X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘জঙ্গিদের’ মামলার তদবির করাই তার কাজ!

আমানুর রহমান রনি
০৫ জুলাই ২০২০, ০৩:৫১আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২০, ০৪:১২




এটিইউ সদস্যদের হাতে গ্রেফতার ফারুক নিষিদ্ধ সংগঠন ‘আল্লাহর দল’-এর বন্দি সদস্যদের খোঁজ খবর রাখাই ছিল তার কাজ। তাদের মামলার খোঁজ খবর ও জামিন নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কাজ করতেন তিনি। অর্থাৎ ‘জঙ্গিদের’ মামলার তদবির করতেন। মাদারীপুরের ফারুক শেখের (৩৩) বিষয়ে এমনটিই জানিয়েছে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)। পুলিশের দাবি গ্রেফতার ফারুকও আল্লাহর দলের সদস্য।

শনিবার (৪ জুলাই) বিকালে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গ্রেফতার ফারুক শেখ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আল্লাহর দলের ঢাকা দক্ষিণের দাওয়াত শাখার আমির। সে কখনও দর্জির কাজ, কখনও শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকার আশপাশে থাকতেন তিনি। আমরা তাকে অনেকদিন ধরেই খুঁজছিলাম। একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে তার নাম উঠে আসে।’

এটিইউ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকা জঙ্গিদের খোঁজ খবর রাখতেন ফারুক। এছাড়া মামলার তদবির করার জন্য সে কেরানীগঞ্জ ও এর আশপাশের এলাকায় থাকতেন। গত ২ জুলাই তাকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকার বেগুনবাড়ি নামক জায়গা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে আল্লাহর দলের অন্যান্য জঙ্গিদের মামলার কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সে স্বীকার করেছে, বন্দি থাকা অন্য জঙ্গিদের সে খোঁজ খবর নিতো।’

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা এক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এই মামলায় এর আগে আল্লাহর দলের কল্লোল, সেতু ও আমিনুল নামে তিন সদস্য গ্রেফতার হন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমেই ফারুক শেখের নাম পায় অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট।

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আল্লাহর দলের প্রধান সংগঠক আবদুল মতিন মেহেদীর অনুসারী তারা। মতিন মেহেদী কারাগারে থাকলেও তার অনুসারী ও ভক্তরা বিভিন্নভাবে সংগঠনটি শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, ‘তারা সবাই মতিন মেহেদীর অনুসারী। এরা মূলত সদস্য সংগ্রহের কাজ করছে। তবে তাদের কোনও নাশকতার পরিকল্পনা ও শক্তি বর্তমানে নেই। তারা সদস্য সংগ্রহ করার দিকেই বেশি মনোযোগী।’

‘দেশের শান্তিশৃঙ্খলার পরিপন্থী কার্যক্রম পরিচালনা’ ও ‘জননিরাপত্তার জন্য হুমকি’ হওয়ায় ‘আল্লাহর দল বা আল্লাহর সরকার’ নামক সংগঠনটিকে গত বছরের ৬ নভেম্বর নিষিদ্ধ ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি টানা অভিযানে সংগঠনটির শীর্ষস্থানীয় বেশ কিছু নেতা ও কর্মীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব ও পুলিশ। আল্লাহর দলের প্রধান মতিন মেহেদী বর্তমানে গাজীপুরের কাশিমপুরে হাই সিকিউরিটি কারাগারে রয়েছেন। তিনি ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।

প্রসঙ্গত, আল্লাহর দল সংগঠনটি ১৯৯৫ সালে জাতীয় সংসদের তৎকালীন প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আবদুল মতিন মেহেদী ওরফে মুমিনুল ইসলাম ওরফে মহিত মাহবুব ওরফে মেহেদী হাসান ওরফে মতিনুল হকের নেতৃত্বে গঠিত হয়। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে জেএমবির সিরিজ বোমা হামলার সঙ্গে আল্লাহর দলের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পায় র‌্যাব ও পুলিশ। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে ধানমন্ডির গ্রিন রোডস্থ সরকারি কোয়ার্টার থেকে মতিন মেহেদীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

 

আরও পড়ুন:
পিলখানার ঘটনায় চাকরিচ্যুতদের সংগঠনে ভেড়াতে তৎপর ‘আল্লাহর দল’ (ভিডিও)

/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা