তথ্য/সংবাদ প্রচার/ সম্প্রচার করছে যা সত্য থেকে অনেক দূরে। মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে তদন্তে নিশ্চিত হওয়া যায় অপরাধের শিকার ওই শিশুর ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছে অভিযুক্তরা। বিবৃতি অনুযায়ী, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন, ভিকটিমের (আসিফা) হাইমেন অক্ষত পাওয়া যায়নি। এসব মেডিক্যাল মতামতের ভিত্তিতে এই মামলায় ৩৭৬ (ডি) ধারা যুক্ত করা হয়। এছাড়াও মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হয়েছেন, ভিকটিমকে আটক রাখা হয়েছিল, চেতনানাশক দেওয়া হয়েছিল আর শ্বাসরোধের কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছিল।
সংবাদমাধ্যমের একাংশের মিথ্যা প্রচারণা সত্ত্বেও হিরানগর থানার করা এই মামলায় একটি সম্পূরক অভিযোগপত্র দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। তবে ধর্ষকদের পক্ষ নিয়ে কাঠুয়ায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। কাশ্মিরের মন্ত্রিসভার দুই সদস্য তাতে ধর্ষকদের পক্ষ নিয়ে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। অভিযুক্তদের পক্ষে ১২ দিনের ধর্মঘট পালন করেছেন দ্য জম্মু বার অ্যাসোসিয়েশন।