প্রশ্নটা আগেও কয়েকবার উঠেছে। এবার নতুন করে আবার উঠছে। কারণ ফারাক্কা ব্যারেজে পানি কমতে কমতে প্রায় শুকিয়ে গেছে। তাই জোরালোভাবেই প্রশ্ন উঠছে- গঙ্গা, তুমি কার?
কোনও নদী কখনও কারও সম্পত্তি হতে পারে না। যেসব রাজ্য দিয়ে নদী বয়ে গেছে, তার পানি সেসব রাজ্য পাবে, তার পানিতে পুষ্ট হবে, সেটাই নিয়ম, সেটাই আদর্শ। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও তাই। কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রকৃতির দানের ফায়দা লুটে কিছু রাজ্য যদি গঙ্গার পানি পাওয়ার ব্যাপারে অন্যান্য রাজ্যকে বঞ্চিত করে, তা হলে কি বলা যেতে পারে? সে ক্ষেত্রে গঙ্গা ওই সব রাজ্যেরই কুক্ষিগত হয়ে যাবে, গঙ্গার উপর সবার সমান অধিকার থাকবে না। এই শুষ্ক মৌসুমে ফারাক্কায় গঙ্গার পানি কমা নিয়ে নদী বিশেষজ্ঞদের অভিমত ঠিক সে রকমই।
তারা বলছেন, গঙ্গার উজানের দিকের রাজ্যগুলো, অর্থাৎ উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড বলগাহীনভাবে কোনও নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে গঙ্গার বেশির ভাগ পানি টেনে নিচ্ছে। সরকার তাদের কোনওরকম নিয়ন্ত্রণ করেনি, করছেও না। ফলে ভাটির দিকের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চিত হচ্ছে এবং অবধারিতভাবে তার কুফল ভোগ করতে হচ্ছে বাংলাদেশকেও।
এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে ২০০০ সালের প্রবল বন্যার সময়ে রাজ্যের তদানীন্তন বিরোধী নেত্রী ও কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের রেলমন্ত্রী এবং বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ওই বন্যা যতটা না প্রাকৃতিক কারণে, তার চেয়েও বেশি রাজ্যের তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকারের নীতির ফলে, বিভিন্ন ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার কারণে। মমতার ভাষায় ‘ম্যান মেড বন্যা’।