X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপের নতুন প্রযুক্তি ভিএআর আসলে কী?

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২০ জুন ২০১৮, ২০:৪৪আপডেট : ২০ জুন ২০১৮, ২০:৪৫

ভিএআর-এর সাহায্য নিচ্ছেন এক রেফারি চলছে ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর। পছন্দের দল ও খেলোয়াড়কে সমর্থন দিতে টিভি পর্দায় কোটি ভক্তের চিৎকার-উন্মদনায় রং ছড়াচ্ছে রাশিয়ার ফুটবল মহাযজ্ঞ। এ পর্যন্ত হওয়া প্রত্যেকটি ম্যাচে গোল দেখেছে ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ। এই গোল যেমন সরাসরি পেয়েছে দলগুলো, তেমনি আবার এসেছে প্রযুক্তির সাহায্যে। এবারের বিশ্বকাপে মাঠের প্রধান রেফারির সাহায্যের জন্য যোগ করা হয়েছে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর)।

বিশ্বকাপে যোগ হওয়া নতুন এই প্রযুক্তি প্রশংসা যেমন কুড়াচ্ছে, তেমনি পড়ছে সমালোচনার মুখে। বাইরের আলোচনা বাদ দিন, ভিএআর সম্পর্কে ঠিকঠাক না জেনে খেলা দেখতে বসলে আপনিও পড়তে পারেন সমস্যার মুখে। প্রিয় দল গোল করেছে বলে উল্লাসে মাতলেন, কিন্তু কিছু সময় পর বুঝতে পারলেন ভিএআর-এ বাতিল হয়ে হয়ে গেছে গোলটি। সমর্থন করা দলের বিপক্ষে পেনাল্টি হয়নি ভেবে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন, কিন্তু পরক্ষণেই ভিএআর জানালো ফাউলটি পেনাল্টির মতো ‘অপরাধ’। স্বস্তির নিঃশ্বাস বদলে যাবে দীর্ঘশ্বাসে! তাই বিশ্বকাপের উন্মাদনার মাঝে ভিএআর সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি।

ফুটবলের ভিএআর অনেকটা ক্রিকেটের থার্ড আম্পায়ারের মতো। যেখানে টিভি রিপ্লে দেখে আম্পায়ার তার সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করতে পারেন। ‘স্পষ্ট ও নিশ্চিত ভুল’ এবং ‘চোখ এড়িয়ে যাওয়া সিদ্ধান্ত’ পর্যবেক্ষণের জন্য মাঠের প্রধান রেফারি নিতে পারবেন ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির সাহায্য। রিপ্লে দেখে ভিএআর জানাবে নির্ভুল সিদ্ধান্ত, যেখানে রেফারি তার ‘ভুল’ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারবেন।

শুধুমাত্র চার ঘটনায় ব্যবহার হবে এই প্রযুক্তি-

১. গোল

২. পেনাল্টি

৩. সরাসরি লাল কার্ড

৪. সঠিক খেলোয়াড় চিহ্নিত করা

যেহেতু এই ঘটনাগুলো প্রত্যক্ষভাবে খেলার গতিপথ পাল্টে দিতে পারে, তাই ফিফা রাশিয়া বিশ্বকাপে যোগ করেছে এই প্রযুক্তি। তবে এখানে ক্রিকেটের মতো খেলোয়াড়দের রিভিউ নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। শুধুমাত্র রেফারিই তার প্রয়োজনে নিতে পারবেন ভিএআর-এর সাহায্য।

এবারের বিশ্বকাপের আগেই ফুটবলে ব্যবহার করা হয়েছে ভিএআর। গত বছরের কনফেডারেশনস কাপে ছিল এই প্রযুক্তি। জার্মানির বুন্দেসলিগা এবং ইতালির সিরি ‘এ’তেও ছিল ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি। ইংল্যান্ডে প্রিমিয়ার লিগে না থাকলেও এফএ কাপ ও লিগ কাপে রেফারিকে সাহায্য করেছে প্রযুক্তিটি।

প্রযুক্তির এই যুগে টিভি রিপ্লেতে যেখানে বিশ্বের সবাই রেফারির ভুল ধরতে বা বুঝতে পারছেন, সেখানে রেফারিই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি নিজের ভুলটা ধরতে পারেন না। ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এই কথাটা স্মরণ করে দিয়ে ভিএআরের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন। সঙ্গে এই প্রযুক্তির কার্যকরিতাও বুঝিয়েছেন এভাবে, ‘প্রায় দেড় বছর সঠিকভাবে ব্যবহারের পর বিশ্বকাপে যোগ হয়েছে এই প্রযুক্তি। আগের ৯৫ শতাংশ নির্ভুলতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯ শতাংশে।’

২০১৪ বিশ্বকাপে যোগ করা হয়েছিল গোল লাইন প্রযুক্তি। আর এবার এসেছে ভিএআর। খেলার পথে এই প্রযুক্তি যাতে বাধা তৈরি করতে না পারে, সেজন্য মাত্র চারটি ঘটনায় এর সাহায্য নেওয়ার সুযোগ আছে। তবে ‘স্পষ্ট ও নিশ্চিত ভুল’ ব্যাপারে কিছুটা প্রশ্ন থাকতেই পারে। এই বিষয়টি রাখা হয়েছে মূলত অফসাইড গোলের ক্ষেত্রে। গোল হয়েছে, কিন্তু লক্ষ্যভেদের সময় একজন খেলোয়াড় অফসাইডে ছিলেন, এই ভুলকে ভিএআর ‘স্পষ্ট ও নিশ্চিত ভুল’ হিসেবেই চিহ্নিত করবে।

ভিডিও রেফারিরা মাঠে থাকবেন না। মস্কোর ভিডিও অপারেশন কেন্দ্র থেকে ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত নজর রাখবেন তারা। এজন্য কাজ করছেন ১৩জন ভিডিও রেফারি। যাদের সব ব্রডকাস্ট ক্যামেরায় প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। একই সঙ্গে আলাদাভাবে দুটো ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তাদের কাছে, যে ক্যামেরা দিয়ে অফসাইডের ওপর নজর রাখছেন ভিডিও রেফারিরা।  

কাজে ব্যস্ত ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) তিনভাবে কাজ করবে ভিএআর:

১. রেফারির সিদ্ধান্ত:

গোল, পেনাল্টি, সরাসরি লাল কার্ড ও সঠিক খেলোয়াড় চিহ্নিত- এই চার ঘটনার কোনও একটি ঘটলে ভিডিও রেফারি মাঠের প্রধান রেফারির সঙ্গে ইয়ারপিসের মাধ্যমে কথা বলবেন। মাঠ রেফারি তখন হাত উঁচু করে খেলোয়াড়দের বোঝাবেন, তার সিদ্ধান্তটি রিভিউ হচ্ছে। যদি তার সিদ্ধান্তটি ভুল না হয়, তাহলে খেলা শুরুর সংকেত দেবেন।

২. ভিএআরের সিদ্ধান্ত:

ভিএআরের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে রেফারি দুই হাত দিয়ে স্ক্রিনের সংকেত দিয়ে সাহায্য চাইবেন। এরপর ভিডিও রেফারিরা তা পর্যবেক্ষণ করে দেখবেন, সঠিক ঘটনাটি কী। রিভিউয়ের ভিত্তিতে জানানো সিদ্ধান্তটি যদি রেফারির সিদ্ধান্তের সঙ্গে না মেলে এবং তিনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে চান, তাহলে আবারও দুই হাত দিয়ে স্ক্রিনের সংকেত দিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত দেবেন।

৩. অন ফিল্ড অ্যাকশন:

ভিডিও রেফারি তাদের সিদ্ধান্ত জানানোর পরও যদি মাঠের রেফারির সংশয় থেকে যায়, সেক্ষেত্রে ভিডিও রেফারি তাকে অনুরোধ করবেন মাঠের পাশের মনিটরে গিয়ে ঘটনাটি দেখে আসতে। রেফারি সেই অনুযায়ী ঘটনাটি দেখে এসে জানাবেন সিদ্ধান্ত।

/কেআর/এএআর/
সম্পর্কিত
অবাধ্য সেনাদের মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে রাশিয়া: হোয়াইট হাউজ
চিলির হারে কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা
বিশ্বকাপের সব উপার্জন দান করবেন এমবাপে!
সর্বশেষ খবর
দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত যুবলীগ নেতা
দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত যুবলীগ নেতা
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা