X
বুধবার, ১৫ মে ২০২৪
৩১ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন ইসি শাসক মহলের পূর্বপরিকল্পিত: ২০ দলীয় জোট

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২৩:৩১আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২৩:৫৪

নির্বাচন কমিশন নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না। তিনি আরও বলেন, শেষ মুহূর্তে ইসি গঠনে যে রুদ্ধশ্বাস দ্রুততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা অনেকের মনেই সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। এর মধ্যে একটি বড় সন্দেহ হলো—কাদেরকে নির্বাচন কমিশনে রাখা হবে, সেটি ছিল শাসক মহলের পূর্ব পরিকল্পিত। এতে ২০ দলীয় জোট হতাশ ও নিরাশ।
নতুন ইসি গঠনের ২৬ ঘণ্টা পর ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে দেওয়া আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ বিষয়ে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকের পর এ প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। এসময় ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
২০ দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এবারের নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়টি বিএনপি শুরু থেকেই অত্যন্ত গুরুত্ব ও গভীর আন্তরিকতার সঙ্গে নিয়েছিল।’ তার ভাষ্য, ‘আমরা চেয়েছিলাম যাদেরকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে তারা হবেন সৎ, দল-নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। কিন্তু গতকাল সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দিনের শেষ মুহূর্তে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত ১০ নাম থেকে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার জনকে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সব মহল থেকে দাবি ছিল, সার্চ কমিটি কর্তৃক বাছাইকৃত ১০ জনের নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে। এবং তাদের জীবনবৃত্তান্ত ও কর্মঅভিজ্ঞতা সম্পর্কে সবাইকে তথ্য সরবরাহ করা হবে। এ পন্থা অনুসরণ করা হলে প্রক্রিয়াটি কিছুটা হলেও স্বচ্ছতা পেতো। কিন্তু তা করা হয়নি। এর ফলে আমরা নিরাশ ও হতাশ হয়েছি।’
‘রাষ্ট্রপতি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেই সিদ্ধান্তই আমরা মেনে নেবো’— প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসলে প্রধানমন্ত্রী জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন। সাংবিধানিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী দুটো বিষয় ছাড়া (প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ) অন্য সব বিষয়ে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করতে বাধ্য। সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করতে পারি, নতুন ইসি গঠনে প্রধানমন্ত্রীর পছন্দেরই প্রতিফলন ঘটেছে।’
সিইসিকে একজন বিতর্কিত সাবেক সরকারি কর্মকর্তা উল্লেখ করে ফখরুল দাবি করেন, ‘তার নেতৃত্বে কোনও প্রতিষ্ঠান নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। এমন একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের পর নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে আমাদের প্রস্তাবের যৌক্তিকতা আরও দৃঢ় হয়েছে।’
এর আগে রাত সাড়ে ৮টায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে শরিক দলগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। ২০ দলীয় জোটের প্রতিটি দলই গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত রাজনৈতিক দল। একমাত্র নির্বাচনের মাধ্যমেই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনের নীতিতে আমরা বিশ্বাসী।’
নতুন ইসি প্রত্যাখ্যান করছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘এটা আমাদের বক্তব্যেই রয়েছে।’
নতুন সিইসি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘অভিজ্ঞ সচিব ছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এই ঘটনা অভূতপূর্ব।’ তিনি দাবি করেন, নতুন সিইসি অতিরিক্ত সচিব এবং সচিব হয়েছেন শুধুই কাগজে-কলমে। প্রকৃতপক্ষে তিনি একদিনের জন্যও অতিরিক্ত সচিব বা সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেননি। ফলে এইসব পদে দায়িত্ব পালনের বাস্তব অভিজ্ঞতা তার নেই।
নতুন সিইসি নুরুল হুদার ওএসডি থাকার প্রসঙ্গে একটি দৈনিকে প্রকাশিত সিইসি’র বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দল সম্পর্কে তার মনে ক্ষোভ থাকতে পারে। আওয়ামী লীগ শাসনামলে ভূতাপেক্ষ (পূর্ববর্তী সময় থেকে কার্যকর হওয়া আদেশ) পদোন্নতি পেয়ে তিনি আওয়ামী লীগের প্রতি অনুরাগ পোষণ করতে পারেন। এই দুই বিপরীত পরিস্থিতির মধ্যে তিনি কতটুকু নিরপেক্ষতা অবলম্বন করবেন, সে ব্যাপারে জনমনে যৌক্তিক প্রশ্ন রয়েছে। একটি নির্বাচন কমিশনের যাত্রার শুরুতেই আস্থার সংকট ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যার জন্ম দিতে পারে।’
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ১৯৯৬ সালে হুদা কুমিল্লা জেলা প্রশাসক হিসেবে বিএনপি সরকারবিরোধী জনতার মঞ্চের একজন সংগঠক ছিলেন।
প্রসঙ্গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সাবেক সচিব কে এম নুরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বাকি সদস্যরা হলেন মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও শাহাদ হোসেন চৌধুরী। সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত ১০টি নাম থেকেই রাষ্ট্রপতি এই পাঁচ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন-

সাক্ষাতকারে প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার: আমরা সফল হবোই

‘বিএনপির সব নাম নিয়ে ইসি গঠিত হলেও তারা মানতো না’

নতুন ইসিও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে: সিইসি

নতুন ইসির ওপর আস্থা আছে আ.লীগের
নতুন ইসি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে: জাতীয় পার্টি



/এসটিএস/টিআর/টিএন/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
লখনউকে হারিয়ে রাজস্থানকে প্লে অফে তুললো দিল্লি
লখনউকে হারিয়ে রাজস্থানকে প্লে অফে তুললো দিল্লি
ডানপিঠে দুলু থেকে কিংবদন্তি ফারুক
প্রয়াণ দিবসে স্মরণডানপিঠে দুলু থেকে কিংবদন্তি ফারুক
‌‘এখনও ঘুমালে মনে হয় জলদস্যুরা এই বুঝি গুলি করলো’
এমভি আবদুল্লাহর চিফ অফিসার‌‘এখনও ঘুমালে মনে হয় জলদস্যুরা এই বুঝি গুলি করলো’
‘দলীয় সাংবাদিক’ ও সাংবাদিকতায় অনাস্থা
‘দলীয় সাংবাদিক’ ও সাংবাদিকতায় অনাস্থা
সর্বাধিক পঠিত
শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল
শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল
সজনে পাতা খেলে মিলবে এই ১২ উপকারিতা
সজনে পাতা খেলে মিলবে এই ১২ উপকারিতা
রংপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ
রংপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ
সাকিব-তামিমের কারণে দলের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে: ইমরুল 
সাকিব-তামিমের কারণে দলের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে: ইমরুল 
সোনার অলংকার কেনাবেচায় নতুন হার নির্ধারণ
সোনার অলংকার কেনাবেচায় নতুন হার নির্ধারণ