X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১
সাক্ষাৎকারে ছাত্রলীগ সভাপতি

ছাত্রলীগ করতে হলে নিয়মিত ছাত্র হতে হবে

এমরান হোসাইন শেখ ও পাভেল হায়দার চৌধুরী
০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৭:৫৯আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ২২:৪৩


বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদকের সঙ্গে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি জরুরি বলে মত দিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। তার মতে, ‘শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোতে রাজনীতি উন্মুক্ত না থাকায় শিক্ষার্থীরা বিপথে যাচ্ছে; জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। রাজনীতি উন্মুক্ত থাকলে শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের কোনও সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবে। তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনও রাজনীতি এদেশে থাকতে পারে না। এ লক্ষ্য নিয়েই সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ রাজনীতি চালু করতে চায়। তবে সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-রাজনীতি শুরুর আগে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া এ ছাত্রনেতা ছাত্রলীগের অতীত, বতর্মান ও ভবিষ্যৎ রাজনীতি নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে বসে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতি করবেন তারাই, যারা ছাত্র, বয়স সর্বোচ্চ ২৯ এবং অবিবাহিত। এর বাইরে কেউ ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে পারবেন না। তার সাক্ষাৎকারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:

বাংলা ট্রিবিউন: রাজনীতিমুক্ত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি ঝুঁকে থাকেন। সেখানে রাজনীতি শুরু হলে প্রতিষ্ঠানের ওপর নেতিবাচক কোনও প্রভাব পড়বে কিনা?

সাইফুর রহমান সোহাগ: রাজনীতি করার সুযোগ সবার থাকা উচিত। সংগঠন করা সবার মৌলিক অধিকার। কোনও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান কাউকে এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে না। আর কোনও ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ করলে তার পড়াশোনা বিঘ্নিত হয়, এটাও আমি মনে করি না। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সংগঠন ও লেখাপড়া একই সঙ্গে চালাতে পারলে বেসরকারিগুলোতে সম্ভব নয় কেন? এখানে নেতিবাচক প্রভাবের কথা চিন্তা করার কোনও সুযোগ নেই।

বাংলা ট্রিবিউন: তাহলে কোন ধরনের রাজনীতির কথা বলছেন?

সাইফুর রহমান সোহাগ: একটি প্রতিষ্ঠানে যেসব শিক্ষার্থী থাকবে, তারা চাইলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার যেকোনও সংগঠনে সম্পৃক্ত হতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনও রাজনীতি এদেশে থাকতে পারে না এবং থাকবে না।

বাংলা ট্রিবিউন: কোনও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাদের প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি না চাইলে ছাত্রলীগের অবস্থান কী হবে?

সাইফুর রহমান সোহাগ: এ বিষয়ে ছাত্রলীগের বক্তব্য স্পষ্ট। কর্তৃপক্ষের চাওয়া না-চাওয়ার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। কেননা কর্তৃপক্ষ চলবে ছাত্রদের দ্বারা। ওই প্রতিষ্ঠান চলে ছাত্রদের জন্য। তারপরও আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলব। কোনও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজনীতি করতে চাইলে কর্তৃপক্ষ সেটাকে কী করে নিবৃত্ত করবেন! স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই রাজনীতিতে যুক্ত হবে। বাইরে থেকে কেউ কিন্তু ‍ওই প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি করবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা কিন্তু নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে রাজনীতি করবে না। নর্থ সাউথের ছাত্ররাই সেখানে রাজনীতি করবে। কাজেই ছাত্ররা চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মনে হয় না বাধা দেওয়ার কোনও সামর্থ্য থাকবে। আর রাজনীতি করার অধিকার সবার রয়েছে। কেউ রাজনীতির মাধ্যমে নিজের ও দেশের সম্পর্কে জানতে চাইলে আটকাবে কেন? বেসরকারি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আহ্বান হলো, আপনাদের সন্তানরা রাজনীতি করতে চায়; তাদের বঞ্চিত করবেন না।

বাংলা ট্রিবিউন: রাজনীতির কারণে কোনও শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিলে ছাত্রলীগের অবস্থান কী হবে?

সাইফুর রহমান সোহাগ: কোনও কর্তৃপক্ষ এ ধরনের অন্যায় ব্যবস্থা নিলে ছাত্রলীগ অবশ্যই শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াবে। বঙ্গবন্ধুর গড়া সংগঠন ছাত্রলীগের আদর্শ ধারণ করতে গিয়ে যদি বিপদে পড়ে, তার পাশে ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মী থাকবেন।

বাংলা ট্রিবিউন: সম্প্রতি যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি দেওয়া হয়েছে, সেগুলোতে পদপদবি পাওয়া নেতারা ইতোমধ্যে ক্যাম্পাস এলাকায় টেন্ডারবাজিসহ অনেক অবৈধ সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। এদের ক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা?

সাইফুর রহমান সোহাগ: টেন্ডার-বাণিজ্য বলেন আর ভর্তি-বাণিজ্য বলেন, ছাত্রলীগের কোনও নেতাকর্মী এর মধ্যে যায় না। আর আপনি যাদের কথা বলছেন, যে কমিটির কথা বলছেন, এর পুরোটাই অবৈধ কমিটি। এগুলো বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অনুমোদিত কমিটি নয়। যারা নিজেদের নেতা দাবি করে, তারা আদৌ ছাত্রলীগ করে কিনা, সন্দেহ আছে। তারপরও এ ধরনের অভিযোগ আসলে খতিয়ে দেখব, ব্যবস্থা নেব।

বাংলা ট্রিবিউন: সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদগুলো নিষ্ক্রিয়; বছরের পর বছর নির্বাচন হয় না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনারা কী আশা করছেন?

বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদকের সঙ্গে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ (ডানে) সাইফুর রহমান সোহাগ: ছাত্রলীগের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখতে পাবেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলন, সংগ্রামে ছাত্রলীগের ভুমিকা রয়েছে। সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে ছাত্রলীগ সবসময় অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছে। এখনও সেই ধারা চলছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিনে সবকিছু হয়ে যাবে না। রাজনীতি না থাকায় সেখানে অনেক সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা আপনারাও জানেন। কিছু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের বিরুদ্ধে জঙ্গি-সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। এখন বন্যার সময় ছাত্রলীগের বিভিন্ন টিম দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও সংগঠন না থাকায় এসব সামাজিক কর্মকাণ্ডে তাদের শিক্ষার্থীদের পাওয়া যাচ্ছে না। দেশের জন্য কাজ করতে পারছে না। একা-একা দেশকে ভালোবাসা যায়, কিন্তু দেশের জন্য কাজ করা কঠিন।

ছাত্র সংসদ না থাকলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা দেখছি ছাত্র রাজনীতি ইতিবাচকভাবেই চলছে। কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সরব রাজনীতি না থাকায় সেখানে দেখবেন গোপন রাজনীতি চলছে। আর এই গোপন রাজনীতির ফলে কী হচ্ছে, তা আপনারা সবাই জানেন। নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো‌ এসব রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে। দেশবিরোধী জামায়াত-শিবির এ রাজনীতি করে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন বা ছাত্র সংসদ না থাকার কথা বলছেন। এর জন্য কিন্তু আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমরা চাই প্রতিটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ছাত্র-সংসদ নির্বাচন হোক। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর দিকে তাকালে দেখবেন, তাদের নেতাদের ছাত্রত্ব নেই। ছাত্রলীগ একমাত্র সংগঠন, যেখানে নেতাদের সর্বোচ্চ বয়স ২৯ বছর। সবার ছাত্রত্ব আছে। কাজেই ছাত্র-সংসদ নির্বাচন হলে ছাত্রলীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হবে। আপনার মাধ্যমে আমি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ডাকসু, রাকসুসহ সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-সংসদ নির্বাচনের দাবি করছি।

বাংলা ট্রিবিউন: দায়িত্ব নিলেন এক বছর, কেমন লাগছে?

সাইফুর রহমান সোহাগ: আমি দায়িত্ব নিয়েছি গত বছরের আগস্টে। গত বছরও ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। এ বছরও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি। আগে আগস্ট আসলে নেতাদের বক্তব্য শুনতাম। ভালো লাগতো। এখন আমি শ্রোতা নই; বক্তা। নেতাকর্মীদের শেখাতে হয়। এটা ভীষণ ভালো লাগে। কর্মী অবস্থায় চাপ ছিল না। এখন অনেক চাপ। রাজনীতি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে সম্মান, পরিচিতি। তাই আমিও রাজনীতির জন্য শ্রম, মেধা দিতে চাই।

বাংলা ট্রিবিউন: জেলা কমিটি, থানা কমিটি দিতে গিয়ে কোনও চাপ অনুভব করেন?

সাইফুর রহমান সোহাগ: না। তবে অনেকের অনুরোধ আসে। আর অনুরোধ রাখতে না পারলে বিরাগভাজন হতে হয়। তবে অনুরোধ রাখতে আমরা বাধ্য নই। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা শুনতে আমরা বাধ্য। তাই এগুলো তেমন প্রভাব ফেলে না। তাছাড়া অতীতের যেকোনও সময়ের চেয়ে ছাত্রলীগ এখন অনেক বেশি সুসংগঠিত।

মূল কথা হলো আমি সংগঠনকে ভালো করার জন্য নেত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী সবকিছু করতে পারি। জেলায় যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন, তারা অনেকেই আমাদের বাবা কিংবা দাদার বয়সী, বড় ভাইয়ের বয়সী। তারা অনেক সময় পরামর্শ দেন। কিন্তু সেই পরামর্শ শুনতেই হবে, এমন বাধ্যবাধকতা নেই। ছাত্রলীগ শেখ হাসিনার পরামর্শ ও কথামতো কাজ করে।

বাংলা ট্রিবিউন: ছাত্রলীগের এক সময়ের গঠনতান্ত্রিক নেত্রী বলা হতো শেখ হাসিনাকে। কিন্তু কয়েক বছর হলো তিনি এ পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। কেন?

সাইফুর রহমান সোহাগ: নেত্রী (শেখ হাসিনা) রাগ করে এ পদ থেকে সরেননি। এটা জনপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) অনুযায়ী থাকতে পারে না বলে নেত্রী এ পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এর বাইরে কোনও কারণ নেই। নেত্রী আমাদের সঙ্গে আছেন। আমাদের এই কমিটির এক সভায় আমি নেত্রীকে ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী হিসেবে উল্লেখ করি। নেত্রী সঙ্গে-সঙ্গে প্রতিবাদ করে উঠে বলেন, সাবেক কেন? পরে আমি সেখানে ঘোষণা দেই, নেত্রী ছাত্রলীগের আজীবন সদস্য। নেত্রী কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে রাগ করেন না। আমাদের শাষণ করেন, পরামর্শ দেন। তার পরামর্শ অনুযায়ী ছাত্রলীগ আজ সবচেয়ে সুসংগঠিত সংগঠন হিসেবে পরিচিত।

বাংলা ট্রিবিউন: ছাত্রদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে ছাত্রলীগসহ অন্যান্য ছাত্র-সংগঠনকে দেখা যায় না, এটা কেন?

সাইফুর রহমান সোহাগ: অধিকার আদায়ের সব আন্দোলনেই ছাত্রলীগ থাকে। কখনও প্রত্যক্ষ, কখনও পরোক্ষভাবে। এগুলো প্রকাশ পায় না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট আন্দোলন কারা করেছে? সেখানে ছাত্রলীগ ছিল না? সেখানে আমরা সংবাদ সম্মেলন করেছি। ছাত্র-আন্দোলনের সঙ্গে যে ছাত্রলীগ আছে, সেটা ছাত্রলীগের ব্যানারে হচ্ছে না বলে আপনারা দেখছেন না। আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। ছাত্রদের স্বার্থে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ে সম্প্রতি ১৯ দফা দাবি দিয়েছি প্রশাসনের কাছে। আমরা করছি না কোনটা? কোনও ইস্যু ছাড়া কেউ মাঠে নামবে? ছাত্রলীগ একদিনও ঘরে বসে থাকে না। জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে আমরা কাজ করিনি? বন্যা নিয়েও আমরা কাজ করেছি। বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু সেটা আপনারা বলছেন না। বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়ে আমিও একটানা পাঁচদিন কাজ করেছি।

বাংলা ট্রিবিউন: অভিযোগ আছে ছাত্রলীগ চরম বিশৃঙ্খল সংগঠন। এ নিয়ে আপনি কী বলবেন?

সাইফুর রহমান সোহাগ: সংগঠন খাওয়া-দাওয়ার কোনও জায়গা নয়। নিয়ম ছাড়া সংগঠন চলে না। সংগঠন এমন নয় যে, ডান হাতের কাজ বাম হাত দিয়ে করলাম। সংগঠনের প্রথম শর্ত শৃঙ্খলা। শৃঙ্খলা না থাকলে কোনও কিছু থাকবে না। আর শৃঙ্খলা না থাকলে কোনও উদ্যোগই সফল হবে না। ছাত্রলীগের তো অনেক অর্জন রয়েছে, তা নিশ্চয়ই অস্বীকার করতে পারবেন না। বিশৃঙ্খলা থাকলে কি তা সম্ভব হতো?

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি তো বললেন, সংগঠন আপনাকে অনেক দিয়েছে। আপনি সংগঠনকে কী দিতে চান?

সাইফুর রহমান সোহাগ: সংগঠনের জন্য আমি অনেক কিছু করতে চাই। কারণ, এই সংগঠন আমাকে দেশ-বিদেশে পরিচিতি দিয়েছে, মর্যাদা দিয়েছে। আমার মূল উদ্দেশ্য হলো, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করা। এই দুটো বিষয়ে যেন নিজেকে পরিপূর্ণভাবে দিতে পারি, সে জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

বাংলা ট্রিবিউন: ছাত্রলীগে একটি পরিচিত শব্দ আছে ‘সিন্ডিকেট’। সেই সিন্ডিকেট নাকি ছাত্রলীগের রাজনীতি পরিচালিত করে। আপনিও কি সিন্ডিকেট দ্বারা পরিচালিত?

সাইফুর রহমান সোহাগ: সিন্ডিকেটের কোনও অস্তিত্ব আমি পাইনি। আমি তো সভাপতি হলাম ভোটের মাধ্যমে। তাহলে সিন্ডিকেট কী? সিন্ডিকেট আমরা ছোটবেলা থেকে ‍শুনেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে ও পরে শুনতাম ঢাবির সিন্ডিকেট, যে সিন্ডিকেটে বিভিন্ন বিষয় পাস হয়। এরপরে ছাত্রলীগে সিন্ডিকেট আপনারা আনলেন। আমি তো ভোটে নির্বাচিত। আমি কি ভুয়া ভোটে সভাপতি হয়েছি? এখানে সিন্ডিকেট কিভাবে আসে? কারো সঙ্গে সম্পর্ক থাকলে তা সিন্ডিকেট হয়ে যায়? আপনার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক থাকতে পারে। অন্যকোনও সাংবাদিক যদি এটাকে ‘সিন্ডিকেট’ বলে, তাহলে কথাটা কি ঠিক?

বাংলা ট্রিবিউন: এক বছর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কোন কাজটিতে বেশি আত্মতৃপ্তি পেয়েছেন?

সাইফুর রহমান সোহাগ: সবচেয়ে আত্মতৃপ্তি পেয়েছি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বিতরণ করতে গিয়ে। সম্প্রতি বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে পেরেও ভালো লেগেছে। এই দুটি কাজ আমাকে ভীষণ আনন্দিত করেছে। 

বাংলা ট্রিবিউন: ছাত্রত্ব নেই, কিন্তু ছাত্রলীগের নেতা- এ ধারা বদলাবে?

সাইফুর রহমান সোহাগ: ছাত্রত্ব নেই, এমন কোনও নেতা রাখবো না। ছাত্রলীগের নেতা হতে হলে অবশ্যই নিয়মিত ছাত্র হতে হবে। ছাত্রলীগের মূল উদ্দেশ্যই এটা। কমিটির নেতা হওয়ার আগে অবশ্যই ছাত্র হতে হবে, তারপরই আমরা তার হাতে দায়িত্ব দেব। কেউ কেউ আছেন, যারা নেতা হওয়ার পর ছাত্রত্ব হারিয়েছেন। ছাত্রলীগ করেন কিন্তু ছাত্রত্ব নেই, এ কথা ঠিক নয়। ছাত্রলীগে ছাত্রত্ব ছাড়া কেউ নেই। কমিটিতে ঢুকতে হলে অবশ্যই ছাত্র হতে হবে। বয়স সর্বোচ্চ ২৯ হতে হবে এবং অবিবাহিত হতে হবে। এই তিন শর্তের বাইরে কেউ ছাত্রলীগ করতে পারবে না।

/এআরএল/এমএনএইচ/

আরও পড়ুন: 

মীর কাসেমের ফাঁসির নির্বাহী আদেশ কাশিমপুর কারাগারে

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
রাজধানীতে খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ
রাজধানীতে খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ
প্রচণ্ড গরমে দই-ফলের এই ডেজার্ট বানিয়ে খান
প্রচণ্ড গরমে দই-ফলের এই ডেজার্ট বানিয়ে খান
গরুবোঝাই ভটভটির সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২
গরুবোঝাই ভটভটির সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি