X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

গুলশান হামলা: আটকদের খোঁজ দেবে কে?

উদিসা ইসলাম
১৫ জুলাই ২০১৬, ১০:৪২আপডেট : ১৫ জুলাই ২০১৬, ১১:২৯

গুলশান হামলা

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় উদ্ধারের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকা চার জনের বিষয়ে সঠিক কোনও তথ্য মিলছে না। প্রশাসন বলছে, এর মধ্যে দুজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে  থাকলেও হাসনাত করিম ও তাহমিদ হাসিব খান তাদের কাছে নেই। যদিও এই দুজনের পরিবার বলছে, দুজনই পরিবারের কাছে আজও পৌঁছাননি। এদিকে, ঘটনার ১৪দিন পরও স্পষ্ট কোনও চিত্র না থাকায় তদন্ত বিষয়ে কেউই আপাতত মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না।

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর উদ্ধারকৃতদের মধ্যে চারজনকে সন্দেহের তালিকায় রেখে তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই চারজন হলেন, জাকিরুল ইসলাম, লাজরুস সারেন, কানাডাপ্রবাসী তাহমিদ হাসিব খান ও নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজাউল করিম। তাহমিদ ও আবুল হাসনাত উদ্ধার তৎপরতার মধ্য দিয়ে অন্যান্য জিম্মিদের সঙ্গে বেরিয়ে এলেও লাজরুস ও জাকিরুলকে কোন জায়গা থেকে কখন ধরা হয়েছে, তাদের আঘাত কেমন ছিল, সেসব নিয়েও একাধিক রকমের বক্তব্য পাওয়া যায়।

শুরুতে তাদের বিষয়ে কোনও তথ্য না পাওয়া গেলেও বর্তমানে তারা  ডিএমপির গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ (ডিবি) কার্যালয়ে আছে। বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। হলি আর্টিজান বেকারিতে গত ১ জুলাই হামলার ঘটনার পর ২ জুলাই সেনাবাহিনীর কমান্ডো অপারেশনের আগে-পরে যৌথবাহিনী যাদের উদ্ধার করেছে, তাদের মধ্যে লাজারুস ও জাকিরুল অন্যতম। আহত অবস্থায় তাদের প্রথমে ইউনাইটেড হাসপাতালে  ও পরে ৫ জুলাই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নেওয়া হয়। তবে তাদের সঙ্গে কেউ দেখা করতে পারেনি।

জাকিরুল নিজেকে হলি আর্টিজান বেকারির হোম ডেলিভারিম্যান হিসেবে এবং লাজারুস নিজেকে ওই রেস্টুরেন্টেরই ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। অনেকের প্রশ্ন লাজারুস একজন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হওয়ার পরও কিভাবে তাকে এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে মেলানো হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে পুলিশের কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

পুলিশের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে ঘটনার পর থেকেই জাকিরুলকে ব্যাপকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হয়। সারেন হাসপাতালে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি। বর্তমানে চারজনের ব্যাপারেই তদন্ত চলছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চারজনের মধ্যে এক বা একাধিক ব্যক্তি হামলার প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

১ জুলাই সন্ত্রাসী হামলার দিন দুই বাচ্চা এবং স্ত্রীকে নিয়ে হলি আর্টিজানে আটকা পড়েন ঢাকার নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম ও কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ তাহমিদ হাসিব খান। পরের দিন উদ্ধার তৎপরতার পর বের হয়ে আসা কয়েকজনের সঙ্গে এই দুজনকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

এরপর গোয়েন্দা হেফাজতে থাকার কথা নিশ্চিত করা হলেও গত ৭ জুলাই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হাসনাত ও তাহমিদ এখন তাদের হেফাজতে নেই। তবে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা বাড়ি ফেরেননি। এর বেশি কিছু তারা বলতে নারাজ। এছাড়া, সাংবাদিকদের সঙ্গে এই দুই পরিবারের কেউ এখন কথা বলতে চাইছেন না। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইতোমধ্যে এক বিবৃতিতে বলেছে, হাসনাত করিম কোথায়, কীভাবে আছেন, বাংলাদেশের সরকারি কর্তৃপক্ষকে তা নিশ্চিত হয়ে জানাতে হবে।

এদিকে, হাসনাত ও তাহমিদের পরিবারের সঙ্গে বৃহস্পতিবার যোগাযোগ করা হলে তারা  কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। হাসনাতের বাবা রেজাউল করীম বলেন, আমি কোনও স্টেটমেন্ট দেব না। ছেলে বাড়িতে ফিরেছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনও আমার ছেলে ফেরেনি, ছেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছেই আছে।

তাহমিদের বাবার মোবাইলে ফোন করা হলে জানানো হয়, তিনি অসুস্থ, চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হচ্ছে।

এদিকে, মামলাটি তদারককারী কর্মকর্তা ও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)-এর ভারপ্রাপ্ত উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কিছু জানতে হলে মিডিয়া বিভাগের সঙ্গে কথা বলুন। আমাদের মন্তব্য করতে নিষেধ আছে।

আরও পড়ুন: আইএস জঙ্গিদের গল্প পড়ানো হয় বরিশালের পিস স্কুল অ্যান্ড কলেজে!

/এমএনএইচ/আপ-এসটি

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা