X
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর সমান্তরালে কামাল মজুমদার!

জাকিয়া আহমেদ
১৭ এপ্রিল ২০১৬, ১৪:১৮আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০১৬, ১৪:৩৯

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির সমান্তরালে নিজের প্রতিকৃতি আঁকিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মুখোমুখি এখন মিরপুরের সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার। তার প্রতিষ্ঠিত মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের মূল বালক শাখার প্রধান ফটকের দু’পাশে আঁকা এ ছবি দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিকসহ নানা পেশার মানুষ।এ বিষয়ে কামাল মজুমদারের কাছে জানতে চাইলে সন্তোষজনক কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সমান্তরালে কামাল মজুমদারের ছবি

সরেজমিনে দেখা গেছে, মিরপুরে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের মূল বালক শাখার বিশাল স্কুল ভবন। স্কুলের ঝকঝকে প্রধান গেইটের দু’পাশে শোভা পাচ্ছে দু’জন মানুষের প্রতিকৃতি। বাম পাশে আঁকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি, এর ঠিক সমান্তরালে ডান পাশে আঁকা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা কামাল আহমেদ মজুমদারের ছবি।

মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গেইটের এই ছবিটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল ছবিটি নিজের ওয়ালে শেয়ার করে লিখেছেন,‘জাতির জনকের প্রতিকৃতির সমান্তরালে একজন সম্মানিত সংসদ সদস্যের নিজের ছবি স্থাপন কি এতটাই জরুরি? আমি নিশ্চিত, বঙ্গবন্ধুর প্রতি সম্মানিত সংসদ সদস্যের কোনও অশ্রদ্ধা নেই। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিনীত অনুরোধ, যে কোনও একটি প্রতিকৃতিই রাখুন। জাতির জনকের সমান্তরালে আরেকটি ছবির অবস্থান গ্রহণ করতে পারছি না।’

মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলের এই পোস্টের পর বিষয়টি নিয়ে আরও তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।এখানে মোজাহিদুর রহমান নামের একজন লিখেছেন,‘এগুলো বড় ধান্দাবাজ। আর স্কুলের সামনে বঙ্গবন্ধুর ছবি রাখার কী দরকার? তার ছবি আছে বাঙালির মনে। দল না করলেও বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসে না এমন মানুষ খুব কম আছে। কিন্তু উনাকে নিয়ে অতি প্রচার একটা রোগে পরিণত হয়েছে। সব জায়গায় এখন চলছে বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে ধান্দাবাজি। এগুলো নিয়ে কথা বললে আবার জামায়াত-বিএনপি হয়ে যেতে পারেন।’

‘এ কাজটি যে বা যারা করেছেন,আমি নিশ্চিত তারা সুযোগ সন্ধানী এবং তারা নিজস্ব স্বার্থে এমপিকে ব্যবহার করছেন,’ লিখেছেন প্রিন্স সদারুজ্জামান। তিনি আরও লিখেছেন,‘সংসদ সদস্য যদি বিষয়টি অবগত থাকেন, তবে তার বোঝা উচিত বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির স্রষ্টা,আর তিনি শুধুই একজন পার্লামেন্ট মেম্বার। ভুলটা যারই হোক অবিলম্বে সংশোধন প্রয়োজন, কারণ জাতির জনকের অবমাননা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।’

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারের সঙ্গে ফোনে কথা হয় বাংলা ট্রিবিউনের এই প্রতিবেদকের। মনিপুর স্কুলের প্রধান ফটকে বঙ্গবন্ধুর সমান্তরালে আপনার ছবি কেন জানতে চাইলে কামাল মজুমদার প্রথমে বলেন,‘সমান্তরালে ছবি রাখা হয়নি, বঙ্গবন্ধু ফাদার অব দ্য নেশন, সে কারণে ওখানে বঙ্গবন্ধুর ছবি রাখা হয়েছে। আর আমি স্কুলের ফাউন্ডার। সে হিসেবে আমার ছবি রাখা হয়েছে।’

কিন্তু, দুটো ছবি একই সমান্তরালে রাখা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘এখানে সমান্তরাল হয়নি,বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার তুলনা হয় নাকি?’

বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তুলনা হয় না বলেই বিনীতভাবে জানতে চাইছি যে, ছবি দু’টি কেনও এভাবে সমান্তরালে আঁকা হলো? জবাবে  তিনি বলেন,‘আমার তো মনে হয় আপনি ভুল করছেন। ছবি দু’টো একটু আপ অ্যান্ড ডাউন আছে।’

আরও পড়তে পারেন:

খালেদা জিয়ার মামলার পরবর্তী শুনানি ২৫ এপ্রিল

 

কিন্তু আমরা দেখেছি ছবি দু’টো একই সমান্তরালে আঁকা। এর জবাবে তিনি বলেন, ‘এটাতো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করেছে।’

সেখানে আপনার কোনও মনিটরিং ছিল না জানতে চাইলে কামাল মজুমদার বলেন,‘এখানে মনিটরিংয়ের কী আছে, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার তুলনা হয় নাকি? বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধুই।’

তাহলে এভাবে ছবি আঁকার ক্ষেত্রে আপনি আপত্তি করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ছবি বঙ্গবন্ধু হিসেবে গেছে। আর আমার ছবি গেছে প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে।এখানে কথা বলার কোনও সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না। তারপরেও বিষয়টা আমি দেখবো এবং ব্যবস্থা নেবো।’

/এমএসএম/টিএন/

আরও পড়তে পারেন:

সজীব ওয়াজেদ জয় আমি অপরাধী বা খারাপ মানুষ নই: জয়

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বিকল্প অর্থনীতি ও গ্রাম্য কায়কারবার
উপন্যাসবিকল্প অর্থনীতি ও গ্রাম্য কায়কারবার
ভাসমান বন্দর হয়ে গাজায় ত্রাণ পৌঁছানো শুরু
ভাসমান বন্দর হয়ে গাজায় ত্রাণ পৌঁছানো শুরু
বার্সা-মেসির চুক্তির ন্যাপকিন পেপার নিলামে বিক্রি হয়েছে ১১ কোটি টাকায়
বার্সা-মেসির চুক্তির ন্যাপকিন পেপার নিলামে বিক্রি হয়েছে ১১ কোটি টাকায়
গতিশীল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাদুঘরে ‘শিক্ষার্থী’ কোথায়?
গতিশীল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাদুঘরে ‘শিক্ষার্থী’ কোথায়?
সর্বাধিক পঠিত
অতিরিক্ত ডিআইজি মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ ইসির
অতিরিক্ত ডিআইজি মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ ইসির
ত্বক তারুণ্যদীপ্ত দেখানোর ৮ টিপস 
ত্বক তারুণ্যদীপ্ত দেখানোর ৮ টিপস 
যাত্রীর জামাকাপড় পুড়িয়ে পাওয়া গেলো সাড়ে চার কোটি টাকার স্বর্ণ
যাত্রীর জামাকাপড় পুড়িয়ে পাওয়া গেলো সাড়ে চার কোটি টাকার স্বর্ণ
কাশ্মির সীমান্তের দুই দিকে বিপরীত দুই দৃশ্য
কাশ্মির সীমান্তের দুই দিকে বিপরীত দুই দৃশ্য
ইসরায়েলগামী অস্ত্রের জাহাজ নোঙর করতে দেয়নি স্পেন
ইসরায়েলগামী অস্ত্রের জাহাজ নোঙর করতে দেয়নি স্পেন