X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

অবশেষে শহীদ পরিবারে স্বস্তি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১১ মে ২০১৬, ০০:২৪আপডেট : ১১ মে ২০১৬, ০১:২০

নিজামী মানবতাবিরোধী অপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন একাত্তরে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধবিরোধী অ্যাক্টিভিস্টরা মনে করছেন, এর মধ্য দিয়ে দেশ কলঙ্ক মোচনের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে একাত্তরের আলবদর কমাণ্ডার নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের খবরে এমনই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তারা। সবাই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে দল হিসেবে জামায়াতের বিচারের দাবি জানান।
শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আব্দুল আলীমের স্ত্রী শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, ফাঁসির রায় শুনে খুশি হয়েছিলাম আর কার্যকরের খবর শুনে স্বস্তি পাচ্ছি। তিনি বলেন, যে নিষ্ঠুরতার সঙ্গে একাত্তরে এই আলবদররা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল তাদের ফাঁসিই একমাত্র শাস্তি। গত ৪৫ বছর ধরে আমরা শহীদ পরিবারের সদস্যরা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করেছি। এখন দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার দেখতে চাই।
শহীদ সন্তান তৌহিদ রেজা নূর বলেন, এ ধরনের অপরাধের বিচার কখনও তামাদি হয় না। একটা কথা নিশ্চিত, দায়মুক্তির ঘটনাগুলো ঘটছে এইসব রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে। আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারছি।
শহীদ সন্তান সাংবাদিক জাহীদ রেজা নূর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, তোমাদের যা বলার ছিল, বলছে কি তা বাংলাদেশ? বাবা, জেনে রাখো, তোমাকে আর তোমার সতীর্থদের যারা নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল তারা শাস্তি পাচ্ছে।তোমার চওড়া কপালের ভাজে আমি গোটা বাংলাদেশ দেখতে পাচ্ছি।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেন, একে একে শীর্ষস্থানীয় জামায়াত নেতার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার স্বস্তি হচ্ছে। কিন্তু এও ভাবতে হবে, জামায়াত একেবারে বন্ধুহীন হয়ে যায়নি। তারা আন্তর্জাতিকভাবে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত তৈরি করার কাজ করেই চলেছে। ফলে দল হিসেবে জামায়াতের বিচার হওয়া জরুরি। এ সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে কার্যক্রম বন্ধ না করা পর্যন্ত পূর্ণ স্বস্তি হবে না।

. গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, ইতিহাসের এই মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য দেশের ষোলো কোটি মানুষ অপেক্ষা করে ছিল। আলবদর নেতা, কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী, বুদ্ধিজীবী হত্যার নীল নকশা বাস্তবায়নকারী মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় বাস্তবায়নের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগুনো গেল। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতে ইসলামী বিচারবিভাগকে নিয়মিত বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ নিয়ে তারা মোটেই অনুতপ্ত নয়, এর প্রমাণ ফাঁসির রায় ঘোষণা ও বাস্তবায়নের পর ডাকা হরতাল।

মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ট্রাস্টের পরিচালক সাব্বির হোসাইন বলেন, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করার মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার ও মানবতার জয় হলো। একাত্তরে আল-বদর বাহিনীর মত নৃশংস বাহিনী গঠন ও নেতৃত্ব দিয়েছিল নিজামী। একাত্তরে এত ভয়ংকর মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের পরও জিয়া ও বিএনপির মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে পুনর্বাসিত হওয়াসহ মন্ত্রীত্ব পর্যন্ত পেয়েছিল; এই কাজটি ছিল একাত্তরের শহীদ ও বাংলাদেশের প্রতি চরম অবমাননা। তার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার মধ্য দিয়ে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের চার দশকের বিচারহীনতার অবসান হলো, আাইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলো।

ছবি: নাসিরুল ইসলাম

/ইউআই/এজে

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
এ বছর পুলিৎজার পেলো ৩ সংবাদমাধ্যম
এ বছর পুলিৎজার পেলো ৩ সংবাদমাধ্যম
মনজিল হত্যা: সৎমা-ভাইসহ ৬ জনের যুক্তিতর্ক অব্যাহত
মনজিল হত্যা: সৎমা-ভাইসহ ৬ জনের যুক্তিতর্ক অব্যাহত
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
টস হেরে ব্যাট করছে বাংলাদেশ
টস হেরে ব্যাট করছে বাংলাদেশ
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র