X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ছুটির দিন সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন না

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:৪৩আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:৪৬

বিএসআরএফ আয়োজিত সংলাপে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম

পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম জানিয়েছেন,  সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে তিনি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন না।  বাসার গাড়িই ব্যবহার করেন। রবিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান উপমন্ত্রী। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে।

সভায় অতিথি হিসেবে বক্তৃতা রাখার সময় উপমন্ত্রী তার মন্ত্রণালয়ের কর্ম পরিধি এবং মন্ত্রী হিসেবে তাদের কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি বর্ষাকে সামনে রেখে নদী ভাঙনের হাত থেকে কীভাবে রক্ষা করা যায়। আমরা ভাঙন কবলিত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে এরপর পরিদর্শন করছি। প্রতিমন্ত্রী যাচ্ছেন ও সচিব সাহেব এলাকা পরিদর্শন করছেন। জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা করতে হাওর এলাকায় কাজ করা হচ্ছে বর্ষাকে সামনে রেখে।’

এনামুল হক শামীম বলেন, ‘নোয়াখালীর নদী ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখে আসার পর ৮৮ কোটি টাকার একটা প্রকল্প  অনুমোদনের ব্যবস্থা করেছি। বর্ষার আগে জিও ব্যাগ ফেলে যাতে নদী ভাঙন রক্ষা করা যায় সেজন্য সেখানে একটা প্রকল্প হাতে নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা নারায়ণগঞ্জের ডিএনডি এলাকায় গিয়েছিলাম, আমরা টার্গেট দিয়েছি ১৩টি পাম্প হাউজ ৩০ এপ্রিলের মধ্যে চালু হবে। এটা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ৫৮৮ কোটি টাকার কাজ চলছে। হাতির ঝিলের আদলে সেখানে একটা প্রকল্প আমরা দেখে এসেছি।’

হাওরে বাঁধ নির্মাণ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির কথা শোনা যায়- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এনামুল হক বলেন, ‘আমরা আগে রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করছি।’

এসময় কথা প্রসঙ্গে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী জানান,  সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন না। তিনি বলেন, উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি শুক্র ও শনিবার কোনও সরকারি গাড়ি ব্যবহার করি না। আমি নিজের একটি প্রাইভেট কার আছে সেটি ব্যবহার করি। উপমন্ত্রী হিসেবে আমার দুটি গাড়ি পাওয়ার কথা, আমার একটি গাড়ি হলেই চলে। সেটিও আমাকে পিক অ্যান্ড ড্রপ দেয়। সচিবালয়ে আসি এবং নিয়ে যায়, তারপর বাসার গাড়িই ব্যবহার করি।’

তিনি একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকও। সঙ্গত কারণে রাজনীতির বিভিন্ন বিষয়ও উঠে আসে আলোচনায়। এসময় উপজেলা নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, দলের সাধারণ সম্পাদক এ সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রত্যেকটি উপজেলার তৃণমূলের নেতারা ঐক্যমতের ভিত্তিতে একক অথবা অনধিক তিন প্রার্থীর নাম দেবেন। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড সবদিক বিবেচনা করে, ত্যাগ মেধা যোগ্যতা বিবেচনায় নিয়ে মনোনয়ন দেবে। কারণ বোর্ডের নেতা প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক উপজেলার ত্যাগী-মেধাবী সবাইকেই চেনেন।’

তিনি বলেন, ‘আশা করি সংসদ নির্বাচনের মতো বিএনপি উপজেলা নির্বাচন অংশ গ্রহণ করবে। নির্বাচনে অংশ না নিলে তারা জনগণ থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।’

প্রধানমন্ত্রীর চা চক্রে ঐক্যফন্টের যোগ না দেওয়ার বিষয়ে উপমন্ত্রী বলেন, ‘অসৌজন্যমূলক আচরণ করা বিএনপির স্বভাব। প্রধানমন্ত্রীর নিমন্ত্রণে যাননি এটা নিঃসন্দেহে অসৌজন্যমূলক আচরণ।’

ভারত-বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক ২০১০ সালের পর আর হয়নি—এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি জানলাম, মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকটি কত দ্রুততার সঙ্গে করা যায় সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নেবো। এটার সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা আছে।’

তিস্তা চুক্তির সর্বশেষ অবস্থার বিষয়ে উপমন্ত্রী বলেন, ‘তিস্তা চুক্তির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে রয়েছে...এটাও দ্বিপাক্ষিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের পর্যায়ে রয়েছে। আমি আশা করি বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণ করে এই চুক্তিটি খুব দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি যেহেতু আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সেহেতু  আমার কাছে অনেক মেহমান আসবে। আমি বলেছি, মন্ত্রণালয় থেকে কোনও চা খাওয়ানোর ব্যবস্থা নেই।’

পানিসম্পদ উপমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি একটি বিষয় দেখেছি যে আমাদের নামে অনেকে উপমন্ত্রী সেজে বিভিন্ন জনকে ফোন দিচ্ছে। এর মধ্যে মানিকগঞ্জের ডিসিকে এনামুল হক শামীম পরিচয়ে ফোন দিয়েছে একজন। ঘটনাচক্রে সে (ডিসি) আমার পরিচিত, আপনি করে বলায় সে একটু বিব্রত হয়েছে। কারণ, তাকে আমি আগে থেকেই ‘তুমি’ সম্বোধন করি।  এতে সন্দেহ হওয়ায় আমার পিএস সাহেবকে তিনি (ডিসি) ফোন করে জেনে নিয়েছেন যে আমি তাকে ফোন করেছিলাম কিনা।’

‘আমরা তাকে (উপমন্ত্রী পরিচয়ে ফোন দেয়া ব্যক্তিকে) ধরে ফেলেছি। একটি তদবিরের জন্য তিনি এটি করেছিলেন। এরকম আরও দু’একটি ঘটনা শোনা যাচ্ছে।’

উপমন্ত্রী বলেন, ‘৭ তারিখে (৭ জানুয়ারি) আমি শপথ নিয়েছি, ৮ তারিখে মন্ত্রণালয়ে এসেছি। আমি প্রাথমিকভাবে জেনেছি ৯৪টি প্রকল্প এখন চলছে। ৫ হাজার ৪২৩ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা এখানে বরাদ্দ রয়েছে। আগামী জুনে ২৯টি প্রকল্প সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত।’

ফোরামের সভাপতি শ্যামল সরকারের সভাপতিত্বে সংলাপ অনুষ্ঠানে সাধারণ সম্পাদক মহসীন আশরাফ উপস্থিত ছিলেন।

/এসআই/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আওয়ামী লীগ এখন শূন্য মুড়ির টিন: রিজভী
আওয়ামী লীগ এখন শূন্য মুড়ির টিন: রিজভী
বজ্রাঘাতে ৮ জেলায় ১০ জনের মৃত্যু
বজ্রাঘাতে ৮ জেলায় ১০ জনের মৃত্যু
ভিত্তিপ্রস্তরের ১৪ বছর পর চট্টগ্রাম নগর ভবন নির্মাণকাজের উদ্বোধন
ভিত্তিপ্রস্তরের ১৪ বছর পর চট্টগ্রাম নগর ভবন নির্মাণকাজের উদ্বোধন
লোকসভা নির্বাচন: তৃতীয় ধাপের ভোটে হেভিওয়েট প্রার্থী যারা
লোকসভা নির্বাচন: তৃতীয় ধাপের ভোটে হেভিওয়েট প্রার্থী যারা
সর্বাধিক পঠিত
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র