X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘বিশ্বকাপের সেরা ফিনিশার হতে চাই’

রবিউল ইসলাম
২৬ মে ২০১৯, ২০:১৫আপডেট : ২৬ মে ২০১৯, ২০:২৪

তার প্রতিভা নিয়ে অনেকের মনেই সন্দেহ নেই। কিন্তু ক্রিকেট মাঠে সেভাবে প্রতিভার প্রতিফলন ঘটেনি। কথাটা সাব্বির রহমান নিজেও স্বীকার করবেন সম্ভবত। মাঠের বাইরের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় এই তরুণ ব্যাটসম্যানের ক্যারিয়ারে বাধা এসেছে একাধিকবার। অতীতের দুঃসময় কাটিয়ে তিনি এখন ‘নতুন সাব্বির’। বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে কথোপকথনে বিশ্বকাপে জ্বলে ওঠায় প্রত্যয় ধ্বনিত হলো তার কণ্ঠে।

গত চার বছরের অভিজ্ঞতায় সাব্বির এখন আত্মবিশ্বাসী বাংলা ট্রিবিউন: বিশ্বকাপ নিয়ে আপনার ছোটবেলার কোনও স্মৃতি আছে?

সাব্বির: ছোটবেলায় দেখতাম বিশ্বকাপে সবাই উত্তেজনা নিয়ে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখছে। তাদের উত্তেজনা দেখে আমি খুব মজা পেতাম। তখন ভাবতাম, আমরাও যদি বিশ্বকাপে খেলতে পারতাম! বাংলাদেশ বিশ্বকাপে প্রথমবার সুযোগ পাওয়ার পর মনে হয়েছিল, আমি যদি ওখানে খেলতে পারতাম! আমার কাছে বিশ্বকাপ মানে  অন্যরকম এক উৎসব। যে উৎসবকে ঘিরে সবাই ক্রিকেট নিয়ে মেতে ওঠে।

বাংলা ট্রিবিউন: গত বিশ্বকাপে খেলেছিলেন, তবু আরেকটি বিশ্বকাপের সামনে দাঁড়িয়ে নিশ্চয়ই রোমাঞ্চিত?

সাব্বির: ভীষণ রোমাঞ্চিত বলতে পারেন। গতবার অনেক কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি। তাছাড়া বেশ ইমোশনালও ছিলাম। কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। গত চার বছরের অভিজ্ঞতায় বুঝতে পারছি বিশ্বকাপ কত বড় একটা মঞ্চ। এই চার বছরে যা শিখেছি সেগুলো বিশ্বকাপে প্রয়োগ করার চেষ্টা করবো।

বাংলা ট্রিবিউন: গত বছরের সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। এরপর আপনার ভাবনার জগতে কোনও পরিবর্তন এসেছিল?

সাব্বির: দলের বাইরে থাকার সময়টায় খুব খারাপ লাগতো। তখন নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করতাম, আমার কি জাতীয় দলে ফেরা হবে? আমি কি সামনের বিশ্বকাপে খেলতে পারবো? জিম্বাবুয়ে আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে খেলতে না পেরে খুব মনখারাপ হয়েছিল। তখন পরিবারের সদস্যরা আমাকে অনেক সাপোর্ট দিয়েছেন। তাদের সাপোর্ট পেয়ে মানসিকভাবে শক্ত থাকার চেষ্টা করেছি। আমি ভাগ্যবান, এত কিছুর পরও বিশ্বকাপ খেলতে পারছি।

ফিনিশার হিসেবে বাংলাদেশকে জয় এনে দেওয়া তার লক্ষ্য বাংলা ট্রিবিউন: অতীত থেকে বর্তমানে আসা যাক। সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। এই সাফল্য বিশ্বকাপে আপনাদের কতটা আত্মবিশ্বাস জোগাবে?

সাব্বির: আয়ারল্যান্ডের সাফল্যই বিশ্বকাপে ভালো করার স্বপ্ন দেখাচ্ছে আমাদের। দলের প্রত্যেকে এখন দারুণ আত্মবিশ্বাসী, প্রত্যেকেই জয়ের জন্য ক্ষুধার্ত।

বাংলা ট্রিবিউন: ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলার অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই  কাজে আসবে এবার?

সাব্বির: চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তিন নম্বরে ব্যাট করেছিলাম। সেবার কয়েকটি ম্যাচে শুরুটা ভালো করলেও ইনিংস বড় করতে পারিনি। এবার আমার কাঁধে অন্য দায়িত্ব। আমাকে ম্যাচ ফিনিশ করে আসতে হবে। এই দায়িত্ব পালন করতে আমি আত্মবিশ্বাসী। আশা করি, দু বছর আগের অভিজ্ঞতা এবার কাজে দেবে।

বাংলা ট্রিবিউন: রান তাড়া করতে নেমে অনেক ম্যাচেই জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও বাংলাদেশ জিততে পারেনি। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন আপনারা। সেজন্য আপনি কতটা প্রস্তুত?

সাব্বির: আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত। আমি জানি আমার কী দায়িত্ব। যে পজিশনেই নামি না কেন, রান করার চেষ্টা করবো। আসল কথা হলো দল আমার কাছে কী চাইছে। দলের চাহিদা অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করতে হবে। এবারের বিশ্বকাপে নিজেকে ফিনিশার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, হতে চাই বিশ্বকাপের সেরা ফিনিশার।

বাংলা ট্রিবিউন: ফিনিশার হিসেবে সাফল্য পেতে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?

সাব্বির:  আমি তো আর আন্দ্রে রাসেল কিংবা ক্রিস গেইল নই, আমি সাব্বির। আমাকে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে হবে। দলের পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাটিং আমার কাছে সবচেয়ে বড়। সেই দায়িত্ব পালন করতে পারলেই আমি খুশি।

আরও অনেকের মতো সাব্বিরের চোখেও সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাংলা ট্রিবিউন: লোয়ার মিডল অর্ডারে নেমেও কি বিশ্বকাপে সেঞ্চুরির স্বপ্ন দেখছেন?

সাব্বির: স্বপ্ন তো থাকেই। বিশ্বকাপের মতো বিশাল মঞ্চে সেঞ্চুরি অনেক বড় ব্যাপার। যদিও আমি চাই না আমার সেঞ্চুরি দলের প্রয়োজন হোক! তবে টপ অর্ডার, মিডল অর্ডার ব্যর্থ হলে অবশ্যই দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবো। হয়তো জেতার জন্য ১৫ বলে ৩০ রান দরকার। এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচ ফিনিশ করাই আমার লক্ষ্য।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার মতো তরুণদের জন্য বিশ্বকাপ কতটা চাপের?

সাব্বির: তরুণদের হারানোর কিছু নেই, বরং অনেক কিছু পাওয়ার আছে। আমরা যদি বোঝাতে পারি যে আমরাও চাপ নিতে প্রস্তুত, তাহলে আমাদের ওপরে সবাই আস্থা রাখতে পারবে। এবারের বিশ্বকাপ সেই আস্থার প্রতিদানের টুর্নামেন্ট বলতে পারেন।  

বাংলা ট্রিবিউন: এবার তো বাংলাদেশ বেশ অভিজ্ঞ দল। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কত দূর যেতে পারে বলে আপনার ধারণা?

সাব্বির:  আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য সেমিফাইনাল। শেষ চারে উঠতে পারলে আমাদের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যাবে। তখন এমনিতেই ফাইনালের স্বপ্ন উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।

/আরআই/এএআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের নির্বিঘ্ন প্রবেশাধিকার দাবি ডিআরইউর
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের নির্বিঘ্ন প্রবেশাধিকার দাবি ডিআরইউর
বাগেরহাটে কৃষককে পিটিকে হত্যা
বাগেরহাটে কৃষককে পিটিকে হত্যা
একসঙ্গে ৭৩ নেতাকে বহিষ্কার করলো বিএনপি
একসঙ্গে ৭৩ নেতাকে বহিষ্কার করলো বিএনপি
চীনে রুপা জিতে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সুকান্ত ও নয়ন
চীনে রুপা জিতে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সুকান্ত ও নয়ন
সর্বাধিক পঠিত
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন