‘ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে--/ডালে ডালে ফুলে ফুলে পাতায় পাতায় রে,/ আড়ালে আড়ালে কোণে কোণে...’। আজ পহেলা ফাল্গুন। উন্মনা হাওয়ায় মনে দোলা লাগানো বসন্তের প্রথম দিন। প্রকৃতিতে তার ছোঁয়া সবখানে।
ক্যালেন্ডারের পাতা দেখে মনবসন্ত হয়তো জেগে উঠছে আজ, কিন্তু, ঋতুরাজকে বরণ করে নিতে প্রকৃতির প্রস্তুতি ছিল আরও আগে থেকেই। শীতের প্রকোপ কমে আসার ফাঁকেই খুব সঙ্গোপনে প্রকৃতিতে চলছিল রূপ বদলের খেলা। শীতে জর্জর গাছের পাতায় জেগেছে বাতাসের নাচন, পাতার ফাঁকে উঁকি দিয়েছে কুঁড়ি। আর বসন্তের ট্রেডমার্ক আবীর নিয়ে পলাশ-শিমুলেরা গড়ে তুলেছে স্নিগ্ধ রূপরাজ্য দেশময়।
নগরীর রমনা পার্ক, চন্দ্রিমা উদ্যান ও বোটানিক্যাল গার্ডেনে পলাশ ও শিমুল গাছের দিকে তাকালে দূর থেকে মনে হয় যেন আগুন লেগেছে শাখায় শাখায়। মাতাল হওয়ায় পলাশের লাল যেন আরও বেশি নজর কাড়ে।
তবে রাজধানীতে কৃষ্ণচূড়া এখনও অগণন থাকলেও পলাশের দেখা পাওয়া খুব একটা সহজও নয়। হাতিরঝিলে দেখা মেলে বেশ কয়েকটি পলাশ গাছের। এছাড়া রায়ের বাজার বেড়িবাঁধের কাছেও বেশ ক’টি পলাশ গাছ রয়েছে। পলাশ শুধুই বসন্তকে মনে করিয়ে দেয় না, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সেই অমর ঘটনাকেও মনে করিয়ে দেয়। পলাশের লাল যেন ডাকছে সূর্য সন্তানদের, আসছে একুশ।
সে আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরসহ এর আশেপাশে অনেক পলাশ ফুলের গাছ ছিল। কিন্তু, নগরায়নের চাপে এসব এলাকাতে কমে গেছে পলাশের সংখ্যা। শহরের সব প্রান্তে একের পর এক কাটা পড়ে হারিয়ে গেছে রক্তবর্ণ ফুলের গাছগুলো। অবশ্য নতুন করে কিছু লাগানো হয়েছে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও মিরপুর ডিওএইচএসে। তারই কিছু ছবি বাংলা ট্রিবিউনের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। ছবিগুলো শহীদ মিনার ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে তোলা হয়েছে।
ছবি: নাসিরুল ইসলাম
আরও পড়ুন-
ফাগুনের মোহনায় আজ বসন্ত