ইতালি থেকে বাংলাদেশি শ্রমিকদের মরদেহ সরকারি খরচে দেশে আনার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের একটি দাবি বাস্তবায়িত হলো। গত কয়েক বছর ধরে ইতালি থেকে বিনামূল্যে বাংলাদেশিদের মরদেহ দেশে আনা যাচ্ছিল না। সর্বশেষ ২০১৪ সালের এপ্রিলে বিমানের শেষ ফ্লাইটে একজন বাংলাদেশির মরদেহ দেশে পাঠানো হয়। পরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-রোম রুটে ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আর বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে মরদেহ বিনা খরচে দেশে পাঠানো যায়নি।
এ সময়ে অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের বিভিন্ন কমিউনিটির সহযোগিতায় মরদেহ দেশে পাঠানো হচ্ছিল। এমন বাস্তবতায় ইতালিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আব্দুস সোবহান সিকদার বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ আগস্ট বিনা খরচে বাংলাদেশিদের মরদেহ স্বজনদের কাছে পাঠানোর অনুমোদন দেয় আওয়ামী লীগ সরকার।
সোমবার (১৪ আগস্ট) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত আব্দুস সোবহান জানান, বাংলাদেশ সরকারের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় ইতালি থেকে এখন মরদেহ বিনা খরচে পাঠানো হবে। এজন্য বাংলাদেশিদের প্রথমে এই সংস্থার সদস্য হতে হবে। ৪০ ইউরো ফি দিয়ে সংস্থার সদস্য ফরম সংগ্রহ করে সদস্য হতে হবে। তিনি আরও জানান,ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বছরে ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। নাপোলিসহ রোম দূতাবাসের আওতাধীন এলাকার জন্য ৫০ লাখ ও মিলান অঞ্চলের জন্য ২০ লাখ টাকা প্রাথমিকভাবে বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
এদিকে,যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশিদের লাশ বিনা খরচে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন প্রবাসীরা। যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত বাংলাভাষী পত্রিকার সম্পাদক অলি রহমান বলেন,‘ইতালি থেকে যদি সরকার এমন উদ্যোগ নিতে পারে,তবে যুক্তরাজ্য থেকেও সেটি সম্ভব। প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতদের সমন্বিত উদ্যোগ।’
এ ব্যাপারে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার সাংবাদিক নাদিম কাদির বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) ভোরে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘যুক্তরাজ্যে নতুন হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন দায়িত্ব নেওয়ার পরই এখানে বসবাসরত বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধাদের মরদেহ বিনা খরচে দেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেন। বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে এ উদ্যোগে সম্মতি দিয়েছে। সব প্রবাসীর ক্ষেত্রে এমন উদ্যোগ সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সিদ্বান্তের বিষয়।’
/এএম