রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে হোটেল রেডিসনে তিনদিনব্যাপি ‘বাংলাদেশ-ভারত মিডিয়া ডায়লগ-২০১৮’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, ভারতীয় হাই কমিশনের ডেপুটি হাই কমিশনার ড. আদ্রেশ সৈকত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের নিয়ে আমরা বেশ সংকটে আছি। ভারত ১৯৭১ সালে আমাদের সংকটের মুহূর্তে সহযোগিতা করেছিল, আশা করি এবারের সহযোগিতা করবে। আমাদের অপ্রত্যাশিত এ বোঝা সইবার না। আপনারা মুক্তিযুদ্ধের সময় সহযোগিতা করেছিলেন, এই ক্রাইসিস মুহূর্তেও আপনাদের সহযোগিতা চাই।’
ভারত থেকে আসা গণমাধ্যম প্রতিনিধি ও দেশটির সরকারের উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি মিয়ানমারের সঙ্গে আপনাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে। আপনারাও আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধু। আপনাদের সম্পর্ক অব্যাহত রেখে মিয়ানমারকে চাপ দিন। আজ আমরা ক্রাইসিসের মধ্যে আছি। এক্ষেত্রে ভারতের সাহায্য খুবই প্রয়োজন। আপনাদের সঙ্গে মিয়ানমারের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। কিন্তু মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের কারণে উখিয়া-টেকনাফ এলাকায় মানুষের যে কষ্ট হচ্ছে সেটা দেখে না কেউ। আমাদের সি বিচে এখন পর্যটকরা যাচ্ছে না, আমাদের পাহাড় কেটে ফেলা হচ্ছে। আমরা অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছি। কাজেই ভারত সরকার যেন মিয়ানমারের ওপর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তিতে চাপ দেয়, প্রেশার দেয়।’
ভারত সরকারের উদ্দেশে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, ‘আরেকটা বিষয়ে অনুরোধ করব প্লিজ আমাদের একটু সাহায্য করুন। পরপর তিনটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমরা ফেইস করেছি। আমাদের হাওরের বন্যা, দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা, রোহিঙ্গা ইস্যু। রোহিঙ্গাদের সংখ্যা এখন এগারো লাখ অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশ কিভাবে ভার সইবে? একাত্তরের ক্রাইসিসে আপনারা আমাদের পাশে ছিলেন, এবারও আপনারা পাশে দাঁড়ান।’
তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার আমলেই তিস্তা সমাধান হবে। আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই আমাদের সরকারের শেষ সময় চলে আসছি। আর হয়তো ৯/১০ মাস সময় আছে। আমাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। তাই তিস্তা ইস্যু সমাধান করুন।’
এসময় তিনি ভারতের গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে বলুন, তিনি যেন দিল্লি সরকারকে তিস্তা ইস্যুর সমাধানে সহযোগিতা করেন।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আমি ভারতীয় সাংবাদিক বন্ধুদের বলতে চাই এ কথাটা আপনাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশে আমাদের বিকল্প যারা তারা পাকিস্তানের বন্ধু, যারা আপনাদের সেভেন সিস্টার্সের যাবতীয় গ্যাঞ্জামের হোতা, যারা পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সঙ্গে কাজ করে। একই চক্রান্তের জালে তারা আবদ্ধ।’