X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আশরাফকে নিয়ে সংসদে আপ্লুত শেখ হাসিনা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
৩০ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:৫৫আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০১৯, ১৯:৪১

সংসদে প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে আবেগাক্রান্ত হয়ে যান সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ( ছবি:ফোকাস বাংলা)

জাতীয় সংসদে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংসদে আনীত শোকপ্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ‘পঁচাত্তরে ১৫ আগস্ট ভাইদের হারিয়ে যাদের কাছে পেয়েছিলাম, তাদের মধ্যে আশরাফ একজন। কামালের সঙ্গে তার খুবই বন্ধুত্ব ছিল। কামালের সঙ্গে রাজনীতি করতো বলে আমার কাছে তার আলাদা কদর ছিল। ছোট ভাই হিসেবে দেখতাম। যেকোনও সমস্যা হলেই আমার কাছে আসতো। কথা বলতো।’

পঁচাত্তর পরবর্তী ঘটনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৮০ সালে আমি লন্ডনে গিয়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ গড়ে তোলার কাজ করি। তখন আশরাফও আমার সঙ্গে ছিল। আমাকে বড় বোনের মতো জানতো। পঁচাত্তরে আমরা স্বজন হারিয়েছি, প্রত্যেকেরই খুব কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করতে হয়েছে। সততার সঙ্গে চললে পরে কষ্ট করতে হয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আশরাফ অত্যন্ত সৎ ছিল। তার রাজনৈতিক জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও মেধা ছিল। সব সময়ই পড়াশুনোর মধ্যে থাকতো। বিশ্বের কোথায় কী হচ্ছে তার সব খবর সে রাখতো। আমিই তাকে লন্ডন থেকে এখানে নিয়ে এসে নির্বাচন করাই। তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রে খুবই সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।’

ওয়ান ইলেভেনে সৈয়দ আশরাফের ভূমিকা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জরুরি অবস্থার সময়ে দলের দুঃসময়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছিল। সেই সময় সে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে। আজকে যে গণতন্ত্র ফিরিয়ে পেয়েছি, এজন্য তার অবদান রয়েছে। আমি ভাবতে পারেনি এত তাড়াতাড়ি আশরাফ আমাদের ছেড়ে চলে যাবে। অনেক স্মৃতি আমার মনে পড়ে। লন্ডনে এমন একটা অবস্থার মধ্যে থাকতো কখনও এমনও অবস্থা গেছে, হয়তো খাবারের পয়সাও ছিল না। লন্ডনে কাজ করতো আর সেইসঙ্গে রাজনীতিও করতো।’

লন্ডনে আশরাফের অনেক কষ্টে দিন কেটেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘আমি যখন লন্ডনে রেহানার বাসায়, একদিন সে ফোন দেয়, ‘আপা, অনেকদিন বাড়ির রান্না খাই না।’ আমি বললাম, ‘চলে আসো।’ এতই সোজা-সরল ছিল যে, বললো আসবো তো ট্রেনের ভাড়া তো নেই। আমি বললাম, তুমি যেকোনওভাবে আসো, আমি ব্যবস্থা করবো। বড় বোনের কাছে যেভাবে আবদার করে, সেইভাবেই আবদার করতো আমার কাছে। ১৯৮১ সালে যখন ফিরে আসি, তখন সে খুবই বিপদগ্রস্ত ছিল। খুবই কষ্টের মধ্যে তার চলতে হতো।’’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার চিকিৎসাসহ যা কিছু প্রয়োজন, তা দেখেছি। মন্ত্রী হিসেবে চিকিৎসার খরচ যা দরকার, তা দিতে পেরেছি। তার স্ত্রী যখন অসুস্থ ছিল তখনও খোঁজখবর রেখেছি। সব থেকে দুঃখজনক যে, স্ত্রী শিলা মারা গেলো। তার কিছু দিন পরে আশরাফও মারা গেলো। একটি মেয়ে লন্ডনে আছে। সে সেখানে চাকরি করে, তার প্রতি সমবেদনা জানাই। তার ভাই-বোনদের প্রতিও সমবেদনা জানাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আশরাফের মতো একজন ট্যালেন্ট মানুষকে হারানো দলের জন্য ও দেশের জন্য সত্যি ক্ষতিকর। ক্যান্সার তাকে আমাদের থেকে কেড়ে নিয়ে গেলো।’

 

/ইএইচএস/এনআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা