X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কল্যাণ পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় চেয়ারম্যানের বাড়ির পঞ্চম তলায়

আদিত্য রিমন
২৩ মে ২০১৮, ১৬:২০আপডেট : ২৩ মে ২০১৮, ১৯:৩১

সরেজমিন রাজনৈতিক কার্যালয় পর্ব-১৪ কল্যাণ পার্টি

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ৩১ নম্বর নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি। ইসিতে দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজধানীর মহাখালীর নিউ ডিওএইচএসের একটি বাড়িতে অবস্থিত। তবে স্থানীয়দের কাছে এটি দলের কার্যালয় নয়, দলটির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের বাড়ি হিসেবে পরিচিত।

দলটির নেতারা বলছেন, চেয়ারম্যানের বাড়ির একটি ফ্লোরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও চেয়ারম্যানের অফিস। এ অফিসে দলের সভা হয়। যদিও এ বাড়িতে দলটির কোনও সাইনবোর্ডও দেখা যায়নি। দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় নয়াপল্টনের একটি কার্যালয় থেকে।

নিউ ডিওএইচএসের ২২ নম্বর রোডের একটি বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী সোহেল আরমানের কাছে কল্যাণ পার্টির কার্যালয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে এই নামে কোনও দলের কার্যালয় নেই।’ পরে ৩২৫ নম্বর বাড়ি কোন দিকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো সৈয়দ ইবরাহিম স্যারের বাড়ি।’ 

আগে থেকে এই প্রতিবেদক কথা বলে যাওয়ার কারণে দলটির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান ওইসময় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটি চেয়ারম্যানের নিজের বাড়ি। এর একটি ফ্লোরে আমাদের দলের কেন্দ্রীয় ও চেয়ারম্যানের কার্যালয়। এখানে দলের সাংগঠনিক সভা হয়। আর রাজনৈতিক কর্মসূচি পরিচালিত হয় নয়াপল্টনের কার্যালয় থেকে।’

  মহাখালী ডিওএইচএসে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের বাসার একটি কক্ষে চলে কল্যাণ পার্টির কার্যক্রম

১১ মে বিকাল ৫টার দিকে নিউ ডিওএইচএসের ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচ তলা ভবনের পঞ্চম তলায় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও চেয়ারম্যানের অফিস। এ ফ্লোরের চারটি কক্ষের একটি ব্যবহার করেন দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। অন্য তিনটি কক্ষ থেকে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কক্ষগুলোতে টেবিল, চেয়ার, বুক সেলফ, ফাইল কেবিনেট ও দুটি কম্পিউটার রয়েছে।

জানা গেছে, বিভিন্ন দিবস ও ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দলটি ঢাকায় সক্রিয় থাকলেও দেশের অন্য জেলাগুলোতে তেমন কোনও কর্মসূচি থাকে না। ইসির নিবন্ধনের শর্তানুসারে কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন জেলায় দলের কমিটি ও কার্যালয় থাকার কথা বললেও কল্যাণ পার্টির তেমন কার্যক্রম নেই। তবে দলটির নেতাদের দাবি, সাংগঠনিক সামর্থ্য অনুযায়ী সারাদেশেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়।

এ প্রসঙ্গে দলটির মহাসচিব আমিনুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি কিংবা আওয়ামী লীগের মতো সারাদেশে আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই ঠিকই কিন্তু দলের সাংগঠনিক অবস্থা অনুযায়ী ঢাকাসহ সারাদেশে আমাদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মসূচি পালন করা হয়। দেশের ‘বিদ্যমান পরিস্থিতি’তে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে গেলে হামলা-মামলা, বাধা ও গ্রেফতারের ভয়ও আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

দলটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় কমিটি ১৬০ সদস্যবিশিষ্ট হওয়ার কথা। তবে বর্তমানে ৮৮ সদস্যের কমিটি রয়েছে। এরমধ্যে পদাধিকারবলে জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

নির্বাচন কমিশনের গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে রাজনৈতিক দলের সব স্তরে ৩৩ শতাংশ নারী থাকতে হবে। তবে কল্যাণ পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে বর্তমানে ৯ জন নারীনেত্রী রয়েছেন। এরমধ্যে দলের চেয়ারম্যানের স্ত্রী ফোরকান ইবরাহিম দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য।  

কল্যাণ পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় চেয়ারম্যানের বাড়ির পঞ্চম তলায়

এ প্রসঙ্গে দলের ভাইস-চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান তামান্না বলেন, ‘আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি ৮৮ সদস্যবিশিষ্ট। কমিটিতে বর্তমানে ৯ জন নারীনেত্রী রয়েছেন। আশা করি আগামীতে নারী নেতৃত্ব আরও বাড়বে।’

দলটির দফতর সম্পাদক আল আমিন ভূইয়া রিপন জানান, সারাদেশে দলের ৩৫টি জেলায় আহ্বায়ক ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি আছে। তবে তিনি জেলা কমিটির বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য দিতে পারেননি।

নারায়ণগঞ্জ কল্যাণ পার্টির সভাপতি সোহেল মোল্লা বলেন, ‘আমি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলার সভাপতি। এখানে দলের ২১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি আছে। আগে দলের ভাড়া করা কার্যালয় ছিল। কিন্তু এখন নেই।’

চট্টগ্রাম কল্যাণ পার্টির সভাপতি মো. ইলিয়াছ বলেন, ‘আমি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জেলার সভাপতি। এখানে দলের ৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি রয়েছে। চট্টগ্রামে দলের কার্যালয় আছে। তবে পুলিশের ভয়ে নেতাকর্মীরা কার্যালয়ে যেতে পারেন না।’

কল্যাণ পার্টির নিজস্ব ওয়েবসাইট নেই। তবে ফেসবুকে একটি আইডি দেখা গেছে। সেখানে দলের বিভিন্ন আলোচনা সভার ছবি ও খবর পোস্ট করা হয়েছে। এর বাইরে আরও কয়েকটি ছবি দেখা গেছে। দলটির নির্বাচনি প্রতীক হচ্ছে হাতঘড়ি। 

দলটির দফতর সম্পাদক বলেন, দলের ওয়েবসাইটের কাজ চলছে।  

 ঘরের ভেতরে কল্যাণ পার্টির কার্যালয়

দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রাথমিক সদস্য থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদের মাসিক চাঁদা হবে দলের আয়ের উৎস। তবে কেন্দ্রীয় নেতারাই চাঁদা দিয়ে থাকেন। দলের মহাসচিব বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতা ও সদস্যরা নিয়মিত চাঁদা পরিশোধ করেন।’

বর্তমান সংসদসহ স্থানীয় সরকারের কোথাও জনপ্রতিনিধি নেই কল্যাণ পার্টির। দলটি বিএনপির নেতৃত্বধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক। দলের নেতারা জানান, ২০ দলীয় জোট যদি আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়, তাহলে কয়েকটি আসনে প্রার্থী দেবে কল্যাণ পার্টি। এরমধ্যে দলের চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম ও দলের মহাসচিব পাবনা থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন।

২০০৮ সালে কল্যাণ পার্টি রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত হয়। দলটির প্রতিষ্ঠার পর থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।  

/এএম/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
হলিউডের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন ক্যাটরিনা!
হলিউডের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন ক্যাটরিনা!
হলও ছাড়েননি আন্দোলনেও নামেননি চুয়েটের শিক্ষার্থীরা
হলও ছাড়েননি আন্দোলনেও নামেননি চুয়েটের শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
মারা গেলো গাজায় নিহত মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুটি
মারা গেলো গাজায় নিহত মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুটি
সর্বাধিক পঠিত
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!