X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পশ্চাৎপদ রাজনীতির ভারতে সুপ্রিম কোর্ট যখন প্রগতির ধারক

আরশাদ আলী
০৭ অক্টোবর ২০১৮, ২২:২৪আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০১৮, ২২:৪৬

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সেপ্টেম্বর মাসে চূড়ান্ত রকমের ব্যস্ত ছিল। মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকরা সমকামিতাকে বৈধতা দিয়েছেন এবং পরকীয়া ফৌজদারি অপরাধ নয় বলে জানিয়েছেন। এই দুটি আইনই ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনামলে জারি করা হয়েছিল। এছাড়া শত বছরের একটি নিষেধাজ্ঞাও বাতিল করে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এসব বিচারের রায় ঘোষণাকালে বিচারপতিরা কিছু পর্যবেক্ষণও দিয়েছেন। এর মাধ্যমে দেশটিতে প্রগতির ধারক হিসেবে নিজের অবস্থান জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে এসব ঐতিহাসিক রায়ের পর রাজনৈতিক দল ও তাদের নেতাদের মন্তব্যে তাদের পশ্চাৎপদ চিন্তাধারা ফুটে উঠেছে।

ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ৬৫ বছর বয়সে অবসর বাধ্যতামূলক। ভারতীয়দের জীবনে আইনি হস্তক্ষেপের কারণে বিচারপতিদের তেমন সমালোচিত হতে হয়নি। সবসময় যে তাদের রায় উদার ছিল তা নয়, অনেক সময় তা রক্ষণশীলও ছিল। যেমন- ২০১৬ সালে এক রায়ে সবগুলো চলচ্চিত্র প্রেক্ষাগৃহে জাতীয় সংগীত বাজানো বাধ্যতামূলক করা হয়। যদিও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়।

সেপ্টেম্বর মাসে যুগান্তকারী এসব রায় দেওয়া প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে আগে থেকেই ছোটোখাটো হলেও বিতর্ক ছিল। সেপ্টেম্বরে ঐতিহাসিক রায়গুলো ঘোষণার পর অক্টোবরের শুরুতেই অবসরে যান প্রধান বিচারপতি দিপক মিশরা। এসব রায় ঘোষণার আগেই তিনি ভারতে বেশ বিতর্কিত হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন। তার বিচারিক কাজের প্রক্রিয়া ও আদালতের বাইরের রাজনীতির ফল এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মিশরা যখন বাবরি মসজিদ-অযোধ্যার মামলার শুনানি শুরু করেন তখন রাজনৈতিক দলগুলো চেয়েছিল ২০১৯ সালের নির্বাচনের পর যেন রায় ঘোষণা করা হয়। কংগ্রেস নেতা ও সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিবাল তারিখ পিছানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু আদালত তা গ্রহণ করেনি। এপ্রিলে কংগ্রেসই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব আনতে চেয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রে যখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে ব্রেট কাভানাহকে নিয়োগ দেওয়া নিয়ে বিতর্কে উত্তাল ঠিক ওই সময়েই ভারতের দৈনিক পত্রিকাগুলো দেশটির বিচারপতিদের নিয়ে অনেক বেশি ইতিবাচক। সমকামীতাকে বৈধতা দেওয়ার পর ভারতের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকা টাইমস অব ইন্ডিয়া ওই রায়কে দ্বিতীয় স্বাধীনতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী হিন্দুস্তান টাইমস প্রথম পাতায় সুপ্রিট কোর্ট ভবনের একটি ছবিসহ শিরোনাম করেছে -রঙধনু জাতি।

সমকামিতার বৈধতা দেওয়ার পর সমকামিদের উল্লাস

সেপ্টেম্বরে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের এসব যুগান্তকারী রায়ে খুব একটা প্রতিক্রিয়া দেখায়নি দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো। ভারতীয় রাজনৈতিক দলগুলোকে অনেক বেশি রক্ষণশীল মনে করা হয়। ৬ সেপ্টেম্বর সমকামীতা বৈধতা দিয়ে দেওয়া রায়ের পর অ্যাক্টিভিস্ট, আইনজীবী এবং ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি উদযাপন করা হয়েছে। কিন্তু দেশটির শাসকরা ছিলেন প্রায় নিশ্চুপ। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। অথচ তিনি প্রায়ই দিনের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে টুইট করেন। এমনকি অতীতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরও টুইট করেছেন। কিন্তু এবার কিছুই লিখেননি তিনি। এটা ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) রক্ষণশীল হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের প্রতিফলন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিজেপি ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলগুলো এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। বিশেষ করে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস।

এই রায় সম্পর্কে বিজেপি সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া না জানালেও দলটির মতাদর্শিক সংগঠন হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রতিক্রিয়াতে মোদি ও তার দলের অবস্থানের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। মোদিসহ বিজেপির শীর্ষস্থানীয় অনেক নেতাই প্রকাশ্য রাজনীতিতে আসার আগে আরএসএস’র সদস্য ছিলেন। সমকামিতা নিয়ে আদালতের রায়ের পর আরএসএস জানায়, সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য না করার যে রায় আদালত দিয়েছেন তাতে তারা একমত। কিন্তু তারা এ ধরনের সমলিঙ্গের সম্পর্ককে স্বাভাবিক হিসেবে মানতে রাজি না। আরএসএস’র মুখপাত্র অরুণ কুমার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা এ ধরনের সম্পর্ক সমর্থন করি না।’

সেপ্টেম্বর মাসেই ভারতের শত বছর পুরনো আরেকটি নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছেন বিচারকরা। দক্ষিণ কেরালার একটি হিন্দু মন্দিরে ঋতুস্রাবকালীন সময়ে নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। আদালত ওই নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছে। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, ১০ থেকে ৫০ বছরের নারীদের সবরিমালা মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা যাবে না। আদালত বলেছেন, এই নিয়ম ছিল বৈষম্যমূলক। গুরুত্বপূর্ণ হলো সাংবিধানিক নৈতিকতা। একাধিক প্রগতিশীল রায় দেওয়ার ধারাবাহিকতায় শীর্ষ আদালতের বিচারকরা বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকেও সমর্থনের কথা জানিয়েছে আরএসএস। একই সঙ্গে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেছে তারা। তাদের দাবি, তীর্থযাত্রীদের অনুভূতির কথা মাথায় না নিয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে কর্তৃপক্ষ।

ভারতের সাবারিমালা মন্দির

সমকামিতা সংক্রান্ত রায়ের মাত্র এক সপ্তাহ ব্যবধানে আরেকটি যুগান্তকারী রায় দিয়েছে আদালত। ওই রায়ে পরকীয়া সংক্রান্ত পুরনো এক রায়কে অসাংবিধানিক আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ১৮৬০ সালের ব্রিটিশ আইনে বিবাহিত নারী-পুরুষের মধ্যে বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে পুরুষকে অপরাধী বিবেচনা করা হতো। নারীকে বিবেচনা করা হতো ‘ভিকটিম’। রায়ে ভারতের প্রধান বিচারপতি বলেন, ১৫৮ বছরের পুরনো এই আইনের কোনও দরকার নেই। তিনি বলেন, '‌স্ত্রী কখনও স্বামীর সম্পত্তি হতে পারে না। কোনও ব্যক্তি যদি কোনও বিবাহিত নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন তবে সেটা কোনও অপরাধ নয়।'‌ টাইমস অব ইন্ডিয়া এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে লিখেছে, আরেকটি ঐতিহাসিক রায় আইনকে বেডরুম থেকে দূরে সরিয়ে নিলো।

পরকীয়া বা ব্যাভিচারের শাস্তির আইন বাতিলের ক্ষেত্রে মোদি সরকার বিরোধিতা করেছে। সরকারের দাবি, পরকীয়াকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করাই উচিত। আদালতে দেওয়া যুক্তিতে সরকার দাবি করেছে, ৪৯৭ ধারা বলে পরিচিত আইনটি বিয়ের মতো প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ককে সমর্থন ও রক্ষা করে। কেন্দ্র সরকার সতর্কতা জানিয়ে বলে, এই আইন বাতিলের ফলে ভারতীয় নৈতিকতার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বিয়ে হুমকির মুখে পড়বে এবং এর পবিত্রতা কমে যাবে। কিন্তু বিচারকরা বিষয়টি অন্যভাবে বিবেচনা করেছেন। বিচারপতিরা জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই আইনের অবলুপ্তি ঘটেছে। তাই এ দেশের বর্তমান সমাজেও এই আইন থাকার কোনও দরকার নেই। দীপক মিশ্র বলেন, '‌যে আইন ব্যক্তিগত মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করে তা রাখার কোনও মানেই হয় না। আমাদের সমাজে নারী-পুরুষের সমান অধিকার রয়েছে। নারীদের কোনোভাবেই অসম্মান করা যাবে না, তাদের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক মন্তব্য করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।'‌

পশ্চাৎপদ রাজনীতির ভারতে সুপ্রিম কোর্ট যখন প্রগতির ধারক

সেপ্টেম্বরের এসব রায়ে আদালত শুধু যে প্রগতিশীল মূল্যবোধকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছে তা নয়। এর মধ্য দিয়ে ভারতীয় রাজনীতির পশ্চাৎপদতাকেও সামনে নিয়ে এসেছে। যুগান্তকারী এসব রায়ের পর প্রত্যেকবারই ক্ষমতাসীন বিজেপির মতাদর্শিক সংগঠন হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছেন, আদালতের এসব রায় প্রয়োজনীয় কিন্তু একই সঙ্গে তা সমস্যা তৈরি করবে। তিনি বলেছেন, এই ঐতিহাসিক রায়গুলো লেখার সময় বিচারকদের মনে ইতিহাসে স্থান পাওয়ার বিষয়টি ভর করেছে। তারা একধাপ বেশি এগিয়ে গেছেন।

পরকীয়ার রায়ের ক্ষেত্রেও ভারতীয় এই মন্ত্রী বলেন, যেমন আছে তেমন রেখে দেওয়া ভালো-এমন ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করেছে আদালত। তিনি মনে করেন, আইনটি বাতিল করা ঠিক আছে কিন্তু শব্দগতভাবে তা খুব খারাপভাবে করা হয়েছে। অরুণ জেটলি মনে করেন, এর ফলে ভারতীয় পারিবারিক ব্যবস্থা পশ্চিমা ব্যবস্থায় পরিণত হতে পারে। এতে করে বিবাহবিচ্ছেদ বাড়তে পারে। কিন্তু পশ্চিমাদের মতো এখানে সামাজিক সুরক্ষা ও বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা নেই। ফলে এই রায় সত্যিকার অর্থে নারীবিরোধী হতে পারে।

ভারতের আইন বিষয়ে অভিজ্ঞদের মধ্যে অন্যতম বিবেচনা করা হয় অরুণ জেটলিকে। তবে তার এই মতের সঙ্গে একমত হতে পারেননি আরেক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সঞ্জয় হেজ। তিনি বলেন, কথা শুনে মনে হচ্ছে মন্ত্রী সেই স্বর্ণালী অতীতে ফিরে যেতে যান যেখানে মূল্যবোধকে এখনও সংস্কারি বলা হয়। তার মন্তব্য পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার প্রমাণ দেয়। ওই মানসিকতায় মনে করা হয়, বিয়ে পুরোপুরি টিকে থাকে নারী কতখানি নিষ্কলুষ তার ওপর। সাংবিধানিক নৈতিকতা এসব পুরনো ধ্যান-ধারণাকে বাতিল করে দিয়েছে এবং এই রায় বর্তমান ভারতীয় সমাজকেই প্রতিফলিত করে।

রাজনীতিবিদ ছাড়াও ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মারকান্দে কাতজু মন্দিরে নারীদের প্রবেশ নিয়ে আদালতের রায় মেনে নেননি। তিনি লিখেছেন, ভারতে হাজার হাজার মন্দির, মসজিদ ও গুরুদুয়ারা রয়েছে। এগুলোর অনেকেরই নিজস্ব রীতি ও শৃঙ্খলা আছে। কিছু কিছু মন্দির আছে যেগুলো নারীদের প্রবেশের অনুমতি দেয় না। এখন কি আদালত সবগুলো ক্ষেত্রেই হস্তক্ষেপ করবে?

/আরএ/
সম্পর্কিত
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট কাল
সর্বশেষ খবর
২৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ, পুলিশ বলছে সিসিটিভির ফুটেজ পায়নি
কুমিল্লা শিক্ষা প্রকৌশল কার্যালয়ে ঠিকাদারকে মারধর২৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ, পুলিশ বলছে সিসিটিভির ফুটেজ পায়নি
উপজেলা নির্বাচন: অংশ নিতে পারবেন না পৌর এলাকার ভোটার এবং প্রার্থীরা
উপজেলা নির্বাচন: অংশ নিতে পারবেন না পৌর এলাকার ভোটার এবং প্রার্থীরা
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ