হাওরে জলমহাল ইজারা চুক্তি বাতিল করে সবাইকে মাছ ধরার অধিকার দেওয়ার দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। বিপর্যস্ত হাওর অঞ্চল পরিদর্শন করে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে নেতারা এ দাবি জানান।
সরকার হাওরবাসীর দুর্দশার প্রকৃত চিত্র ও মাত্রা আড়াল করছে বলে দাবি করে বাম মোর্চার নেতারা বলেন, ‘সরকার বন্যার আগাম সতর্কীকরণ ও প্রতিরোধের মাধ্যমে হাওরের ফসল রক্ষার দায়িত্ব পালন করেনি। এখন জলমহাল ইজারা চুক্তি বাতিল করলে হাওরবাসীর বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।’ পাশাপাশি হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি-গাফিলতির জন্য দায়ীদের শাস্তি দাবি করেছে বামদলগুলোর এই জোট।
সংবাদ সম্মেলনে শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘কোন এলাকার উৎপাদনব্যবস্থা বিপর্যস্ত হলে তাকে দুর্গত অঞ্চল ঘোষণা করা যায়। দুর্গত অঞ্চল ঘোষিত হলে ওই অঞ্চলের অভাবী মানুষের খাদ্য সংস্থান সরকারি দায়িত্বে করতে হবে।’
মোর্চার নেতা জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সরকার হাওরবাসীর দুর্দশার প্রকৃত চিত্র ও মাত্রা আড়াল করছে। ত্রাণ সাহায্য অপ্রতুল, যেটুকু করা হচ্ছে তা নিয়েও সরকারদলীয়দের দুর্নীতি-লুটপাট চলছে। পর্যাপ্ত সহযোগিতা না পেলে হাওরে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা আছে।’
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতারা গত ১৪ মে সুনামগঞ্জের তাহেরপুর এলাকায় শনির হাওর অঞ্চল পরিদর্শন করে দুর্গত হাওরবাসীর সঙ্গে কথা বলেন এবং পরে সুনামগঞ্জে স্থানীয় রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মী-গণমাধ্যম কর্মী ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
সরেজমিন পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার বক্তব্য-দাবি তুলে ধরতে মঙ্গলবার (১৬ মে) নির্মল সেন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোর্চার সমন্বয়ক ফিরোজ আহমেদ।
লিখিত বক্তব্যে ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘হাওর অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে আগামী ফসল না আসা পর্যন্ত প্রতিটি পরিবারকে প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা প্রদান করতে হবে। হাওরের সকল প্রকার ইজারা অন্তত দু’বছরের জন্য বাতিল করে ভাসান পানিতে মাছ ধরার অধিকার সকলের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।’ কৃষিঋণ-এনজিও-মহাজনী ঋণ আদায় স্থগিত ও সুদ মওকুফ, হাওরের পানিতে দূষণ বা বিষক্রিয়ার সম্ভাব্য কারণ উদঘাটন করতে আস্থাভাজন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনেরও দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে হাওর ও হাওরবাসীকে রক্ষায় গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে আগামী ১৮ মে বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এসময় অন্যদের মদ্যে উপস্থিত ছিলেন- গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ নেতা নজরুল ইসলাম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আকবর খান প্রমুখ।
/এসটিএস/এমও/