কোমরের নিচে জোড়া লাগা অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল গাইবান্ধার তোফা ও তহুরা। সেখানে সফল অপারেশন শেষে গত ১ আগস্ট আলাদা হয়েছে তারা। এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে শিশু দুটি। আগামীকাল রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে তাদের।
ঢামেক হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাহনুর ইসলাম শনিবার (০৯ সেপ্টেম্বর) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগামীকাল হাসপাতাল ছাড়ছে তোফা ও তহুরা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম হাসপাতালে উপস্থিত থেকে তাদের ছাড়পত্র দেবেন।’ এই চিকিৎসকের অধীনেই ভর্তি ছিল তোফা ও তহুরা।
ডা. সাহনুর ইসলাম আরও বলেন, ‘বাড়ি চলে গেলেও তারা আমাদের নিয়মিত ফলো-আপে থাকবে। এক মাস পরপর শিশু দুটিকে ঢাকায় এনে দেখানোর জন্য তাদের মা-বাবাকে বলা হয়েছে।’ ছয় মাস পর তাদের আরেকটি অপারেশন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। গত কোরবানির ঈদের আগেই তোফা ও তহুরার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু তখন তাদের বাড়িতে বন্যার পানি উঠায় ইনফেকশনের আশঙ্কায় ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি বলে জানান ডা. সাহনুর ইসলাম।
শিশুদুটির জন্ম হয়েছিল কোমরের কাছে পেছনের দিক থেকে সংযুক্ত হয়ে। তারা যেভাবে জোড়া লেগে জন্মগ্রহণ করেছিল চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় তাকে পাইগোপেগাস বলা হয়। পাইগোপেগাস শিশু পৃথক করার ঘটনা বাংলাদেশে এটিই প্রথম বলে জানান চিকিৎসকরা। প্রায় ৯ ঘণ্টার অপারেশন শেষে তাদের আলাদা করা হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের রাজু মিয়ার স্ত্রী সাহিদা বেগম নিজ বাড়িতে স্বাভাবিকভাবেই তোফা, তহুরার জন্ম দেন। কোমরের কাছে জোড়া ছাড়া শিশু দুটির সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গই ছিল আলাদা। শুধু প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা ছিল একটি।
গত বছরের ৮ অক্টোবর ঢামেকে অপারেশনের মাধ্যমে তাদের পায়ুপথ আলাদা করা হয়। পরে গত ১ আগস্ট দ্বিতীয়বারের মতো অস্ত্রোপচার করে তাদের শরীর আলাদা করা হয়। ওইদিন সকাল ৮টায় শুরু হয় জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ এ অস্ত্রোপচার। বিকাল পাঁচটায় শিশু দুটিকে সফলভাবে আলাদা করেন চিকিৎসকরা।