প্রায় ৯ বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এই দীর্ঘ সময়ে অনেক বদলে গেছে টাইগাররা। গত কয়েক বছরের সাফল্যে বাংলাদেশ এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী, পরিণত। ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়া অনেকেই এখন জাতীয় দলের বাইরে। তাদের নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের এই ধারাবাহিক আয়োজন। আজ থাকছে নাঈম ইসলামের কথা।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ক্রিকেট বিশ্বের বড় বড় দলকে বসতে হয় কঠিন পরীক্ষায়। বাংলাদেশের সামনেও অপেক্ষা করছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ জয় করতে টাইগারদের আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার পরামর্শ নাঈমের ইসলামের। যদিও আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশকে নিয়ে আশাবাদী সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই অলরাউন্ডার।
বাংলাদেশের গত কয়েক বছর ধরে ভালো ক্রিকেট খেলার আত্মবিশ্বাসে দারুণ কিছুর সুযোগ দেখছেন তিনি, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলা যে কোনও দলের জন্যই চ্যালেঞ্জের। আমাদের জন্যও সহজ হবে না। যদিও বাংলাদেশ দল খুব ভালো ফর্মে আছে। তাছাড়া বেশকিছু দিন ধরে ভালা ক্রিকেট খেলছে। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই দারুণ একটি সিরিজ উপহার দেবে বলে আমার বিশ্বাস।’
দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশন পেসারদের জন্য আশীর্বাদের। স্বাগতিকদের দলে আছে ভয় ছাড়ানোর মতো বোলাররা। ব্যাটসম্যানরাও বিশ্বসেরা। আগের সফরে দলের সঙ্গে থাকায় কন্ডিশন সম্পর্কে খুব ভালো জানা নাঈমের। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তার পরামর্শ, ‘ওদের কন্ডিশনে একবার চাপে পড়লে চাপ থেকে বের হওয়া খুব কঠিন। তাই বাংলাদেশকে সুন্দর একটি পরিকল্পনা করতে হবে। সেই পরিকল্পনায় অবশ্যই থাকতে হবে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার মনোভাব।’
দক্ষিণ আফ্রিকার বাউন্সি ও গতিময় উইকেটে কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় ব্যাটসম্যানদের। এ বিষয়ে ব্যাটসম্যান নাঈমের বক্তব্য, ‘ওদের উইকেটে আসলে ব্যাটিং করাটা খুব কঠিন। ওখানে যে ধরনের উইকেট থাকে তেমনটা বিশ্বের কোথাও নেই। পুরোপুরি ভিন্ন উইকেট। ওই জায়গায় যেহেতু আমাদের দলের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যানই খেলেনি, তাই কিছুটা হলেও সংগ্রাম করতে হবে। সেক্ষেত্রে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে সিনিয়র ব্যাটসম্যানদের।’
৮ টেস্ট, ৫৯ ওয়ানডে ও ১০ টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা থাকা নাঈমের বিশ্বাস এক সপ্তাহ আগে যাওয়াতে কিছুটা হলেও কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে মুশফিকরা। ‘বাংলা ট্রিবিউন’কে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ বেশ কিছুদিন আগেই সেখানে গিয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে তিন দিনের একটি ম্যাচ খেলতে নেমেছে। সবকিছু মিলিয়ে আমার মনে হয় ম্যাচের আগে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবে মুশফিকরা।’
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২০১৪ সালে সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন নাঈম। ফতুল্লার ওই ম্যাচে ছিলেন না সাকিব আল হাসান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও নেই বাংলাদেশি অলরাউন্ডার। স্বেচ্ছায় ছুটিতে যাওয়া সাকিবের অভাব বাংলাদেশকে খুব ভোগাবে বলে মনে করেন নাঈম, ‘সাকিব না থাকাটা বাংলাদেশের জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করবে। কেননা তখন অধিনায়ক ও কোচকে বাড়তি একজন ব্যাটসম্যান কিংবা স্পিনার নিতে হবে। সাকিব থাকলে স্পিনার হিসেবে তার সঙ্গে কেবল মিরাজই যথেষ্ট ছিল। বাংলাদেশ এখন সাকিবকে ছাড়া কেমন পরিকল্পনা করে, সেটাই দেখার বিষয়।’
টেস্ট সিরিজ নিয়ে খুব একটা স্বপ্ন দেখছেন না নাঈম, তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে নিয়ে আশাবাদী তিনি, ‘সত্যি কথা বলতে টেস্ট সিরিজ নিয়ে আমি খুব একটা আশাবাদী নই। তবে আশা করছি বাংলাদেশ ওখানে ওয়ানডে সিরিজ জিতবে, আর টি-টোয়েন্টিতে ভালো খেলবে।’