ইয়েমেন যুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সৌদি আরবের কাছে ৪০০ লেজার নিয়ন্ত্রিত বোমা বিক্রি করবে স্পেন। বৃহস্পতিবার স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ বোরেল এই ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে ইয়েমেনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এই বিক্রয় চুক্তি স্থগিত করেছিল স্পেন। বৃহস্পতিবার বোরেল অন্ডা সেরো রেডিওকে বলেন, আগের সরকারের আমলে স্বাক্ষরিত ২০১৫ সাল থেকে চলমান একটি চুক্তিকে সম্মান দেখাতে এসব বোমা সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের হিসাবে ইয়েমেন যুদ্ধে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে দশ হাজার মানুষ। দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে প্রায় ৮৪ লাখ মানুষ। এসব মানুষের দুর্ভোগের জন্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গ্রুপগুলো সৌদি আরবের কাছে পশ্চিমা দেশগুলোর অস্ত্র বিক্রিকে দায়ী করে থাকে।
গত মাসে ইয়েমেনের এক স্কুলবাসে সৌদি আরবের বিমান হামলায় ৪০ জনেরও বেশি শিশু নিহত হলে বিশ্বজুড়ে নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়। জাতিসংঘ সৌদি আরবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি শুরুর পর দেশটি জানায় ভুলবশত ওই হামলা চালানো হয়েছে। স্পেন সরকারও ওই সময়ে সৌদি আরবের কাছে বোমা বিক্রি স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়।
বৃহস্পতিবার বোরেল ঘোষণা বলেন, সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয় বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে এই ইস্যু নিয়ে কাজ করেছে এবং অস্ত্র বিক্রি অনুমোদনকারী কমিশন তিনবার চুক্তিটি পর্যালোচনা করে দেখেছে। কিন্তু চুক্তি বাতিল করার কোনও কারণ পাওয়া যায়নি।
ইয়েমেনে বেসামরিকদের ওপর এসব অস্ত্র ব্যবহার হবে না এমন কোনও নিশ্চয়তা স্পেন চেয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বোরেল জানান, লেজার নিয়ন্ত্রিত বোমাগুলো তাদের লক্ষ্যবস্তুর এক মিটারের মধ্যে অসাধারণ নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। তিনি যুক্ত করেন, এই বোমা অন্যান্য অত্যাধুনিক বোমার মতো এলোপাতাড়ি নিক্ষিপ্ত হয় না, যা থেকে ট্র্যাজেডি ঘটে। এমন ঘটনার নিন্দা আমরা সবাই এরই মধ্যে জানিয়েছি।
স্পেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গত মাসে জানায়, গত জুনে ক্ষমতাসীন হওয়া বর্তমান সমাজতান্ত্রিক সরকার বেসামরিক মানুষের ওপর ব্যবহার করতে পারে এমন কারও কাছে কখনও অস্ত্র বিক্রি করবে না।