অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার যুদ্ধাপরাধ বলে বিবেচিত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। বুধবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এই মন্তব্য করেছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের ওপর বারবার প্রাণঘাতী উদ্দেশে তাজা গোলাবারুদ ব্যবহারের অভিযোগ করে সংস্থাটি বলছে, এসব বিক্ষোভকারী ইসরায়েলিদের জীবনের প্রতি অনিবার্য কোনও হুমকি সৃষ্টি করেনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, বুধবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এক জরুরী বৈঠকে ইসরায়েলের অতিরিক্ত বল প্রয়োগের নিন্দা জানাতে আনা এক ভোটাভুটি সামনে রেখে এই বিবৃতি দিয়েছে এইচআরডব্লিউ।
ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে ১৯৪৮ সালের ১৫ মে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসরায়েল নামের রাষ্ট্র। ১৯৭৬ সালের ৩০ মার্চ ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ইহুদি বসতি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় ছয় ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়। পরের বছর থেকেই ৩০ মার্চ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত পরবর্তী ছয় সপ্তাহকে ভূমি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। এই বছরের কর্মসূচিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চালানো গুলিতে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েল বরাবরই দাবি করে আসছে, বিক্ষোভকারীরা সীমান্ত বেড়া ভাঙার চেষ্টা চালালে গুলি চালিয়ে থাকে তারা।
তবে বুধবার দেওয়া বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউ’র মধ্যপ্রাচ্য পরিচালক সারাহ লিয়াহ হুইটসন বলেছেন, ‘জীবনের প্রতি অনিবার্য কোনও হুমকি সৃষ্টি না করলেও ইসরায়েল প্রাণঘাতী বল প্রয়োগ করায় প্রাণ এবং অঙ্গহানির ঘটনা বিপুল সংখ্যায় বেড়েছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পুরনো নাটকের পাতা উল্টে দেখার দরকার, যেখানে ইসরায়েল তদন্ত চালিয়েছে যাতে মূলত তার সেনাদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে আর নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক দায় আটকে দিয়েছে। আর ফিলিস্তিনিদের জীবনের সত্যিকার মূল্য দেওয়ার পরিবর্তে নির্লজ্জভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।’
আল জাজিরা জানিয়েছে, বুধবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ইসরায়েলের অতিরিক্তি বল প্রয়োগের নিন্দা জানিয়ে আনা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি সামনে রেখে এই বিবৃতি দিয়েছে এইচআরডব্লিউ। গত ২ জুন নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষায় আনা কুয়েতের একটি প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ওই প্রস্তাবকে ব্যাপকভাবে এক তরফা বলে আখ্যা দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি।