X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘শাহরুখ খানের সঙ্গে কথা বলে তার মধ্যে খেলার প্রতি প্রেম দেখেছি’

তানজীম আহমেদ
১০ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:৫৩আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:২৮

সিদ্ধার্থ ময়ুর পান্ডের মন খারাপ। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী দল আবাহনী লিমিটেডের দায়িত্ব নিয়ে সুপার সিক্সে এসে বড়রকমের হোঁচট খেতে হয়েছে। মোহামেডানের সঙ্গে ড্রয়ের পর এবারের প্রিমিয়ার লিগে দ্বিতীয়বারের মতো হারতে হয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মেরিনার ইয়াংসের কাছে। তবে এখনও শিরোপার আশা ছাড়েননি ভারতের মুম্বাই থেকে আসা তরুণ কোচ। ৩৬ বছর বয়সী কোচ ঈদের ছুটির আগে নিজের ক্যারিয়ারসহ নানান দিক তুলে ধরেছেন বাংলা ট্রিবিউনের কাছে-

বাংলা ট্রিবিউন: শুরুতে লিগ প্রসঙ্গে আসি। অনেক আশা নিয়ে আবাহনী আপনাকে কোচ করে নিয়ে এসেছে। শুরুটা খারাপ হয়নি। তবে সুপার সিক্সে এসে মোহামেডানের পর মেরিনার্সের কাছে ধাক্কা খেয়ে এখন তো শিরোপা স্বপ্ন বিলীন হতে চলেছে।

সিদ্ধার্থ: তা বলতে পারেন। তবে আমি এখনও আশা ছাড়ছি না। সামনে তিনটি গুরুত্বপুর্ণ ম্যাচ রয়েছে। সবগুলো ম্যাচ জিততে পারলে তখন অন্য দলের দিকে চেয়ে থাকতে হবে। ভাগ্য সহায় হলে আমরা চ্যাম্পিয়ন হতেও পারি।

সেটা তো অনেক যদি-কিন্তুর বিষয়...

সিদ্ধার্থ: হ্যাঁ, এখন তো কিছু করার নেই। আমরা তো আক্রমণে এগিয়ে ছিলাম। গোলের সুযোগ পেয়েও সেভাবে গোল আসছে না। ফিনিশিং খারাপ হলে তো পয়েন্ট পাওয়া কঠিন। আমাদের দুজন খেলোয়াড় ভালো- আরফান ও সেসে। বাকি দুজন মানসম্মত নয়। অন্তত মোহামেডান-মেরিনার্সের মতো দলের বিপক্ষে খেলার জন্য আরও মানসম্মত খেলোয়াড় প্রয়োজন।

বাংলাদেশের প্রিমিয়ার লিগ দেখছেন। খেলার মান দেখে কী মনে হচ্ছে?

সিদ্ধার্থ: এখানে চার-পাঁচটি দল বেশ ভালো। তাদের মধ্যে শিরোপা লড়াই হচ্ছে। বাকিরা গড়পড়তায়। আবাহনীতে কোচিং করে অন্তত একটা বিষয় ভালো লাগছে, ছেলেদের মধ্যে শেখার আগ্রহ অনেক। বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত তরুণদের মধ্যে। তবে শুনেছি লিগ অনেক দিন পরপর হয়। হকিতে ভারত-পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে যেতে হলে অন্তত লিগ নিয়মিতকরণসহ সারাবছর খেলাটাকে মাঠে রাখতে হবে। এছাড়া অন্য সুবিধা তো আছেই।

সেটা কেমন?

সিদ্ধার্থ: এই যেমন একটি দলে অন্তত ছয় জন কোচ প্রয়োজন। হেড কোচ, সহকারীসহ ভিডিও অ্যানালিস্ট রয়েছে এর মধ্য। এখানে এসে দেখলাম তেমনটি নেই। কিন্তু উন্নতি করতে হলে তা লাগবেই। আমাকে হোটেলে বসেই ভিডিও দেখতে হয়। খেলোয়াড়দের অন্য দিক তো রয়েছেই। ফুরসতই মিলে না (হাসি...)।

খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে সিদ্ধার্থ

ভারতে যেভাবে খেলোয়াড়রা সুবিধা পাচ্ছে, তা বাংলাদেশে সেভাবে নেই। প্রো লিগ করে ভারত অনেক এগিয়েছে। আপনি কি তাই মনে করেন?

সিদ্ধার্থ: হ্যাঁ, তা তো অবশ্যই। ভারতে একজন খেলোয়াড়কে জীবিকা নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে চাকরির সুযোগ রয়েছে। একাডেমি রয়েছে। অন্য সুবিধাদি তো রয়েছেই। যার কারণে প্রচুর খেলোয়াড় বেরিয়ে আসছে। আর প্রো লিগ করে তো হকির অনেক উন্নয়ন হয়েছে। ভারত এখন এশিয়াতে প্রথম ও বিশ্বে তৃতীয় র‌্যাঙ্কিংধারী দেশ।

বাংলাদেশে তো ভারতের লিজেন্ডারি ধনরাজ পিল্লাই ও দিলীপ টার্কেসহ অনেকেই খেলে গেছেন। নিশ্চয় শুনেছেন?

সিদ্ধার্থ: কেন শুনবো না। আমি বছর কয়েক আগে এশিয়া কাপের ধারা বিবরণী দিতে প্রথম ঢাকায় আসি।  এখানে আসার আগেই শুনেছি পিল্লাইয়ের মতো তারকারা খেলে গেছেন। এই আবাহনীতেই খেলেছেন। পিল্লাই তো বর্তমানে বেঙ্গালুরুর লক্ষণ একাডেমির কর্মকর্তা হয়ে কাজ করছেন। যতটুকু জানি ওটা তার নিজেই একাডেমি। আমার সঙ্গে কথা হয়। শুধু কি তাই! পাকিস্তানের আরেক লিজেন্ড শাহবাজ আহমেদও খেলেছেন মোহামেডানে। আমার মনে হয় সঠিক চর্চা হলে বাংলাদেশের হকিও একসময় এশিয়া শুধু নয় বিশ্বে দাপট দেখাবে।

আপনার খেলোয়াড়ি জীবন প্রসঙ্গে আসি। জাতীয় অনূর্ধ্ব-২১ দলে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হয়ে খেললেন। এরপর আর ক্যারিয়ার এগোয়নি কেন?

সিদ্ধার্থ: আসলে সেই সময় চোট পেয়েছিলাম। এছাড়া আমি বুঝতে পারছিলাম সামনের দিকে আগানো কঠিন। তাই অল্প বয়সে কোচিংয়ের দিকে ঝুকে পড়ি। এখন আমি আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশন স্বীকৃত চতুর্থ ধাপে কোর্স করছি। মুম্বাইয়ের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রেনিং সেন্টারে হেড কোচ হয়ে কাজ করছি। সেখানে অলিম্পিকে খেলা বাল্মিকিসহ অনেকেই আমার অধীনে অনুশীলন করেছে।

কোচিং ছাড়াও আপনি নিয়মিত স্টার স্পোর্টস সহ অন্য চ্যানেলে ধারাভাষ্য দিয়ে থাকেন...

সিদ্ধার্থ: হ্যাঁ, তা নিয়মিত করে থাকি। ওটাও আমার শখ বলতে পারেন। শুধু হকি নয়, ব্যাডমিন্ট, ফুটবলসহ অন্য খেলাগুলোতে ইংরেজি ও হিন্দিসহ অন্য ভাষায় প্রয়োজনে ধারাবিবরণী দিয়ে থাকি। কোচিংয়ের চেয়ে ওখানে পারিশ্রমিকও বেশি।

আপনি মুম্বাই থাকেন। শুনেছি হকির ওপর নির্মিত চাক দে ইন্ডিয়া ছবির শুটিংয়ের সময় শাহরুখ খানের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন?

সিদ্ধার্থ: হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। আসলে চাক দে ইন্ডিয়া ছবিটির কাহিনী আমার চাচা রঞ্জন নেগিকে কেন্দ্র করে। তিনিও একজন সাবেক হকি খেলোয়াড়। মুম্বাইতে শুটিং চলার সময়ে চাচার সঙ্গে আমিও শুটিং স্পটে একসময় যাই। তখন আমি কলেজে পড়ি। ২০০৭ সালে।

যেহেতু আমিও একজন খেলোয়াড়। হকি নিয়েই ছবি হচ্ছে। তাই সুযোগটা হাতছাড়া করিনি। চাচা ছবির শুটিংয়ের সময় অনেক সাহায্য করেছেন তাদের। সেই সূত্রে আমারও যাওয়া সেখানে। সেখানে শাহরুখ খানের সঙ্গে আমার কথা বলার সুযোগ হয়েছে। আসলে  শাহরুখ খানের সঙ্গে কথা বলে তার মধ্যে খেলার প্রতি প্রেম দেখেছি।

এছাড়া তিনি তো ছাত্র অবস্থায় ফুটবল ও হকি খেলেছেন। এটা তার মুখ থেকেই শুনেছি।

আবার বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ফিরে আসি। এখানে এসে কোন দিকটা ভালো লেগেছে?

সিদ্ধার্থ: এখানকার কাচ্চি বিরিয়ানিটা আমার পছন্দ হয়েছে। সুযোগ পেলেই খাই। মানুষজন সবাই আন্তরিক। তবে ঢাকার জ্যামটা মাঝে মধ্যে অসহ্য লাগে। ছুটতেই চায় না! মুম্বাইতে জ্যাম অনেক। তবে ঢাকার মতো এতটা নয়।

ঈদের ছুটিতে তো মুম্বাইয়ে আছেন..

সিদ্ধার্থ: হ্যাঁ, ছুটিতে এসেছি। আবার ১২ এপ্রিল ফিরে যাবো।

/এফএইচএম/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
খিলগাঁও তালতলা মার্কেটে ক্যাশলেস লেনদেন চালু
খিলগাঁও তালতলা মার্কেটে ক্যাশলেস লেনদেন চালু
ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ১২ লাখ ইয়াবা উদ্ধার, নদীতে ঝাঁপিয়ে পালালো পাচারকারীরা
ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ১২ লাখ ইয়াবা উদ্ধার, নদীতে ঝাঁপিয়ে পালালো পাচারকারীরা
তীব্র গরমে কাজ করার সময় মাথা ঘুরে পড়ে দিনমজুরের মৃত্যু
তীব্র গরমে কাজ করার সময় মাথা ঘুরে পড়ে দিনমজুরের মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
আজ কি বৃষ্টি হবে?
আজ কি বৃষ্টি হবে?
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড