X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এফ আর টাওয়ার: একই স্মারকে ১৮ ও ২৩ তলার অনুমোদন?

শাহেদ শফিক
০২ এপ্রিল ২০১৯, ০০:৪১আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৫৪

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বনানীর এফ আর টাওয়ারের নকশায় ভয়াবহ অনিয়ম পেয়েছে তদন্ত কমিটি

আগুনে মারাত্মক ক্ষতি হওয়া বনানীর এফ আর টাওয়ারের নকশার নথি নিয়ে ভয়াবহ অনিয়মের চিত্র বেরিয়ে এসেছে। এরই মধ্যে ভবনটির দুটি নকশার বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। নকশা দুটির নথি একই দিনে একই স্মারক ও একই অথরাইজড অফিসারের স্বাক্ষরে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এমন ঘটনা কী করে ঘটল তা নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।  বিষয়টি তদন্তে কাজ শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটি। কমিটির একটি সূত্র বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করে।

ওই ভবনের ডেভেলপার কোম্পানির দাবি, তাদের কাছে ২৩ তলা পর্যন্ত রাজউক অনুমোদিত বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। অপরদিকে ভূমি মালিক ও রাজউক বলছে, ভবনটির ১৮ তলা পর্যন্ত অনুমোদন রয়েছে। বাকি ৫টি ফ্লোর অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে।

ডেভেলপার কোম্পানির একটি নথিতে দেখা গেছে, ২০০৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর রূপায়ণ হাউজিং এস্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লিয়াকত আলী খান মুকুলের অনুকূলে ভবনটির নকশা অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়। পরের বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজউকের ৪৪তম বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন (বিসি) কমিটি ৮ দশমিক ৮ কাঠা জমির ওপর বাণিজ্যিকভাবে ২টি বেজমেন্ট ও ২৩ তলা ইমারত নির্মাণের অনুমোদন দেয়। অনুমোদন পাওয়ার পর রাজউকের তৎকালীন অথরাইজড অফিসার বদিউজ্জামান একই বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি দুটি বেজমেন্ট ও ২৩ তলা ইমারত নির্মাণের অনুমোদনের নথিতে স্বাক্ষর করেন। পরের দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজউক/নঅঅজ৩সি-১৫২৪/৪/২৭১/২৩/২/০৫ স্মারকে অনুমোদনের চিঠিটি ইস্যু করেন তিনি।

অপরদিকে, একই স্মারক ও একই তারিখে ২টি বেজমেন্টসহ ১৮ তলা ভবন নির্মাণের জন্য একই কর্মকর্তার স্বাক্ষরে ইস্যু করা আরও একটি নথি পেয়েছে রাউজক। যদিও নথিতে কর্মকর্তার নাম ও স্বাক্ষর অনেকটা অস্পষ্ট। ফলে বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। দুটি নথি নিয়েই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কমিটি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে বদিউজ্জামান বর্তমানে কোথায় আছেন, তিনি সরকারি চাকরিতে আছেন কিনা সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি।

ভবনটির ভূমি মালিক এসএমএইচ আই ফারুকের ম্যানেজার কামাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, প্রথমে স্যার (ফারুক) ১৮ তলা ভবন নির্মাণের জন্য রূপায়ণের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। তাতে ভূমি মালিকের ৪৫ ভাগ ও ভবন মালিকের ৫৫ ভাগ নির্ধারণ করা হয়। পরে রূপায়ণ ২৩ তলা করার জন্য স্যারকে একটি প্রপোজাল দেন। কিন্তু স্যার সেই প্রস্তাবপত্রে স্বাক্ষর করেননি। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, রাজউক থেকে যদি সঠিক নিয়মে অনুমোদন পাওয়া যায় তাহলে তিনি রাজি আছেন। কিন্তু তারা (ডেভেলপার) প্রপার ওয়েতে (সঠিক নিয়মে) রাজি হয়নি। ভূমি মালিকের অনুমোদন ছাড়াই তারা বাকি ভবন নির্মাণ করেছে। এই অনিয়মের বিষয়গুলো স্যার রাজউককেও একাধিক চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন।

এদিকে এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর রাজউক চেয়ারম্যান এবং গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছিলেন, ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ১৮ তলা ভবন অনুমোদনের জন্য এফ আর টাওয়ারের নকশায় অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু ভবন মালিক ২০০৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আমাদের কাছে আরও একটি নকশা পেশ করেন। আমরা খবর নিয়ে দেখি, রাজউকে যে নকশা সংরক্ষিত আছে তার সঙ্গে সেটির মিল নেই। পরে সেই ঘটনায় ২০০৭ সালের দিকে তদন্ত করে রাজউক। তদন্তে দেখা গেছে, ভবনটি মূল নকশার ব্যত্যয় ও বিচ্যুতি ঘটিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।

তবে বিষয়টি নিয়ে জানার জন্য রাজউক চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

 

 

/টিএন/এমএমজে
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
টিভিতে আজকের খেলা (২৬ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২৬ এপ্রিল, ২০২৪)
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত যুবলীগ নেতা
দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত যুবলীগ নেতা
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ