X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে আবগারি শুল্ক না রাখার প্রস্তাব তথ্যমন্ত্রীর

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২২ জুন ২০১৭, ১৩:৪৭আপডেট : ২২ জুন ২০১৭, ১৫:০৬

সংসদে তথ্যমন্ত্রী

 

পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক  না রাখার প্রস্তাব করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এছাড়া বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে আরেক ধাপ এগোতে হলে দরকার হবে সুশাসন। সুশাসন থাকলে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বেড়ে যাবে। আর ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ বাড়লে, দেশের অর্থনীতি আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ সুশাসন নিশ্চিত করবে। এটা দুর্নীতি কমাবে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াবে।’

বৃহস্পতিবার ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেটে অনেক দুর্বলতা রয়েছে। ব্যাংকে লুটপাট অব্যাহত আছে। দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। আমরা যেখানে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছি। সেখানে দুর্নীতির সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। ব্যাংকের টাকা আত্মসাতকারীরা জামিনে মুক্তি পেয়ে ভি-চিহ্ন দেখিয়ে বেরিয়ে আসে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

এবারের বাজেট নিয়ে সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ ভ্যাট আইন, ব্যাংকে আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক ও সঞ্চয়পত্রের সুদের হার- এই তিনটি বিষয় নিয়ে সংসদে আলোচনা হচ্ছে। সবাই অর্থমন্ত্রীর দিকে তীর ছুড়ছেন। সবাই তকে দোষারোপ করছেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এই সংসদে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তিনি বাজেট উপস্থাপন করেছেন। আর যে তিনটি বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছে, এই তিনটি বিষয় নিয়ে তো বাজেট নয়।  এই বাজেটে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। সবাই আমরা ওই তিনটি বিষয় নিয়ে হৈ চৈ করছি। বাজেটের অন্যান্য বিষয় নিয়ে কোনও আলোচনাই করছি না।’

তিনি বলেন, ‘দিন বদলের ধারাবাকিতার এই বিশাল বাজেট জাতীয় সক্ষমতা ও যোগ্যতার পরিচয়, দেশের শক্তির বিষয়। কাজেই কেবল বাজেটকে তিনটি বিষয়ের ভিত্তিতে মাপা যাবে না।’

অর্থমন্ত্রীর সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে ইনু বলেন, ‘এক মুখে বলবেন চমৎকার সফল আর শক্তিশালী অর্থনীতি। আরেক মুখে বলবেন ব্যর্থ অর্থমন্ত্রী, এটা যায় না। দেশের অর্থনীতি সফল, আমাদের অর্থমন্ত্রীও সফল। আর অর্থনীতি সফল হলে আমাদের প্রধানমন্ত্রীও যোগ্য ও সফল প্রধানমন্ত্রী। দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে ধাববান। প্রধানমন্ত্রী মধ্যবিত্ত শ্রেণির মুখে যে হাসি ফুটিয়েছেন, তা তিনি রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই তিনি মধ্যবিত্তের কথা বিবেচনা করে আবগারি শুল্ক ও সঞ্চয়পত্রের সুদ হার পুনর্বিবেচনা করবেন এবং ৩০ জুন আমরা তা দেখতে পাবো।’

ইনু তার বক্তব্যে ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত না রাখার প্রস্তাব করেন। এতে মধ্য ও নিম্নবিত্তের মুখে হাসি অব্যাহত থাকবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দুইটি যুদ্ধ। এর একটি হচ্ছে রাজনৈতিক যুদ্ধ। এখানে জঙ্গি ও তার সঙ্গীকে ক্ষমতার বাইরে রাখা। আর অর্থনৈতিক যুদ্ধ হচ্ছে, দেশের সমৃদ্ধি অর্জনের যুদ্ধ। সমৃদ্ধি  অর্জনের যুদ্ধে জিততে বৈষম্য দূর করতে হবে।’

ভ্যাট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভ্যাট নিয়ে ঢালাওভাবে যে ব্ক্তব্য দেওয়া হচ্ছে, আমি তার সঙ্গে একমত নই। যারা ভ্যাট আইনের সমালোচনা করছেন তাদের মনে রাখতে হবে, এখানে প্রধানমন্ত্রী কিন্তু অনেক ছাড় দিয়েছেন। নিত্য প্রয়োজনীয় শত শত পণ্য ভ্যাট মুক্ত করা হয়েছে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে ভ্যাট পদ্ধতি পছন্দ করি না। কারণ, এটি ধনী আর গরিবকে একপাল্লায় দেখানো হয়। এতে সবাইকে সমানভাবে কাটে, গরিবরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য ভ্যাট পদ্ধতি বাদ দিয়ে গুড্স অ্যান্ড সেল্স ট্যাক্স আধুনিক বিশ্বে যেটা চলছে- জিএসপি পদ্ধতিতে রূপান্তর বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। রাজস্ব খাতকে ভ্যাটের ওপর নির্ভরশীল করে রাখাটাই অর্থনীতির জন্য বড় দুর্বলতা। এই দুর্বলতা কাটিয়ে তুলতে হবে। এটা কাটিয়ে তুলতে হলে করপোরেট করের বিষয়টি বিবেচনা করে করপোরেট করের নতুন আইন করতে হবে। প্রগতিশীল আয়কর নীতিটা জোরালোভাবে চালু করতে হবে। ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করতে হবে। এতে করের চুরি ও ফাঁকি ধরা পড়বে। ‘

ইনু তার বক্তব্যে  ভ্যাট আইন নিয়ে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য আইনটি এক বছর স্থগিত রেখে বুঝিয়ে শুনিয়ে আগামী বছর চালু করার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, ‘আমি বলব যদি বিভ্রান্তি দূর করতে সক্ষম না হওয়া যায়, তাহলে ৩০ তারিখে নতুন ভ্যাট আইনটি স্থগিত করুন।’

তিনি সংবাদপত্রের ওপর প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘সংবাদপত্র শিল্পের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট সঠিক হয়নি। গত কয়েক বছরে গণমাধ্যমের যে বিকাশ হয়েছে, এই ভ্যাট তাতে ধাক্কা দেবে। এই শিল্প হোঁচট খাবে। প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, অর্থমন্ত্রীকে বলতে সংবাদপত্র শিল্পের ওপর প্রস্তাবিত এই ভ্যাট প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য ।’

/ইএইচএস/ এপিএইচ/

আরও পড়ুন: 

চিত্র পাল্টে গেছে, সংসদে অর্থমন্ত্রীর পাশে তার সহকর্মীরা

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
ভোট গণনা প্রক্রিয়ায় কোনও পরিবর্তন হবে না: ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট
ভোট গণনা প্রক্রিয়ায় কোনও পরিবর্তন হবে না: ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত