নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ক্রমেই বাড়ছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট বাণিজ্য ছিল ১০ মিলিয়ন ডলার। যা গত অর্থবছরে চারগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ মিলিয়ন ডলারে। গত সপ্তাহে ঢাকায় বাংলাদেশ-নেপাল পররাষ্ট্র সচিবপর্যায়ের বৈঠকে এ তথ্য উঠে আসে। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন, বিশেষ করে বাণিজ্য বৃদ্ধি, কানেক্টিভিটি, বিদ্যুৎ খাতসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে দুই পক্ষ।
এ বিষয়ে নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে সামস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নেপালে বাণিজ্য বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা সে সুযোগ গ্রহণ করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে প্রাণ, আরএফএল, রহিমআফরোজসহ বিভিন্ন কোম্পানি সেখানে ব্যবসা করছে। হাতিল গত মার্চে তার শোরুম উদ্বোধন করেছে এবং তারা আশাব্যঞ্জক সাড়া পেয়েছে।’
বাংলাদেশ প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলারের পাট বা পাটজাত দ্রব্য নেপালে রফতানি করে। সেখানে ১১টি ওষুধ কোম্পানিও পণ্য রফতানি করছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে আমরা এখানে প্রতিবছর সিঙ্গেল কান্ট্রি ফেয়ার করছি, যা এখানে ভালো সাড়া ফেলেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি নিয়ে দুই দেশ আলোচনা করছে। আশা করা যায় এটি শিগগিরই সই করা সম্ভব হবে।
বিদ্যুৎ সহযোগিতা
রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে সামস বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের (বিবিআইএন) উদ্যোগে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। এখানে আমরা বিনিয়োগ করতে পারি বা তারা উৎপাদন করার পর আমরা সরাসরি কিনে নিতে পারি বা যৌথ বিনিয়োগও হতে পারে।’
নেপালের পরিকল্পনা হচ্ছে ২০২০ সাল নাগাদ এক হাজার ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। দেশটি বর্তমানে ৭৪টি প্রকল্পের সমীক্ষা জরিপ চালাচ্ছে। এছাড়া, ২৫ থেকে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১০টির মতো জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে বলে রাষ্ট্রদূত জানান।
কানেক্টিভিটি
মংলা, চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দর ব্যবহার করতে চায় নেপাল। এ বিষয়ে বাংলাদেশেরও আপত্তি নেই। বিবিআইএন সহযোগিতার আওতায় এটি করা সম্ভব বলে জানান রাষ্ট্রদূত।
বাংলাবান্ধায় স্থল কাস্টমস স্টেশন আছে এবং রোহানপুর-সিঙ্গাবাদ ও বিরল-রাধিকাপুর ট্রেন যোগাযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাবান্ধা থেকে নেপালের সীমান্ত শহর কাকড়ভিটার দূরত্ব প্রায় ৮০ কিলোমিটার। বাংলাদেশের পণ্য নেপালের ট্রাকে করে সেখানে পাঠানো সম্ভব।’
বন্যা পূর্বাভাস
নেপালের কাছে বাংলাদেশ তাদের নদী বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়েছে, যাতে বন্যার পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয়।
রাষ্ট্রদূত মাশফি বলেন, ‘আমরা সাতদিন আগেও যদি তাদের নদীর অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারি, তবে বন্যা মোকাবিলা করতে আমাদের আগাম প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হবে।’