X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নয়নের স্বার্থে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে প্রাধান্য দিতে হবে: পবা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২২ মে ২০১৮, ২৩:০০আপডেট : ২২ মে ২০১৮, ২৩:১০

পবার সংবাদ সম্মেলন পরিবেশ ও প্রতিবেশের সম্পদ প্রান্তিক ও গরিব মানুষের কল্যাণে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে কার্যকরভাবে দারিদ্র্য কমানো সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন এসব সম্পদে সুবিধাবঞ্চিত, প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করা এবং প্রাকৃতিক প্রতিবেশের সুরক্ষা করা। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের অবিচ্ছেদ্য পদ্ধতি হচ্ছে উপযুক্ত সংরক্ষণ এবং টেকসই উন্নয়ন কৌশল। 

আজ মঙ্গলবার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) উদ্যোগে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে ‘দারিদ্র্য বিমোচনে জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. লেলিন চৌধুরী, নাসফ-এর সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, বিআইডাব্লিউটিএর সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ, নিরুপমা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাজনীন নিরুপমা তিথি প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, টেকসই উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব অপরিসীম। জীববৈচিত্র্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বায়ু নিঃশ্বাসযোগ্য রাখা, খাদ্য, পানি সরবরাহ, ওষুধ, পোষাক পরিচ্ছদ, আশ্রয়স্থলের যোগান দিচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার লক্ষ্য-১ হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন, যা খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। বিশ্ব অর্থনীতির ৪০ শতাংশ এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চাহিদার ৮০ শতাংশ আসে জৈব সম্পদ থেকে। ২০১০ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত বাংলাদেশ দীর্ঘ আট বছরেও উন্নয়নকে প্রাণের বৈচিত্র্যময় বিস্তার ও বিকাশের দৃষ্টিতে দেখেনি। বরং মূলধারায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অনেক ক্ষেত্রেই হয়ে উঠেছে জীববৈচিত্র্য সংহারি।

আবদুস সোবহান বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বের সব প্রাণীর খাদ্য নিরাপত্তা আজ হুমকির সম্মুখীন। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষেণের মাধ্যমে সব প্রাণীর খাদ্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করা সম্ভব। কিন্তু উন্নয়নের নামে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধন করে আমরা টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনীতির সমৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে সংরক্ষিত বনের মধ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প স্থাপন এবং বাস্তবায়নের জন্য ব্যাপক হারে গাছ কাটা হচ্ছে। তিতাস গ্যাসের সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণের জন্য শ্রীপুর থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত ১৩ হাজার ৩৫৬টি, মহেশখালীতে বিপিসির টার্মিনাল এবং কাপাসিয়ায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য ৩ হাজার ২৪৭টি গাছ কাটা হবে। যশোর রোডের ঐতিহ্যবাহী গাছগুলো কাটা নিয়ে অনেক সমালোচনা-প্রতিবাদের পর গাছগুলো রেখেই রাস্তা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপরও মানিকগঞ্জে হাজার হাজার গাছ কেটে রাস্তা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। মানবিক সংকটে পড়া রোহিঙ্গাদের জন্যও ৪ হাজার ৮৩ একর বনভূমিতে আশ্রয় শিবির গড়ে তোলা হয়েছে। বন বিভাগ এ পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি একর বনভূমি বরাদ্দ দিয়েছে। একবছরের মধ্যে আরও ১৬ হাজার একর বনভূমি বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান। অথচ ২০১৬ সালে মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ২০২২ সাল পর্যন্ত বনের গাছ কাটা যাবে না।

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে পবা কিছু দাবি জানিয়েছে। সেগুলো হচ্ছে-পরিবেশ ও প্রতিবেশের সম্পদে সুবিধাবঞ্চিত, প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করা; সব সেক্টরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জীববৈচিত্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনকে প্রাধান্য দেওয়া; জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে দীর্ঘমেয়াদি কার্যকর গবেষণা পরিচালনা করা; সরকার, বেসরকারি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে নিযমিতভাবে জীববৈচিত্র্য জরিপ; ভূতাত্ত্বিক, জলজ ও সামুদ্রিক পরিবেশে জীববৈচিত্র্য এবং বাস্তুতন্ত্রের সেবাগুলো সংরক্ষণ ও পুনর্বাসনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ; বস্তুতন্ত্রভিত্তিক পদ্ধতিতে জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা, ড্রেজিং করে নদীর নাব্য বৃদ্ধি এবং ভারতের সঙ্গে পানিচুক্তির সঠিক বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া; উন্নয়ন প্রকল্পের অনুকূলে সংরক্ষিত বনাঞ্চল বরাদ্দ প্রদান না করা এবং উন্নয়ন ও জীববৈচিত্র্যের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা।

/এসএনএস/এএম/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
যাত্রা শুরু করলো ইউএস-বাংলার ‘এয়ারবাস’
যাত্রা শুরু করলো ইউএস-বাংলার ‘এয়ারবাস’
ব্রাইটনকে উড়িয়ে দেওয়ার পর সতর্ক ম্যানসিটি
ব্রাইটনকে উড়িয়ে দেওয়ার পর সতর্ক ম্যানসিটি
পরিবারের অভাব দূর করতে সিঙ্গাপুরে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন রাকিব
পরিবারের অভাব দূর করতে সিঙ্গাপুরে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন রাকিব
কেমন চলছে ভারতের লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোট?
কেমন চলছে ভারতের লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোট?
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ