উত্তর সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীর শেষ অবস্থানে প্রবল হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি যোদ্ধারা। তাদের হাতে আটক হয়েছে ৫০ দেশের ৮০০ জঙ্গি। তাদের স্ত্রী-সন্তানেরা রয়েছে আশ্রয় শিবিরে। এরকম অবস্থায় জঙ্গিরা যেসব দেশের নাগরিক সেসব দেশের পক্ষ তাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির সঙ্গে একমত নয় কুর্দিদের সংগঠন ‘সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস’ (এসডিএফ)। তবে তারাও মনে করে, ইউরোপীয় দেশগুলো আটক জঙ্গিদের পুনর্বাসনের দায় এড়িয়ে যেতে পারে না।
সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) উত্তর সিরিয়াতে কুর্দিদের সংগঠন এসডিএফের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হওয়া বহু আইএস জঙ্গিকে আটক করে কারাগারে রাখা হয়েছে। অন্তত ৫০টি দেশের ৮০০ জন জঙ্গি তাদের হাতে আটক রয়েছে। তাদের ৭০০ জন স্ত্রী ও ও প্রায় দেড় হাজার ছেলেমেয়ে রয়েছে শরণার্থী শিবিরে।
তাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু ইউরোপীয় দেশগুলো সংশ্লিষ্ট জঙ্গি নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছে না। কুর্দিরা মনে করে, তুরস্ক হামলা চালালে আটক জঙ্গিদের ওপর থাকা নিয়ন্ত্রণ শিথিল হয়ে পড়তে পারে, যার সূত্রে তাদের সামনে আসতে পারে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইইউভুক্ত দেশগুলো তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যদি বিচারের ব্যবস্থা না করে, তাহলে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এ বিষয়ে এসডিএফের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রশাসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক সহ-সভাপতি আব্দুলকরিম ওমর বলেছেন, ‘আমরা তাদেরকে ছেড়ে দিতে পারি না। আমরা কখনওই তা করব না।
‘কিন্তু অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট দেশগুলো এ বিষয়ে তাদের কোনও দায় নেই বলে মনে করছে। এখানেই তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া ভালো। কিন্তু তাদের এই অবস্থান অত্যন্ত বড় একটি ভুল। এসডিএফের কারাগারে থাকা আইএস জঙ্গি ও শরণার্থী শিবিরে থাকা তাদের স্ত্রী-সন্তানেরা এই অঞ্চল ও সিরিয়ার জন্য টাইম বোমা। যথাযথভাবে পুনর্বাসন করা না হলে তাদেরকে নিয়ে ভুগতে হবে।’
আটক জঙ্গিদের মধ্যে একজনের কথা সম্প্রতি অনেক বেশি আলোচিত হয়েছে। তার নাম শামীমা বেগম। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ নাগরিক এখন সিরিয়ার আশ্রয় শিবিরে রয়েছে। সে যুক্তরাজ্যে ফেরার আগ্রহ দেখালেও দেশটি তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেয়নি, ইতোমধ্যে সে একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছে। কিন্তু যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ মন্তব্য করেছেন, আইএসে যোগ দেওয়া নাগরিকদের দেশে প্রত্যাবর্তন ঠেকানোর ক্ষেত্রে তিনি কুণ্ঠাবোধ করবেন না।