X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

২৫ বছরের মধ্যে এবার বিশ্বে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হার সর্বোচ্চ

বিদেশ ডেস্ক
০৬ এপ্রিল ২০১৬, ১৪:৪৬আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০১৬, ১৫:০০
image

২৫ বছরের মধ্যে এবার বিশ্বে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হার সর্বোচ্চ ১৯৮৯ সালের পর যেকোনও বছরের চেয়ে ২০১৫ সালে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ২৫ বছরের রেকর্ড ভাঙার এই তথ্য। তবে চীনে কার্যকর হওয়া মৃত্যুদেণ্ডর সংখ্যা জানতে পারেনি অ্যামনেস্টি, পাশাপাশি কোনও কোনও দেশের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্য গোপন করারও অভিযোগ তুলেছে সংস্থাটি। সে সব ঘটনা বাদ দিয়েই ১,৬৩৪ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্য দিয়েছে তারা। এসবের ৯০ শতাংশই কার্যকর হয়েছে ইরান, পাকিস্তান ও সৌদি আরবে।  ২০১৫ সালে মৃত্যুদণ্ড প্রদানকারী দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। তবে  মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান শুরুর দিকে হলেও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৪তম স্থানে।
বুধবার অ্যামনেস্টির প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাপী অন্তত ১ হাজার ৬৩৪ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, যা ১৯৯০ সালের পর সর্বোচ্চ। তবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সত্যিকারের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। কেননা, এ তালিকায় চীনের সংখ্যাটি যোগ করা হয়নি। দেশটির সরকার এ তথ্য গোপন রাখায় এটি সম্ভব হয়নি। অ্যামনেস্টির ধারণা, ২০১৫ সালে দেশটিতে সহস্রাধিক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে এবং চীন বিশ্বের সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা দেশ। অ্যামনেস্টি জানায়, চীনের মতো ভিয়েতনাম সরকারও মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা গোপন করে থাকে। এছাড়া মালয়েশিয়া, লাওস ও সিঙ্গাপুরের কাছ থেকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা জানার ব্যাপারে অ্যামনেস্টি চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। 

২০১৫ সালে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরিমাণ বাড়লেও মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রদানের সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে কমেছে। এছাড়া ২০১৫ সালে এসে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বহাল রাখা দেশের সংখ্যা অতীতের যে কোনও সময়ের চেয়ে কমেছে। এ বছর বেশ কয়েকটি দেশ মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করেছে।

২০১৪ সালের চেয়ে ২০১৫ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হার ৫০ শতাংশেরও বেশি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। তবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে চীনের পরেই রয়েছে ইরান, পাকিস্তান ও সৌদি আরব। ২০১৫ সালে ইরান অন্তত ৯৭৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগকেই মাদক সংক্রান্ত অপরাধে সাজা দেওয়া হয়েছে।

২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ২৮ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে

গত বছর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে এমন ২৫টি দেশের নাম তালিকায় উল্লেখ করেছে অ্যামনেস্টি। আগের বছর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকারী দেশের তালিকার চেয়ে এবারের তালিকায় অতিরিক্ত তিনটি দেশের নাম যুক্ত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হার ১৯৯১ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন। গত বছর দেশটিতে ২৮ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তালিকায় দেশটির অবস্থান ৫ম। আর এর পর পরই রয়েছে ইরাক, সোমালিয়া, মিশর, ইন্দোনেশিয়া ও শাদ। গত বছর ইরাকে ২৬, সোমালিয়ায় ২৫, মিশরে ২২, ইন্দোনেশিয়ায় ১৪ এবং শাদে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

একই বছর পাকিস্তান অন্তত ৩২০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে যে সংখ্যক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে তার ৮৯ শতাংশই পাকিস্তানে হয়েছে। ২০১৫ সালে সৌদি আরবে অন্তত ১৫৮ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিধান পুনর্বহাল করা হয়

প্রতিবেদনে বলা হয়, মিশর ও সোমালিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হার বেড়ে গেছে। ২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেনি, অথচ ২০১৫ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রবণতা বেড়েছে এমন অন্তত ছয়টি দেশ শনাক্ত করেছে অ্যামনেস্টি। বেশ কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর গত বছর নতুন করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর শুরু করেছে শাদ ও ওমান। বাংলাদেশ, ভারত, দক্ষিণ সুদান ও ইন্দোনেশিয়ায় আগের বছর কারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না হলেও ২০১৫ সালে আবারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

অ্যামনেস্টি জানায়, ২০১৫ সালে বিশ্বের ৬১টি দেশে ১,৯৯৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে যা আগের বছরের চেয়ে কম। একইবছর বাংলাদেশে ১৯৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অ্যামনেস্টি জানায়, ২০১৪ সালে বিশ্বব্যাপী ২,৪৬৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

তবে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই এখন মৃত্যুদণ্ডের বিধান সম্পূর্ণভাবে রহিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে অ্যামনেস্টি। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালের শেষ নাগাদ সব ধরনের অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রহিতকারী দেশের সংখ্যা বেড়ে ১০২টিতে দাঁড়িয়েছে। ১৯৯৬ সালে এমন দেশের সংখ্যা ছিল ৬০টি। ফিজি, মাদাগাস্কার, কঙ্গো-ব্রাজাভিলে ও সুরিনাম ২০১৫ সালে এ ব্যাপারে তাদের আইন পরিবর্তন করেছে। মঙ্গোলিয়াও তাদের আইন পরিবর্তন করেছে, তবে তা কার্যকর হবে চলতি বছরের শেষদিকে। সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা, অ্যামনেস্টি

/এফইউ/বিএ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
নির্মোহ মূল্যায়নের খোঁজে জাসদ
নির্মোহ মূল্যায়নের খোঁজে জাসদ
সাফজয়ী ভাইয়ের সঙ্গে লড়াই, নেই কোনও ছাড়
সাফজয়ী ভাইয়ের সঙ্গে লড়াই, নেই কোনও ছাড়
বিয়ে না করানোয় মাকে হত্যা
বিয়ে না করানোয় মাকে হত্যা
ব্রাজিলের জার্সিতে এই বছরই শেষ মার্তার
ব্রাজিলের জার্সিতে এই বছরই শেষ মার্তার
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী