X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘ট্রাম্প বিশ্ব ব্যবস্থার জন্য হুমকি’

বিদেশ ডেস্ক
২৭ এপ্রিল ২০১৯, ২২:১০আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০১৯, ২২:১৬

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘বিশ্ব ব্যবস্থার জন্য হুমকি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন যুক্তরাজ্যের ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমিলি থর্নবেরি। শুক্রবার টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

‘ট্রাম্প বিশ্ব ব্যবস্থার জন্য হুমকি’ এমিলি থর্নবেরি বলেন, জাতিসংঘের অস্ত্র বাণিজ্য চুক্তি সম্পর্কে ট্রাম্পের বক্তব্যে এটি চূড়ান্তভাবে প্রমাণ হয়েছে যে, তিনি মুক্ত বিশ্বের নেতা নন, কখনও ছিলেন না। তিনি যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরের মতো সম্মান পাওয়ার যোগ্য নন। তিনি আমাদের বিশ্ব ব্যবস্থার জন্য হুমকি ছাড়া আর কিছুই নন।

এর আগে জাতিসংঘের অস্ত্র বাণিজ্য চুক্তি (এটিটি) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। ২৬ এপ্রিল শুক্রবার ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন (এনআরএ)-তে দেওয়া ভাষণে এ ঘোষণা দেন তিনি। তার ভাষায়, আমরা আমাদের সাক্ষর ফিরিয়ে নিচ্ছি।

২০১৩ সালে জাতিসংঘের উদ্যোগে ১৩০টি দেশ এ চুক্তিতে সাক্ষর করে। দুনিয়াজুড়ে অস্ত্রের কেনাবেচা নিয়ন্ত্রণে আনাই ছিল এ চুক্তির লক্ষ্য। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জাতিসংঘের এ চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। তখন এনআরএ-সহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি কট্টরপন্থী গোষ্ঠী ও লবিস্ট গ্রুপ এর বিরোধিতা করেছিল।

ট্রাম্পের দাবি, এ চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাহানি হয়েছে। এখন শিগগিরই এ চুক্তি থেকে আমেরিকার নাম প্রত্যাহারের জন্য জাতিসংঘকে আনুষ্ঠানিক নোটিস দেওয়া হবে। তার ভাষায়, আমার মেয়াদকালে আমেরিকা কারও কাছে তার সার্বভৌমত্ব সমর্পণ করবে না। অস্ত্র আইনের সংশোধনীতে বিদেশি কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপের অনুমতি কিছুতেই দেওয়া হবে না।

ওই চুক্তিতে বলা হয়েছিল, অস্ত্র রফতানিকারক দেশগুলোকে জাতিসংঘের কাছে তাদের অস্ত্র বাণিজ্যের প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। রফতানিকৃত অস্ত্র কোনওভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা তা যাচাইবাছাই করতে হবে। গণহত্যা বা যুদ্ধাপরাধের মতো কর্মকাণ্ডে ব্যবহার অথবা সন্ত্রাসীদের হাতে পড়লে রফতানিকারক দেশকেই ওই অস্ত্র হস্তান্তর ঠেকানোর কথা বলা হয়েছে চুক্তিতে।

বিশ্বের বৃহত্তম অস্ত্র রফতানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্র। তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রাশিয়ার চাইতে প্রায় ৫৮ শতাংশ বেশি অস্ত্র বিক্রি করে থাকে দেশটি। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই জাতিসংঘের অস্ত্র বাণিজ্য চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

এদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে নৈশভোজের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের আমন্ত্রণে আগামী জুনের গোড়ার দিকে তিন দিনের সফরে যুক্তরাজ্য যাওয়ার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। সফরে তার সম্মানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-র একটি নৈশভোজের কর্মসূচি রয়েছে। আর ওই নৈশভোজের আমন্ত্রণই ফিরিয়ে দিয়েছেন করবিন। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন।

যুক্তরাজ্য সফরে ট্রাম্পকে লালগালিচা সংবর্ধনা না দেওয়ার পক্ষেও মত দেন করবিন। তিনি বলেন, বর্ণবাদী ও নারীবিদ্বেষী কথা বলা, জলবায়ু পরিবর্তন প্রত্যাখ্যানকারীদের সমর্থন, গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সব চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া একজন প্রেসিডেন্টের রাষ্ট্রীয় সফরে তাকে লালগালিচা দেওয়া উচিত হবে না।

লেবার নেতা বলেন, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে যে কোনো বৈঠককে তিনি স্বাগত জানাবেন। তবে ওয়াশিংটনের সঙ্গে মিত্রতা টেকানোর জন্য ‘রাষ্ট্রীয় সফরের আনুষ্ঠানিকতা’ নিষ্প্রয়োজন।

বিবিসি জানিয়েছে, তিন দিনের সফরে আগামী ৩ থেকে ৫ জুন সস্ত্রীক যুক্তরাজ্যে অবস্থান করবেন ট্রাম্প। সফরে ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ব্রিটিশ রানির আতিথেয়তা গ্রহণ করবেন। ডাউনিং স্ট্রিটে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-এর সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হবেন তিনি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রপক্ষ কর্তৃক ইউরোপের মূল ভূখন্ডে স্থল অভিযান শুরুর ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে পোর্টসমাউথে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানেও অংশ নেবেন ট্রাম্প-মেলানিয়া দম্পতি।

১৯৪৪ সালের ৬ জুন, নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে মিত্র বাহিনীর প্রায় ১ লাখ ৫৬ হাজার সদস্য ফ্রান্সে অবতরণ করেন। দিনশেষে প্রায় সাড়ে চার হাজার সেনার মৃত্যু হয়। ফ্রান্সের নরম্যান্ডির উপকূলে ডি-ডে নামে খ্যাত ওই অভিযানের মধ্যে দিয়ে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে মিত্র বাহিনীর বিজয়ের সূচনা হয়।

২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম বিদেশি নেতা হিসেবে ওয়াশিংটন সফর করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তবে ট্রাম্পকে রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাজ্যে আমন্ত্রণ না জানানোর দাবিতে ২০১৭ সালে একটি অনলাইন পিটিশন খোলা হয়েছিল। এতে স্বাক্ষর করেন প্রায় ১৯ লাখ ব্রিটিশ নাগরিক। পরে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে তিন দিনের যুক্তরাজ্য সফরকালে রানি এলিজাবেথের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ট্রাম্প। তবে সে সময় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বাসভবনে রাজকীয় অনেক রেওয়াজ না মানার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে।

/এমপি/
সম্পর্কিত
পশ্চিমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চীনকে যা করতে হবে
ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে: ম্যাক্রোঁ
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিমার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য রয়েছে
সর্বশেষ খবর
হলিউডের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন ক্যাটরিনা!
হলিউডের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন ক্যাটরিনা!
হলও ছাড়েননি আন্দোলনেও নামেননি চুয়েটের শিক্ষার্থীরা
হলও ছাড়েননি আন্দোলনেও নামেননি চুয়েটের শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
মারা গেলো গাজায় নিহত মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুটি
মারা গেলো গাজায় নিহত মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুটি
সর্বাধিক পঠিত
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!