মিরপুরের দারুস সালাম থানার ভাঙা দেয়াল এলাকার ‘জঙ্গি আস্তানা’য় আবারও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। র্যাব ধারণা করছে, এটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ। এসময় আশপাশের এলাকায় বারুদের গন্ধ পাওয়া গেছে। এছাড়া ভবনে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। এরপর পাল্টা গুলি ছুড়তে থাকে র্যাব। এর আগে র্যাব জানিয়েছিল, ওই আস্তানায় থাকা সন্দেহভাজন জঙ্গি আব্দুল্লাহ আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়েছে।
কিন্তু এরপর মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১০টার দিকে ঘিরে রাখা আস্তানায় পাঁচ থেকে ছয়টি ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। ওই বাসা থেকে প্রচুর পরিমাণে কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছে। আশপাশের এলাকাজুড়ে বারুদের গন্ধও পাওয়া যাচ্ছে। বিস্ফোরণের শব্দের পরপরই পাল্টা গুলি ছুড়তে শুরু করেছে র্যাব। থেমে থেমে চলছে র্যাবের গুলি।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মনে হচ্ছে জঙ্গিরা আত্মঘাতী বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। ওই আস্তানায় আগুন ধরেছে। আগুন কিছুটা কমে এলে আমাদের টিম ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করবে। তখন ভেতরের পরিস্থিতি বোঝা যাবে। আমাদের সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আছে। তারাও কাজ করছেন।’
বিস্ফোরণের পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং করেন। এসময় তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরণের ঘটনায় চার র্যাব সদস্য স্প্লিন্টারবিদ্ধ হয়েছেন। তবে তারা সবাই আশঙ্কামুক্ত।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর ভেতরে আগুন লেগেছে। এ কারণে এখনও আমরা ভেতরে ঢুকতে পারিনি। ভেতরে এখনও আগুন জ্বলছে। আগুন নিভলে তারপর ভেতরে ঢুকে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।’ মুফতি মাহমুদ জানান, বিস্ফোরণটি কেমিক্যাল বিস্ফোরণ বলে মনে হয়েছে।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে বিস্ফোরণের পর থেকেই ওই বাড়ি ঘিরে রাখে র্যাব। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলের কাছে এক ব্রিফিংয়ে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘জঙ্গি আব্দুল্লাহর স্ত্রী জানিয়েছেন,আব্দুল্লাহ রাত সাড়ে ৭টা/৮টার দিকে আত্মসমর্পণ করতে পারে।’
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার এই পরিচালক আরও বলেন, ‘সোমবার গভীর রাতে অভিযান শুরুর পর থেকেই আমাদের চেষ্টা ছিল এ জঙ্গিকে আত্মসমর্পণ করানোর। এ জন্য দিনভর নানাভাবে চেষ্টাও করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের চেষ্টার মধ্যেই এক সময় ওই জঙ্গি তার স্ত্রী ও সন্তানকে বারান্দায় বের করে দেয়। সেখানে র্যাবের অভিযাত্রিক দলের সঙ্গে তার স্ত্রীর আকার-ইঙ্গিতে কথা হয়।’
র্যাবের এই মুখপাত্র বলেন, ‘সে (জঙ্গি) যদি ওই সময় ঠিকঠাক মতো আত্মসমর্পণ করে তাহলে তো ভালোই। আর যদি সে ডেস্ট্রাকটিভ হয়ে ওঠে তাহলে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই ভবনে অনেকগুলো পরিবার ছিল। তাদের সবাইকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন জঙ্গি পরিবার ছাড়া ওই ভবনে আর কেউ নেই।’