X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভ্রমণপিপাসুদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে চর শামছুদ্দিন

জুনাইদ আল হাবিব
০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:৫৭আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:৫৭

চর শামছুদ্দিন মেঘনার বুক চিরে জেগে ওঠা লক্ষ্মীপুরের রমণীমোহন দ্বীপের একটি অংশে ভ্রমণপিপাসুদের সমাগম দেখা যায়। এটাই চর শামছুদ্দিন। ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে চেপে এখানকার নয়নাভিরাম প্রকৃতি দেখার পাশাপাশি ভ্রমণপিপাসুরা দ্বীপের মানুষের জীবন ও রাখালের গরু-মহিষের বাথান চরানোর দৃশ্য উপভোগ করেন।

প্রায় দুই দশক আগে মেঘনার বুকে চরটি জেগে ওঠে। দ্বীপের খুব কাছেই জেলার কমলনগরের চর কালকিনির একটি গ্রামের নাম থেকে চর শামছুদ্দিনের নামকরণ হয়। মতিরহাটের কাছেই অবস্থিত বলে এটি ‘মতিরহাটের চর’ নামেই লোকমুখে পরিচিত।

ঈদ কিংবা বিভিন্ন উৎসব ছাড়াও এই দ্বীপে বিভিন্ন সময়ে পর্যটকদের পদচারণা লক্ষ্য করা যায়। দ্বীপে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির দেখা মেলে। বর্ষায় দ্বীপের প্রকৃতি হয়ে ওঠে অনিন্দ্যসুন্দর। তাই এ সময়টা বেশি উপভোগ্য। লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের প্রধান প্রফেসর মাহবুবে এলাহি সানি বলেন, ‘দ্বীপটিতে আমার বেশ কয়েকবারই যাওয়া হয়েছে। শুধু লক্ষ্মীপুর নয়, বৃহত্তর নোয়াখালীর মধ্যে এটি ভ্রমণপিপাসুদের অন্যতম তীর্থস্থান বলা চলে।’

চর শামছুদ্দিন ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে চর শামছুদ্দিন জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে দ্বীপের এপারে অর্থাৎ মতিরহাট মেঘনাতীরের ভূমিকা রয়েছে। বিশাল বেলাভূমি নিয়ে সৃষ্ট মতিরহাটে ঘুরতে জেলা ও বাইরে থেকে অসংখ্য ভ্রমণপিপাসুর উপস্থিতি চোখে পড়ে। এখান থেকে চর শামছুদ্দিনে পৌঁছাতে লাগে মাত্র ৫-১০ মিনিট। ফলে মতিরহাট মেঘনাতীরে ঘুরতে আসা বেশিরভাগ মানুষ দ্বীপের সৌন্দর্য দেখতে যান। মতিরহাট খেয়াঘাট থেকে দ্বীপে আসা-যাওয়ার খরচ জনপ্রতি মাত্র ৫০ টাকা। দলবেঁধে গেলে রিজার্ভে ট্রলার ভাড়া নেওয়া যায়।

শুরুতে এখানে মানুষের তেমন বসতি ছিল না। চারদিক থাকতো মরুভূমির মতো। বর্তমানে এই চরে ২৫টি পরিবারের চার শতাধিকেরও বেশি মানুষের বসবাস। বিভিন্ন স্থান থেকে নদীভাঙনে বাস্তুচ্যুত হয়ে এখানে বসতি স্থাপন করেছেন তারা। তাদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা দেড় শতাধিক।

চর শামছুদ্দিন দ্বীপে এখনও কোনও মসজিদ-মাদ্রাসা কিংবা স্কুল গড়ে ওঠেনি। বিশুদ্ধ পানির জন্য নেই কোনও নলকূপ। নদী বা খালের পানির বিকল্প নেই বাসিন্দাদের। গ্রীষ্মকালে ওপার থেকে খাবারের জন্য পানি আনা হয়। স্যানিটেশন ব্যবস্থাও সুবিধাজনক নয়। দুর্যোগ প্রতিরোধে এখনও গড়ে ওঠেনি সবুজ বলয়। দ্বীপের মানুষ গরু, ছাগল ও মহিষ বর্গায় লালন-পালনসহ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।

যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকার সুবাদেও ভ্রমণপিপাসুদের মধ্যে চর শামসুদ্দিনের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের সঙ্গে মতিরহাটের মেঘনার তীরে তাজা ইলিশ ভোজন ও মহিষের খাঁটি দধির স্বাদ নেওয়া যায়।

চর শামছুদ্দিনে ভ্রমণপিপাসুরা যেভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সড়কপথে বাসে অথবা সদরঘাট থেকে লঞ্চে চাঁদপুর হয়ে লক্ষ্মীপুর শহরের ঝুমুর স্টেশন আসতে হবে। তারপর লক্ষ্মীপুর-রামগতি আঞ্চলিক সড়কের যেকোনও গাড়িতে তোরাবগঞ্জ নেমে সেখান থেকে মতিরহাট সড়ক দিয়ে মেঘনাপাড়ে পৌঁছান। এরপর ট্রলারে চড়ে চর শামছুদ্দিনের নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করতে আসুন।

ছবি: লেখক

/জেএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বিএনপি গণতন্ত্রে অকার্যকর ডামি রাজনৈতিক দল: ওবায়দুল কাদের
বিএনপি গণতন্ত্রে অকার্যকর ডামি রাজনৈতিক দল: ওবায়দুল কাদের
চারতলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মাদ্রাসাছাত্রীর মৃত্যু
চারতলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মাদ্রাসাছাত্রীর মৃত্যু
বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী
এবার ঘুমটা ভালো হবে ডু প্লেসির
এবার ঘুমটা ভালো হবে ডু প্লেসির
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী