আগামী সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি দলীয় ফোরামের অন্তত দুটি সভায় দলের সহকর্মীদের কাছে এই কথা ব্যক্ত করেন তিনি। পাশাপাশি দলের সব পর্যায়ের নেতাকে ভোটারদের দুয়ারে গিয়ে ভোট চাওয়া, সরকারের উন্নয়নের কথা প্রচার এবং ভবিষ্যত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরতে নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। দলটির নীতিনির্ধারণী নেতারা বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
শীর্ষপর্যায়ের নেতারা বলেন, ‘গত ১১ নভেম্বর দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় (এখানেই রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুকে মনোনয়ন দেওয়া হয়) ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে নিজের আত্মবিশ্বাসের কথা তাদের কাছে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।’
আওয়ামী লীগ সভাপতির বরাত দিয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা আরও জানান, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার নজির বাংলাদেশে নেই বলে ওই সভায় মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আওয়ামী লীগ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে সেই নজির স্থাপন করবে বলে আত্মবিশ্বাস ঝরেছে তার কণ্ঠে। শেখ হাসিনার কথায়, ‘আমাদের লক্ষ্য জনগণের জন্য রাজনীতি করা ও তাদের ভাগ্য বদল করা।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ আত্মবিশ্বাসী।’
তবে বৈঠকের বিষয়ে কিছু বলেননি সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ। তবে বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেছেন, ‘টানা দুইবার সরকারে থেকে আবারও ক্ষমতায় আসার মতো কাজ করে দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাই তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার আত্মবিশ্বাস আওয়ামী লীগের থাকাটাই স্বাভাবিক। আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করেছে। জনগণ এর প্রতিদান দেবে, এটাই নিয়ম।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলী ও সম্পাদকমণ্ডলীর অন্তত ছয় জন জানান, ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে শেখ হাসিনার এই আত্মবিশ্বাস দলের নেতাদের উজ্জীবীত করেছে। দলীয় সভাপতির এমন প্রত্যয় নেতাদের মধ্যে দ্বিগুণ মাত্রায় শক্তির সঞ্চার করেছে। তারা বলছেন— নির্বাচন ও ক্ষমতায় আসা নিয়ে দলের সর্বস্তরের দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও শীর্ষপর্যায়ে থেকে এমন বক্তব্য সবার আস্থা বাড়িয়ে দিয়েছে। শেখ হাসিনাকে তারা ‘ম্যাজিশিয়ান’ অভিহিত করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতার কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া তার পক্ষেই সম্ভব।’
ওই বৈঠকে থাকা সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা চাই দলের নেতা, সংসদ সদস্য ও মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ভোটারদের দুয়ারে যাবেন। ভোটারদের কাছে সরকারের উন্নয়নের কথা ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরবেন।’
তবে কোন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হবে, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরিকল্পনা কী হবে, এসব কৌশল সহকর্মীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেননি প্রধানমন্ত্রী। সূত্র জানায়, বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন শেখ হাসিনা। কিন্তু সেই নির্বাচনে দলীয় কৌশল কী হবে তা তুলে ধরেননি তিনি।