X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদ ঘিরে জমজমাট নির্বাচনি রাজনীতি

পাভেল হায়দার চৌধুরী ও সালমান তারেক শাকিল
২১ আগস্ট ২০১৮, ০৭:০৩আপডেট : ২১ আগস্ট ২০১৮, ১১:২৫

রাজনৈতিক দল ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় দুটি উৎসবের একটি ঈদুল আজহা, কোরবানির ঈদ নামেও যা পরিচিত। ঈদের মতো বড় উৎসব সাধারণ মানুষের কাছে আনন্দের উপলক্ষ হলেও রাজনীতিকদের জন্য শুধু আনন্দ নয়, বরং জনসংযোগ ও প্রচারণার দিনও বটে। সাধারণত প্রতিটি উৎসবই রাজনীতিকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এবারের ঈদ ভিন্নমাত্রা এনেছে। এ বছরের শেষে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের প্রতিটি দল নেতাদের নিজ-নিজ সংসদীয় এলাকায় যেতে নির্দেশ দিয়েছে। বলা হয়েছে ভোটারদের ঘরে-ঘরে যেতে, দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে নির্বাচনের জন্য পূর্ণপ্রস্তুতি নিতে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী,  জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), ওয়ার্কাস পার্টিসহ প্রায় সবগুলো নিবন্ধিত দলই নেতাদের সংসদীয় এলাকায় যেতে বলেছে। একইসঙ্গে দরিদ্র পরিবারগুলোকে সহায়তা করার নির্দেশনাও রয়েছে।

দলগুলোর দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের ঈদে জনগণের কাছে সরকারের উন্নয়ন কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরতে নেতাদের নির্দেশ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির জনসংযোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টিও প্রধান্য পাচ্ছে। এদিকে দেশের বিভন্ন স্থানে দলীয়ভাবে কোরবানি দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত।

ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে এই ঈদে রাজনীতিকদের নিজ নিজ এলাকায় থাকতে নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকায় জরুরি কোনও কাজ না থাকলে এলাকায় চলে যেতে বলা হয়েছে নেতাদের। জানা গেছে, ২১ আগস্ট নির্ধারিত কর্মসূচি শেষ করে কেন্দ্রীয় সব নেতা এলাকায় চলে যাবেন। বর্তমান সংসদ সদস্য ও মনোনয়ন প্রত্যাশী যারা, তাদেরও এলাকায় যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে জানা যায়, এলাকায় গিয়ে পাড়া-মহল্লায় জনসংযোগ করা, উঠোন বৈঠক করা, মানুষের দরজায় যাওয়া এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটাতে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সবাইকে এলাকায় গিয়ে ঈদ করতে বলা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এলাকার জনগণের কাছে সরকারের উন্নয়ন প্রচারের নির্দেশ রয়েছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ‘ইতোমধ্যে অনেক নেতা এলাকায় চলে গেছেন। ঢাকায় ২১ আগস্টের কর্মসূচি শেষ করে বাকি নেতারাও চলে যাবেন। এবার ঢাকার চেয়ে সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা ঈদকে কেন্দ্র করে রাজনীতি জমজমাট করে তুলতে চাই আমরা। তাই এলাকামুখী আওয়ামী লীগ নেতারা।’

বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদে জনসংযোগের পাশাপাশি দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের আগামী দিনের আন্দোলনের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশনা জারি করেছে বিএনপি। দলটির নেতারা বলছেন, সাধারণ মানুষের চেয়ে রাজনৈতিক নেতাদের ঈদ একটু আলাদা। কারণ ঈদকে ঘিরে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাজনৈতিক নেতারা ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীদের বেশি কাছে যেতে পারেন। ফলে এবার বিএনপির নেতাদের ঈদের রাজনীতি হচ্ছে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে আন্দোলনে যাওয়ার যে দলীয় পরিকল্পনা রয়েছে নেতাকর্মীদের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া, যাতে তারা আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে। এছাড়া প্রার্থীরা ব্যক্তিগতভাবে তাদের নির্বাচনি প্রচারণাও তো চালাতে পারেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঈদ একটি ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসবের মধ্যে এক  রাজনীতিবিদের সঙ্গে অন্য রাজনীতিবিদের বেশি দেখা হবে এটাই স্বভাবিক। সেখানে তাদের মধ্যে রাজনৈতিক কথাবার্তা হবে এটাও স্বাভাবিক। একাদশ সংসদ নির্বাচন নয়, বিএনপির টার্গেট এখন খালেদা জিয়ার মুক্তি।’

জানা যায়, বিএনপির সিনিয়র নেতাদের একটি অংশ ঈদের দিন ঢাকায় অবস্থান করবেন। তারা সকালে জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর কারাবন্দি দলীয় চেয়ারম্যান খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করবেন। এর বাইরে অন্য নেতারা নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকায় ঈদ করবেন। যারা ঈদের দিন ঢাকায় থাকবে তারা ঈদের আগে বা পরে এলাকায় যাবেন।

ঈদকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে রংপুর চলে গেছেন জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ সিনিয়র কয়েকজন নেতা। এরশাদ ঈদের পর ঢাকায় ফিরবেন।

জাপার কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে ঈদের সামাজিক মূল্যায়ন হবে। নেতারা নিশ্চয়ই মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। কথা বলবেন। ঈদ মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের সমীকরণ সুন্দর করে।’

জামায়াতের ঢাকা মহানগরের একজন নেতা জানান, ‘ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে দায়িত্বশীলদের তত্ত্বাবধানে গরু কোরবানি দেওয়া হবে।’

বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি বলেন, ‘বরাবরই ঈদের সময় সবার সঙ্গে কথা কথা হয়। সাক্ষাৎ হয়। আর এবারের তাৎপর্য আরও বেশি। সামনে নির্বাচন, মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্য আছে।’

 

 

 

/এএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মেলায় এসেছেন চিত্রনায়িকা, দেখতে যাওয়ার পথে ব্যবসায়ী নিহত
মেলায় এসেছেন চিত্রনায়িকা, দেখতে যাওয়ার পথে ব্যবসায়ী নিহত
এ জে মোহাম্মদ আলীর সম্মানে বন্ধ থাকবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ
এ জে মোহাম্মদ আলীর সম্মানে বন্ধ থাকবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ
শিশুর ত্বকের যত্নে বাজারে এলো ‘সিওডিল বেবি ক্রিম’
শিশুর ত্বকের যত্নে বাজারে এলো ‘সিওডিল বেবি ক্রিম’
এই গরমে ক্রিকেট খেলা অমানবিক: সাকিব
এই গরমে ক্রিকেট খেলা অমানবিক: সাকিব
সর্বাধিক পঠিত
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি