স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার দায়ে ব্রিটিশ বাংলাদেশি নাগরিক জালাল উদ্দীন (৪৭) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) লন্ডনের ওল্ড বেইলি কোর্ট তাকে এই দণ্ড দেন। দেশটির প্রচলিত আইন অনুসারে, অন্তত ১৯ বছর জেল খাটতে হবে জালালকে।
এর আগে, পূর্ব লন্ডনের বাড়িতে স্ত্রী খুন হওয়ার একদিনের মাথায় আটক হন জালাল। নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগে শুনানিতে জালাল আদালতকে বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রী আসমার কাছে তার জুয়া আসক্তির বিষয়টি ধরা পড়ে যায়। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির জেরে স্ত্রীকে হত্যা করেন তিনি। খুনের আগে আসমার ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব থেকে ২০০ পাউন্ড তুলে নিয়েছিলেন জালাল।
‘স্ত্রী সন্তানের ব্যয় নির্বাহের জন্য একসময় জুয়াকেই পেশা হিসেবে নিয়েছিলাম’, আদালতকে জানান তিনি।
মামলার শুনানিকালে প্রসিকিউটর ড্যানিয়েল রবিনসন কিউসি আদালতকে বলেন, তিন সন্তানের জননী আসমা বেগমকে ৫৭ বার ছুরিকাঘাতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তিনি জানান, পোস্টমর্টেমের সময় ডাক্তারদের গুনতে কষ্ট হয়েছে ঠিক কতবার আসমাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
আসমার স্বজনার জানায়, ঘটনার আগের দিন আসমা এবং ঘাতক স্বামী জুয়া খেলায় টাকা খোয়ানো নিয়ে ঝগড়া করে। পরের দিন সকালে আবার ঝগড়া চলাকালে জালাল স্ত্রী আসমার ওপর ছুরি নিয়ে চড়াও হন এবং নৃশংসভাবে খুন করেন।
রেস্টুরেন্টে শেফের কাজ করা জালাল ধীরে ধীরে জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েছিল।
নিহত আসমা বেগমের স্বজনেরা আরও জানান, জালাল ছিল পেশাদার জুয়াড়ি। খেলার অর্থ জোগাতে সে সন্তানদের চাইল্ড বেনিফিটের অর্থও তুলে নিতো। স্বামীকে জুয়া আসক্তি থেকে বের করে আনতে বহু চেষ্টা করেছেন স্ত্রী আসমা। শেষ পর্যন্ত নিজেই সেই আসক্তির বলি হয়েছেন।