X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাতির শরীরে ক্যানসার প্রতিরোধী কোষ

বিদেশ ডেস্ক
১৯ আগস্ট ২০১৮, ২২:২৪আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০১৮, ২২:৩০

একই বয়সের মানুষের তুলনায় হাতির ক্যানসারে মৃত্যুহার অনেক কম। এই প্রাণীর দেহে বিশেষ এক ধরনের সুপ্ত জিন আছে, যা ক্ষতিগ্রস্ত কোষ মেরে ফেলতে পারে। হাতি এ জিন কাজে লাগাচ্ছে ক্যানসার প্রতিরোধে।

হাতির শরীরে ক্যানসার প্রতিরোধী কোষ বিশ্বের ১৭ শতাংশ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে। হাতির ক্ষেত্রে এ হার ৫ শতাংশ। কিন্তু হাতিও মানুষের মতোই গড়ে ৭০ বছরের কাছাকাছি বাঁচে।

আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ক্যানসার সৃষ্টিতে যেসব কোষ ভূমিকা রাখে হাতির শরীরে সেসব কোষের সংখ্যা মানুষের তুলনায় প্রায় ১০০ গুণ বেশি। অবাক হওয়া স্বাভাবিক, কী আছে হাতির শরীরে?

শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভিনসেন্ট লিঞ্চের নেতৃত্বে উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু জেনেটিক্স গবেষকের ধারণা, এর পেছনে রয়েছে একটি বিশেষ জিন- পি৫৩। মানুষসহ প্রায় সব স্তন্যপায়ী প্রাণীর দেহে এই জিন একটি করে রয়েছে। এই জিনের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনএ চিহ্নিত করে তাকে ধ্বংস করে ফেলা। শরীরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতোই কাজ করে এ জিন।

গবেষকরা একটি তথ্য জেনে অবাক হয়েছেন যে, হাতির শরীরে এই বিশেষ জিন আছে ২০টি। ফলে তাদের শরীরে এই ব্যবস্থা আরও দ্রুত এবং কার্যকরভাবে কাজ করে। ক্ষতিগ্রস্ত কোষ সময়মতো ধ্বংস করতে না পারলে তা এক সময় টিউমারে রূপ নেয়।

গবেষকদের মূল আবিষ্কার অবশ্য অন্য জায়গায়। লিঞ্চ বলছেন, ‘জিন সবসময়ই নিজের প্রতিলিপি তৈরি করতে থাকে। কখনও কখনও তারা ভুলও করে, ফলে তৈরি হয় জিনের কিছু অকার্যকর ছদ্ম জিন।’ পি৫৩ নিয়ে গবেষণার সময় গবেষকরা আরেক জিনের খোঁজ পান, যার নাম লিউকোমিয়া ইনহিবিশন ফ্যাক্টর ৬। একে সংক্ষেপে এলআইএফ৬ বলা হয়। গবেষকরা বলছেন, মানবদেহে সুপ্ত অবস্থায় থাকলেও হাতির শরীরে হঠাৎ করে কাজ করা শুরু করেছে এই জিনটি। বলতে গেলে মৃত্যু থেকেই ফিরে এসেছে জিনটি।

হাতির শরীর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কোষ সরিয়ে ফেলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এই এলআইএফ৬ জিন। কোষের শক্তিকেন্দ্র বলে পরিচিত মাইটোকন্ড্রিয়ায় ছিদ্র করে কোষকে মেরে ফেলে এই জিন। লিঞ্চ বলেন, ‘এটা অসাধারণ! কারণ, যখনই ক্যানসারের কোষ তৈরি হওয়া শুরু করে, তখনই তা সরিয়ে ফেললে ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় নির্মূল হয়ে যায়।’

২৫ থেকে ৩০ মিলিয়ন বছর আগে এই জিন হাতির পূর্বপুরুষ হাইরেক্সের শরীরে কার্যকর ছিল। তবে হাইরেক্সের আকার ছিল বানরের আকারের কাছাকাছি। হাতির বিশাল আকৃতিও ক্যানসার প্রতিরোধী এই জিনকে জাগিয়ে তোলার আংশিক কারণ বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।

বড় প্রাণীর দেহে কোষের সংখ্যা বেশি। ফলে কোষ বিভাজনের পরিমাণও বেশি। বিজ্ঞানীদের ধারণা, বড় প্রাণীদের ক্ষেত্রে টিউমার কোষ সারানো বা সরিয়ে ফেলতেও বেশি কার্যকর মেকানিজমের প্রয়োজন হয়। হাতির শরীরের এই ক্যানসারবিধ্বংসী পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে মানুষের জন্য ক্যানসারের ওষুধ আবিষ্কারের চেষ্টা চালাচ্ছেন লিঞ্চ ও তার সহকর্মীরা। সূত্র: ডয়চে ভেলে।

/এমপি/
সম্পর্কিত
পশ্চিমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চীনকে যা করতে হবে
ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে: ম্যাক্রোঁ
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিমার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য রয়েছে
সর্বশেষ খবর
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
ভোট গণনা প্রক্রিয়ায় কোনও পরিবর্তন হবে না: ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট
ভোট গণনা প্রক্রিয়ায় কোনও পরিবর্তন হবে না: ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত