মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের প্রচার শিবিরের বাসে ট্রাম্প সমর্থকদের হয়রানির তদন্তে নেমেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই)। রবিবার সংস্থাটির একজন মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন।
গত সপ্তাহে টেক্সাসের সান এন্টোনিও এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে জো বাইডেনের প্রচার শিবিরের বাসকে ঘিরে হয়রানির অভিযোগ উঠে ট্রাম্প সমর্থকদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, বেশ কয়েকটি গাড়ি নিয়ে ওই বাসটি ঘিরে ধরে একদল ট্রাম্প সমর্থক। তাদের হাতে ছিল ট্রাম্প ২০২০ লেখা পতাকা। এ নিয়ে সমালোচনা তৈরি হলে রবিবার এ ব্যাপারে তদন্তের কথা জানায় এফবিআই।
এফবিআই-এর একজন মুখপাত্র সিএনএন-কে জানিয়েছেন, ‘এফবিআই ওই ঘটনা সম্পর্কে অবগত এবং এর তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।’
সিএনএন-এর খবরে বলা হয়েছে, বাইডেনের প্রচার শিবিরকে হয়রানির ওই ঘটনা ঘটে গত শুক্রবার। এদিন বাসটি টেক্সাসের সান অ্যান্টোনিও এলাকা থেকে অস্টিনের উদ্দেশে যাচ্ছিল। ওই এলাকায় আগাম ভোটের শেষ দিন যাতে বাইডেন সমর্থকরা তাদের ভোট প্রদান করেন; এ নিয়ে প্রচারণার উদ্দেশে অস্টিনের উদ্দেশে যেতে চেয়েছিল বাসটি। এর মধ্যেই ট্রাম্পের পতাকা নিয়ে একদল মোটরসাইকেল আরোহী বাসটিকে ঘিরে ধরে।
ওই ঘটনার পর টেক্সাসে বাইডেন শিবিরের পূর্ব নির্ধারিত দুইটি কর্মসূচি বাতিল করে দেওয়া হয়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরইমধ্যে রেকর্ড ৯ কোটিরও বেশি আগাম ভোট পড়েছে। ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউএস ইলেকশনস প্রজেক্ট এই তথ্য দিয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগাম ভোট পড়েছে ৯ কোটি ১০ লাখ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ভোটের জন্য নির্ধারিত তারিখের আগেই শনিবার পর্যন্ত এই বিপুল সংখ্যক মানুষের ভোট প্রয়োগের ঘটনা দেশটিতে এক শতকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশি ভোট পড়ার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এবারের আগাম ভোটের সংখ্যা মার্কিন জনগণের আগ্রহেরই প্রমাণ। শনিবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ আগাম ভোট পড়েছে, তা ২০১৬ সালের নির্বাচনে মোট ভোটের প্রায় ৬৫ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রে কর্মদিবসে নির্বাচন হওয়ার কারণে অনেক মানুষ চাকরি হারাবার ভয়ে সশরীরে ভোট দিতে পারেন না৷ কাজের সূত্রে দূরে থাকার কারণেও কারও কারও ভোট দিতে সমস্যা হয়। এমন সব মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে সেদেশে ডাকযোগে ব্যালট পাঠানোর সুযোগ রয়েছে। এ বছর করোনা সংকটের কারণেও বিপুল সংখ্যক ভোটার সেই সুযোগ গ্রহণ করছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
চার বছর আগে ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হিলারি ক্লিনটনের প্রেসিডেন্সির লড়াইয়ে ১৩ কোটি ৮০ লাখ ভোট পড়েছিল; এবার তা সহজেই ছাড়িয়ে যাবে বলেই অনুমান বিশেষজ্ঞদের। গতবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আগাম ভোট পড়েছিল মাত্র ৪ কোটি ৭০ লাখ। এবার এরইমধ্যে এ সংখ্যা ৯ কোটি ছাড়িয়েছে।
জনমত জরিপগুলোতে ট্রাম্পের চেয়ে বাইডেন প্রায় ১০ শতাংশ এগিয়ে আছেন। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ব্যবধান কম হওয়ায় রিপাবলিকান প্রার্থীর সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি।