ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে বৃহস্পতিবার বিকেএসপিতে মুখোমুখি হয়েছিল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও শাইনপুকুর ক্রিকেট একাডেমি। দুই দলের লড়াই ছাপিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে শাইনপুকুরের নেওয়া কনকাশন সাবে! এই নিয়ে প্রায় আধাঘণ্টা বন্ধও থাকে খেলা। পরে রূপঞ্জের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার হস্তক্ষেপে মাঠে খেলা গড়িয়েছে। বিতর্কের এই ম্যাচে রূপগঞ্জকে ৬৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে শাইনপুকুর।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে শাইনপুকুরের বিপক্ষে রূপগঞ্জের ম্যাচটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সুপার লিগ খেলতে হলে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটিতে জয়ের বিকল্প ছিল না মাশরাফিদের। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই তৈরি হয় বিতর্ক। ৪৩.৪ ওভারে রানআউট থেকে বাঁচতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন রবিউল। আউট থেকে বাঁচতে পারেননি তিনি। কিন্তু হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরিতে পড়েছেন। তাতেই বাধে ঝামেলা। রূপগঞ্জের দাবি পায়ে চোট পেলেও মাথায় কোনও আঘাত পাননি তিনি। তার পরেও কনকাশন সাব পেসার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধকে নামানোতে আপত্তি তোলেন তারা। এই অবস্থায় কী করে কনকাশন সাব হিসেবে আরেকজনকে মাঠে নামানো হয়-এমন প্রশ্ন তুলে রূপগঞ্জ। যদিও রবিউল হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাঠ ছেড়েছিলেন। শাইনপুকুর অবশ্য দাবি করেছে, মাথায় আঘাত লাগাতেই কনকাশন সাব হিসেবে মুগ্ধকে নামানো হয়েছে।
রবিউল রান আউট হয়ে মাঠ ছাড়তেই ক্রিজে নামেন একাদশের বাইরে থাকা মুগ্ধ। তাকে দেখে রূপগঞ্জের ক্রিকেটাররা ক্ষেপে উঠেন। অফিসিয়ালরা তর্ক জুড়ে দেন দুই আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারির সঙ্গে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি সামাল দেন অধিনায়ক মাশরাফি। তার হস্তক্ষেপেই আধাঘণ্টা পর খেলা শুরু হয়।
এতকিছুর পরও ম্যাচ রেফারি সাঈদ আসিফ হোসেন দিদার জানালেন কিছুই ঘটেনি, ‘এখানে (মাঠে) কোনও ইনসিডেন্টিই ঘটেনি। চিন্তিত হওয়ারও কিছু নেই।’
কনকাশন সাব নিয়ে বিতর্ক তৈরির আগেই শাইনপুকুর বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে ফেলে। ইরফান শুক্কুরের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রান সংগ্রহ করে শাইনপুকুর। ৮৮ বলে ১২ চার ও ৩ ছক্কায় ১০৬ রানের ইনিংস খেলেছেন ইরফান। এছাড়া জিসান আলম ৪২, মার্শাল আইয়্যুব ৩৫ এবং খালেদ হাসান ৩২ রানের ইনিংস খেলেছেন।
রূপগঞ্জের বোলারদের মধ্যে আল আমিন, শুভাগত হোম, মাশরাফি, মুমিনুল ও শহিদুল একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
২৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ব্যাটিংয়ে অর্ডারে ধস নামে রূপগঞ্জের। ৩৬ রানেই টপ অর্ডার তিন ব্যাটারকে হারায় তারা। তৌফিক খান তুষার (১৯), মুমিনুল হক (০) ও সাদমান ইসলাম (৫) রান করে আউট হয়েছেন। কনকাশন সাব হিসেবে মাঠে নামা মুগ্ধ ও নাহিদ রানার বোলিং তোপে পড়ে খেই হারিয়েছে দলটি। দুইজনের গতির কাছে পরাস্ত হয়ে ১৮৯ রানে থেমে যায় রূপগঞ্জের ইনিংস। পেসার আব্দুল হালিম ৬০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসটি না খেললে দেড়শর আগেই থেমে যেতো হতো তাদের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৪ রান আসে আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের ব্যাট থেকে।
শাইনপুকুরের বোলারদের মধ্যে নাহিদ রানা ১১ রানে নেন তিনটি উইকেট। নাঈম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন নেন দুটি করে উইকেট। মুগ্ধ একটি উইকেট নিলেও ৮ ওভারে খরচ করেছেন মাত্র ১১ রান।
এদিন, রূপগঞ্জকে হারিয়ে শাইনপুকুর ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় দল হিসেবে সুপার লিগ নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে রূপগঞ্জ সুপার লিগ থেকে অনেটাই ছিটকে গেছে। তাদের সম্ভাবনা টিকে আছে অন্য দলের ওপর। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স শেষ ম্যাচ খেলবে সিটি ক্লাবের বিপক্ষে। এই ম্যাচটিতে সিটি ক্লাব বড় ব্যবধানে জিতলেই কেবল রূপগঞ্জের সুপার লিগে উঠার সম্ভাবনা থাকবে। অন্যথায় গাজী গ্রুপ ৬ষ্ঠ দল হিসেবে সুপার লিগ নিশ্চিত করবে।